প্রকাশ: সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪, ১১:২৮ এএম (ভিজিট : ৩৬৪)
দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটে রয়েছে বান্দরবান সদর হাসপাতাল। চিকিৎসক সংকটসহ নানা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিরও অভাব রয়েছে। পর্যাপ্ত জনবল সংকটকে কারণে কিছুটা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা। বর্তমানে বান্দরবান সদরে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালটিতে চিকিৎসক সিনিয়র কনসালটেন্ট ১২ জন থাকার কথা থাকলেও আছে ৪ জন, জুনিয়র ২৭ জন মধ্যে রয়েছে ৬ জন, মেডিকেল অফিসার প্রায় ৫০ জন মধ্যে ১১ জন রয়েছে। এবং মেডিকেল টেকনোলজি ২২ জন, ফার্মসিস্ট ৩ জন, হেলথ এডুকেটর ২ জন, নার্স ৬৮ জন, ৩য় শ্রেনী ১০ জন, তাছাড়া ৪র্থ শ্রেনী ২০ জন থাকার কথা থাকলেও আছে ১৫ জন। শুধু সদর হাসপাতাল ছাড়াও রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি, লামা, আলীদকম, নাইক্ষ্যংছড়ি এই ৬টি উপজেলাতে একই অবস্থা জনবল সংকট রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং পাশে ২৫০ শয্যায় বিশিষ্ট নির্মাণাধীন হাসপাতালের নতুন ভবনটি চালু হলে আইসিইউ, সিসিউইউ সহ সবধরনের প্রয়োজনীয় সেবা কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।
সদর হাসাপাতালে অন্তঃ বিভাগের ভর্তি হওয়ার কালাঘাটা সানুবালা জলদাশ বলেন, হাসপাতালে পানি থেকে শুরু করে খাবারও ভালো মানে পাচ্ছি। চিকিৎসা সেবাও ভালো, কোন সমস্যা নেই। তবে বাইরে থেকে কিছু ঔষধ কিনতে হচ্ছে।
পেত ব্যাথা নিয়ে ভর্তিরত্ব বনরুপা পাড়া বিবি খতিজা বেগম বলেন, এখানে এসে চিকিৎসা ভালো পেলেও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির না থাকার বাইরে (প্রাইভেট হাসপাতাল) এক্স-রে করাতে হয়েছে।
আরেকজন কারেন্ট শর্ট খেয়ে ভর্তিরত্ব রবিউল হাসান বলেন, এখানে উন্নত মানের যন্ত্রপাতি নেই। তাই বাইরে রেফার করার জন্য বলছে দায়িত্বরত চিকিৎসক। আমি গরিব তাই উপায় না পেয়ে এখানে দুইমাস ধরে পড়ে আছি।
বান্দরবান সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ এস.এম.আসাদুল্লাহ বলেন, আমাদের জনবল সংকট থাকলেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি রোগীদের ভালো সেবা দিতে। প্রতিদিন গাইনি ডাক্তার ১ জন, শিশুর বিশেজ্ঞ ডাক্তার ১ জন এবং অন্যান্য রোগের ৪ জন ডাক্তার সেবা দিচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ২৫০ জন অধিক রোগীকে সেবা দিয়ে থাকি। তবে বিশেষ করে হাটবাজারে রোগী একটু চাপ থাকে। হাটবাজার দিন ৪০০-৫০০জন রোগী সেবা নিতে আসে। কিছুটা ঔষধ মজুদ না থাকার কারণে রোগীদের দিতে পারছি না।
রোগীদের বাইরে কেন রেফার করা হয় এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিশেষ করে হার্ট রোগী জন্য আই সি ইউ এবং নবজাতক শিশুদের ক্ষেত্রে এনআইসিইউ বা নিউনেটাল না থাকার কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে রেফার করা হয়।
সিভিল সার্জন সূত্রে জানা যায়, বেসরকারী হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক বান্দরবান সদরে যেগুলি অনুমোদিত তার মধ্যে মুক্তা মেডিকো প্যাথলজি, মেট্রো হসপিটাল এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টার, ইমানুয়েল মেডিকেল সেন্টার, বান্দরবান প্যাথলজি সেন্টার, হিলভিউ হাসপাতাল, হিলভিউ হাসপাতাল (ডায়গনস্টিক সেন্টার), চক্ষু হাসপাতাল। বান্দরবান বাইরে আলীকদম উপজেলার আলীকদম ডায়াগনস্টিক এন্ড ডক্টরস চেম্বার, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার জাহান প্যাথলজি এবং ডক্টরস ল্যাব তাদের অনুমোদন না থাকায় বন্ধ রয়েছে। তবে বান্দরবান পার্বত্য জেলার বেসরকারীভাবে এখনও কোন ব্লাড ব্যাংক নেই।
বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহবুবুল আলম জানান, পুরো জেলা জুড়ে জনবল এবং অবকাঠামো অভাব রয়েছে। তবুও যতটুকু সম্ভব সর্বাত্মক চেষ্টা করি রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার জন্য। বর্তমানে ২৫০ শয্যায় বিশিষ্ট নির্মাণাধীন হাসপাতালের নতুন ভবনটি চালু হলে আইসিইউ, সিসিউইউ সহ প্রয়োজনীয় সবধরনের সেবা কার্যক্রম থাকবে। এই ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সাথে কথা বলেছি এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি, হয়তো শিগগিরই সুব্যবস্থ্যা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
সময়ের আলো/এএ/