প্রকাশ: শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬:০০ পিএম (ভিজিট : ৫৩৪)
যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে চলা তীব্র তাপপ্রবাহে নাকাল হয়ে পড়েছে যশোরের সাধারণ মানুষের জনজীবন। শহরে লোকজনের উপস্থিতি কম হলেও শ্রমজীবী মানুষ রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে। তীব্র দাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন রিকশাচালকরা।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৩টার পরে যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া দফতর দেশের সর্বোচ্চ এ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রতিদিনই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে তাপমাত্রার পারদ। সহসাই তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি মেলার আভাস নেই। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ২টা পর্যন্ত যশোরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল। কিন্তু শনিবার গত কয়েকদিনের সব রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রা দাঁড়ায় ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
গত কয়েকদিন ধরে চলা তীব্র তাপপ্রবাহে নাকাল হয়ে পড়েছে যশোরের সাধারণ মানুষের জনজীবন। শহরে লোকজনের উপস্থিতি কম হলেও শ্রমজীবী মানুষ রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে। স্বস্তি পেতে রাস্তার পাশে জিরিয়ে নিচ্ছেন কেউ কেউ, আবার কেউ কিছু সময় পর পর হাতে মুখে পানি দিয়ে নিজেকে শীতল রাখার চেষ্টা করছেন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। খুব প্রয়োজন না হলে রোদে বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাপপ্রবাহে ঘরের বাইরে আসা সাধারণ মানুষ পড়ছেন বিপাকে। বাইরে কড়া রোদ থেকে বাঁচতে অনেকে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। কেউবা আবার লেবুর শরবত খেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। বেশি বিপাকে পড়েছেন রিকশাচালকরা।
রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন হাসমত আলী। তিনি বলেন, তীব্র গরমের কারণে রিকশা চালাতে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু ভাড়া না মারলে তো সংসার চলবে না।
সাড়ে তিনটার দিকে হাইকোর্ট মোড়ে দেখা হয় রিকশা চালক রহমানের সাথে। তিনি জানান, মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছে। যারা বাইরে আসছে গরমের সঙ্গে তাদেরও মেজাজ গরম থাকছে। মানুষের সঙ্গে ভালো করে কথা বলাও যাচ্ছে না।
এদিকে বেশ কিছুদিন বৃষ্টি না হওয়ায় পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় শহরের বিভিন্ন এলাকার চাপকলেও পানি উঠছে না। ফলে প্রতিবেশীর সাবমার্সেবল থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে অনেকের।
কৃষক ইসরাফিল বলেন, কয়েকদিন যাবত প্রচণ্ড গরমে মাঠে কৃষি কাজ করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে আগুনের ছটা চোখ মুখ পুড়িয়ে দিচ্ছে। তাই কাজ না করেই ঘরে বসে আছি। তাছাড়া যারা কাজ করাবেন তারাও এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় লোক নিচ্ছে না। ফলের তার মত খেটে খাওয়া মানুষ দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে।
এদিকে গরমের কারণে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। যশোর জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে পাঁচ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছেন ২৫ রোগী। যার মধ্যে ১১ জন শিশু। লাগাতার তাপ দাহের কারণে রোদের মধ্যে বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. আব্দুস সামাদ।