ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

শঙ্কায় বাগান মালিক ও আম ব্যবসায়ীরা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে তাপপ্রবাহে ঝরে পড়ছে আমের গুটি
প্রকাশ: শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৩:২০ এএম  (ভিজিট : ৩৯৬)
দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহের তীব্রতা আরও বাড়ার শঙ্কায় তিন দিনের জন্য হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। সারা দেশের মতো উত্তরের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জেও বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা চাঁপাইবাসীর। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে আমের বাগানেও। তীব্র তাপপ্রবাহে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। আমের ঝরে পড়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন বাগান মালিক ও আম ব্যবসায়ীরা।

আমের গুটি টিকিয়ে রাখার জন্য বাগানে পর্যাপ্ত পরিমাণে সেচের পরামর্শ দিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোখলেসুর রহমান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বড় বড় আম গাছগুলোতে এবার মুকুল তুলনামূলকভাবে কম এসেছে। তবে ছোট ছোট আম গাছগুলোতে মুকুলের পরিমাণ মোটামুটি ভালো। এ বছর কৃষি বিভাগ সাড়ে চার লাখ মেট্রিকটন আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করা গেলে এই লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি যাওয়া যাবে বলে আশা করছি আমরা। আর আমের গুটি টিকিয়ে রাখার জন্য বাগানে প্রচুর পরিমাণে সেচ দিতে হবে।

শিবগঞ্জ ম্যাঙ্গো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সম্পাদক মো. ইসমাইল খান শামীম বলেন, এমনিতেই অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর আমের গুটি খুবই কম। তার ওপর তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে গুটি ঝরে যাচ্ছে। সম্প্রতি টানা দুদিন বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পরেই যারা বাগানে ছত্রাকনাশক স্প্রে করেছেন তাদের বাগানে আমের গুটি টিকে আছে বেশি। আম সংগঠনের এই নেতা আরও বলেন, বিশেষ করে এবার দুটি কারণে আমের গুটি কম বলে মনে করছি। প্রথম করণটা হলো জলবায়ুর পরিবর্তন। দ্বিতীয়ত শিবগঞ্জ, ভোলাহাট ও গোমস্তাপুর এলাকায় যেসব আমবাগান রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অর্ধেক বাগানেই ঠিকমতো পরিচর্যা করা হয়নি। তাই এসব বাগানের পোকামাকড় অন্য বাগানগুলোকেও আক্রান্ত করছে। যার ফলে উৎপাদন কমে যাচ্ছে।

সরেজমিন বাগান মালিক ও আম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কিছুটা দেরিতেই আমের মুকুল আসে। পরিমাণেও অনান্য বছরের তুলনায় কম। এ কারণে শুরু থেকেই বাড়তি যত্ন ও পরিচর্যা করছেন স্থানীয় আমচাষিরা। বাড়তি যত্ন ও পরিচর্যার কারণে আমের বাগানগুলোতে মুকুল থেকে ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে আম। কিন্তু গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে গাছে থাকা আমের গুটি ঝরে পড়তে শুরু করে। এ কারণে আমের গুটির বৃদ্ধি ও টিকে থাকা নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে আমচাষিদের কপালে। চরম দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন বাগান মালিক ও আম ব্যবসায়ীরা।

কথা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার আমবাগান মালিক এরশাদ আলীর সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, এবার আমের মুকুলের পরিমাণ বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক কম। মুকুলও এসেছে কিছুটা দেরিতে। এর মধ্যেই ফাল্গুন মাসের শেষের দিকে বৃষ্টি ও কুয়াশার কারণে অনেক মুকুল নষ্ট হয়ে গেছে। এবার মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আবির্ভূত হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমের কারণে আমের গুটি ঝরে পড়ছে।

বাগান মালিক এরশাদ আলী আরও বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমবাগানে সেচ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইরি-বোরো মৌসুম চলার কারণে ধানক্ষেতে সেচ দেওয়ায় আমবাগানে সেচ দিচ্ছেন না গভীর নলকূপের মালিকরা। আমার বাগান থেকে ৪-৫ লাখ টাকার আম বিক্রি করার আশা ছিল। কিন্তু সেই আশার গুড়ে বালি। সবমিলিয়ে ভীষণ শঙ্কার মধ্যে রয়েছি। প্রচণ্ড গরমের কারণে আমের গুটি বড় হচ্ছে না। বোঁটা শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। সেচ দিয়েও লাভ হচ্ছে না। বৃষ্টি না হলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের আশা নেই।

সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close