প্রকাশ: বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৭:১৬ পিএম (ভিজিট : ৭৩৮)
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাংগর গ্রামের একই পরিবার থেকে ৬ জনে একটি প্রাইভেট কারে যাচ্ছিলো বরিশাল। গাবখান ব্রিজের টোল প্লাজায় দাঁড়িয়ে টোল দিচ্ছিলো ড্রাইভার। ইতিমধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক ধাক্কা দিলে দুমরে মুচরে যায়। এসময় গাড়িতে থাকা একই পরিবারের হাসিবুর রহমান (৩২), স্ত্রী নাহিদা আক্তার (২৭), সন্তান তাকিয়া (সাড়ে চার বছর), তাহমিদ (৮ মাস), সদ্য বিবাহিত ইমরান (২৬) ও তার স্ত্রী নিপা (২২) ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
সদর হাসপাতালে লাশের পাশে বিলাপ করতে করতে এসব কথা বলছিলেন নাহিদার বোন তরিকা আক্তার। সে সাংগর গ্রামের আব্দুল বারেকের কন্যা।
তরিকা আক্তার জানান, দুপুর দেড়টার দিকে সবাইকে নিয়ে খাওয়া দাওয়া শেষে প্রাইভেট কারে বরিশালের উদ্দেশে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে দুর্ঘটনায় মারা যান। বিলাপ করতে করতে বলেন, “ওরে নাহিদা, ওরে নিপা তোদের ছাড়া আমি কেমনে থাকবো। তোদের ছোট ছোট সন্তানদেরও আদর করে দিলাম। এটাই যদি শেষ আদর হবে বুঝতাম তাহলে আরো বেশি করে আদর দিতাম।”
আহাজারি করে আরো জানান, ছোট বোন নিপার একমাস আগে বিয়ে হয়েছে। ওদের হাতের মেহেদীও এখন পর্যন্ত মুছে নাই। নববিবাহিত দম্পতির ইচ্ছা ছিলো বরিশাল থেকে কুয়াকাটা গিয়ে হানিমুন করবে। কিন্তু সেই ইচ্ছা আর পূরণ হলো না। এখন হানিমুনের পরিবর্তে অন্তিম শয়নে শায়িত হবে।
প্রসঙ্গত, ঝালকাঠির গাবখান টোল প্লাজায় সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি মাইক্রোবাস ও ৩টি অটোরিকশা নিয়ে খাদে পড়ে। এতে নারী, শিশুসহ ১৪ জন নিহত হয়েছে। বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর দুইটায় পৌর এলাকার পশ্চিম প্রান্তে পঞ্চম চীন-বাংলাদেশ মৈত্রি গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঝালকাঠি পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঘাতক ট্রাক চালক ও হেল্পারকে আটক করেছে পুলিশ। ক্ষতিগ্রস্ত যান ও ট্রাকটি উদ্ধার করে জব্দ করেছে পুলিশ।
এ দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। আগামী ৫ দিনের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম।
সময়ের আলো/আরআই