ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

মুন্সীগঞ্জে প্রতিটি বাড়ি যেন একটি পোশাক কারখানা
প্রকাশ: রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪, ২:৪৪ এএম  (ভিজিট : ৫৩২)
মুন্সীগঞ্জে রেডিমেড পোশাক পল্লী হিসেবে খ্যাত সিপাহিপাড়া, বজ্রযোগিনী ও শাখারিবাজার এলাকা। এখানে রয়েছে প্রায় সহস্রাধিক পোশাক তৈরির ক্ষুদ্র কারখানা। এ বছর রোজার ঈদ কেন্দ্র করে তৈরি হচ্ছে ৩০০ কোটি টাকার পোশাক। এ কারণে পোশাক তৈরিতে শেষ সময়েও ব্যস্ত সময় পাড় করছে পল্লীর কারিগররা।

সরেজমিন দেখা যায়, জেলা সদরের বিভিন্ন গ্রামে ঘরের ভেতরই নানা আকার ও ডিজাইনের বাহারি পোশাক তৈরিতে দিনরাত কাজ করছে পোশাক শ্রমিকরা। গ্রামের প্রতিটি বাড়ি যেন এক একটি ক্ষুদ্র পোশাক কারখানা। পূর্বের যন্ত্রপাতির সঙ্গে যোগ হয়েছে বৈদ্যুতিক মেশিনে, কাজ এগোচ্ছে দ্রুত। কাপড় কাটা, সেলাই, ডিজাইন, প্যাকেটিং করে চলছে শ্রমিকরা। এই পোশাক পল্লীতে আধুনিক প্রযুক্তির কম্পিউটারাইজড অ্যামব্রয়ডারি মেশিনে করা হচ্ছে নানা রকম নান্দনিক কারুকাজ। পোশাককে বর্ণিল করতে কারিগররা নিপুণ হাতে যুক্ত করছেন রং-বেরঙের লেইছ ও পুতি। কাপড় কাটা, সেলাই, ডিজাইনে এখন দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। প্রায় আড়াই হাজার মিনি গার্মেন্টস থেকে এবার ৩০০ কোটি টাকার পোশাক তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এখানকার তৈরি পোশাক ঢাকার সদরঘাট, কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের বড় বড় পাইকারি মার্কেট হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিপণিবিতানে। বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় লাভের আশা এবার উদ্যোক্তাদের।

এদিকে উদ্যেক্তারা বলেন, মুন্সীগঞ্জের এসব রেডিমেড পোশাক বিক্রি হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। গুণগত মান ভালো হওয়ায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামের বাজারগুলোতেও রয়েছে বেশি চাহিদা। ৩০০ থেকে দেড় হাজার টাকা দামের ছোট-বড় পোশাক তৈরি হয় কারখানাগুলোতে। তবে আমদানি সংকটের কারণে এবার পোশাক তৈরির সুতা-কাপড়সহ বিভিন্ন সরঞ্জামের বেড়েছে দাম। এতে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেলেও বাজারে চাহিদা থাকায় এবার লাভের ব্যাপারে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা। সাধারণত নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষই এই পোশাকের ক্রেতা।

মিঠুন নামের এক উদ্যোক্তা বলেন, বিদেশ থেকে যদি আরও কম ট্যাক্সে সুতা-কাপড়- সরঞ্জাম আনা সম্ভব হয় তবে এই কাজে অনেক উদ্যোক্তা বাড়বে। আমাদেরও খরচ কমবে, লাভ বাড়বে। 

সুজানগর এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিক রাজিব হাসান বলেন, প্রতি বছর ঈদ কেন্দ্র করে আমাদের রাত-দিন চলে ব্যস্ততা। সারা বছর কাজ করলেও ঈদের প্রথম সপ্তাহ থেকে কাজ করতে হয় দেদার। প্রতিটি গার্মেন্টসে আমরা ১০ থেকে ১৫ জন করে কাজ করি। কেউ কাপড় কাটি, কেউ কাপড় সেলাই, কেউ পুতি গাঁথি।  শাখারী বাজারের বায়েজিদ গার্মেন্টসের মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এখানের রেডিমেড জামাগুলো মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য টার্গেট থাকে। তবে সব ধরনের মানুষই এর ক্রেতা। বর্তমানে বাজার ভালো আছে। যে পোশাক ১০০ পিস জামা বানাতে খরচ ৯০ হাজার, পাইকারি বিক্রি হচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা।

শ্রমিক সুমন মিয়া বলেন, কেউ কাপড় কাটছে, কেউ মেশিনে জামা তৈরি করছে, কেউ সেগুলো প্যাকেট করছে-আমাদের এভাবে কাজ চলছে। এ বছর বেশি চলেছে নায়রা, আলিয়া কার্ট। প্রতিটি গার্মেন্টস ১০ থেকে ২০ লাখ টাকার পোশাক তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) মুন্সীগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-ব্যবস্থাপক মো. আবদুল্লাহ জানান, মুন্সীগঞ্জ জেলায় ২ থেকে আড়াই হাজার গার্মেন্টস থেকে এবার উৎপাদ হবে ৩০০ কোটি টাকার পোশাক, যা জেলার অর্থনীতিতে রাখবে ভূমিকা। 

ঈদের কয়েক দিন পূর্ব পর্যন্ত পোশাক উৎপাদন হবে মুন্সীগঞ্জের মিনি গার্মেন্টসগুলোতে। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে ২৫-৩০ হাজার পোশাক শ্রমিকের। ধারাটি অব্যাহত থাকলে একসময় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close