ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

বেতন-বোনাসে জমেছে গাইবান্ধায় ঈদ বাজার
প্রকাশ: শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১:২৪ পিএম  (ভিজিট : ৫৫৮)
রমজানের শুরুতেই ঈদের বার্তা পৌঁছে যায় ঘরে ঘরে। এবারের ঈদুল ফিতর আর পহেলা বৈশাখ অন্যরকম বার্তা নিয়ে ধরা দিয়েছে উৎসবপ্রেমী বাঙালির মনে। রমজানের প্রথম সপ্তাহজুড়ে গাইবান্ধার বিপণী বিতানগুলোয় তেমন ভিড় না থাকলেও, মাঝামাঝি সময় থেকে জমে উঠতে শুরু করে ঈদের কেনাকাটা। মূলত বিশ রমজানের পর অফিসের বেতন-বোনাস আসতে শুরু করায় কেনাকাটা বাড়িয়েছেন ক্রেতারা।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কেনাবেচা ছিল জমজমাট। ক্রেতাদের ভিড় কেবল মার্কেটের ভেতরে নয়, ছিল বাইরের ফুটপাতেও।

সরেজমিন দেখা যায়, গ্রীষ্মের তাপদাহ চলছে উত্তরের জেলা গাইবান্ধায়। এরমধ্যেও ঈদের পোশাক-প্রসাধনী ও জুতো কেনাকাটায় এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ছুটছেন ক্রেতারা। ফুটপাতগুলোতেও দেদারসে চলছে কেনাকাটা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এই বেচাকেনায় খুশি ব্যবসায়ীরা। জেলা শহরের তরফদার ম্যানসন, সালিমার সুপার মার্কেট, ইসলাম প্লাজা, পৌর সুপার মার্কেটসহ পার্করোড, স্টেশন রোড, কাচারি বাজারে ঈদের আগে শেষ শুক্রবারের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সেই ভিড় বলে দিচ্ছিল, দোরগোড়ায় উৎসব।

ঈদের আগে শেষ সাত দিন এসব মার্কেট, বিপণী বিতানে মাছি গলানোর জায়গা থাকে না। শুক্রবারও ছিল তেমনই ছবি। এদিন শহরের বিভিন্ন মার্কেটের আশেপাশের ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে বসা দোকানগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। সেইসাথে সকাল থেকে শহরজুড়ে ছিল অসহনীয় যানজট।

ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া থেকে গাইবান্ধায় কেনাকাটা করতে এসেছিলেন হোসনে আরা বেগম। তিনি বললেন, ‘আগেই ঠিক করেছিলাম, বেতন-বোনাস পেলে ঈদের আগের শেষ শুক্রবারই কেনাকাটা করব। সুতরাং তাপদাহের মধ্যেও কেনাকাটা করেই বাড়ি ফিরব।’

ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজার শুরু থেকে গাইবান্ধায় ঈদের কেনাকাটায় নেমেছেন ক্রেতারা। ঈদ ও পহেলা বৈশাখ কাছাকাছি সময়ে হওয়ায় ক্রেতাদের সন্তুষ্ট করতে চেষ্টার কোনো কমতি রাখছেন না তারা। ক্রেতা আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন দোকানে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট মূল্যের অফার। রমজানের প্রথম ১৫ দিনে ক্রেতার সংখ্যা ছিল বেশ কম। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেতন-বোনাস আসতে থাকায় শুক্রবার ক্রেতার সংখ্যাও বেড়েছে। তবে তাদের বিক্রি আগের বছরের তুলনায় গড়ে ৩০% কমেছে।

তরফদার ম্যানসনে প্রান্ত ফ্যাশনের সত্ত্বাধিকারী হাসান মাহমুদ রাসেল জানালেন, ‘জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে চাপের মধ্যে থাকায় এবার ক্রেতাদের মধ্যে দর কষাকষির প্রবণতা বেশি। অধিকাংশই এখন সাশ্রয়ী মূল্যের দেশীয় জিনিসের দিকে ঝুঁকছেন।’

অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, দামে অসন্তোষ রয়েছে তাদের অনেকেরই। এ বছর কাপড়ের দাম অন্তত পনের থেকে বিশ শতাংশ বেড়েছে। তাই ঈদের কেনাকাটার জন্য তাদের বাজেটও কমে গেছে।

স্থানীয় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত আবু সাঈদ বলেন, ‘গত বছর ঈদের কেনাকাটার জন্য আমার যে বাজেট ছিল তা থেকে এ বছর বাজেট ত্রিশ শতাংশ কমাতে হয়েছে। কেননা বাজারে পণ্যমূল্য বাড়লেও বেতন বাড়েনি, এ কারণেই বাজেট কমাতে বাধ্য হয়েছি’।

ফুটপাতের দোকানীরা বলছেন, ফুটপাত থেকে সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষ কেনাকাটা করে থাকেন। তাদের কথা চিন্তা করেই পোশাক তোলা হয়। রিকশা-ভ্যান চালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ এবং মধ্যবিত্ত অনেকেই এখন ফুটপাত থেকে ঈদের পোশাক কেনেন। এ মানুষগুলো সাধারণত শেষ মুহূর্তে এসে কেনাকাটা করেন। বিশেষ করে চাঁদরাত এবং তার আগের দুদিন ফুটপাতে বেশি বিক্রি হয়। তবে কিছু ক্রেতা একটু আগেভাগে কেনাকাটা করেন।

সার্কুলার রোডে এক পাঞ্জাবির দোকানী বলছিলেন, ‘সারা বছর ধরে রমজান মাসের দিকেই তাকিয়ে থাকি। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ কেনাকাটা করতে আসেন এই সময়ে।’ পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে ফুটপাতের দোকানে চুড়ি কেনার ভিড়টাও ছিল দেখার মতো। বাহারি টুপি বাছতে দোকানে দোকানে ঘুরছিলেন বিভিন্ন বয়সী যুবকের দল। কেনাকাটার এই ভিড়টা চলবে মধ্যরাত পর্যন্ত। সুগন্ধি আতরের বোতল আর সুর্মা নিয়ে মার্কেটগুলোর আশপাশে ঘুরে চলেছেন ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা। ‘ঈদের দিনে নতুন পোশাক পরব আর আতর মাখব না! এমন হয় নাকি?’ হাসি মুখে বললেন বৃদ্ধ ক্রেতা ইয়াসিন মিয়া। ঈদ মানে তো শুধু বাহারি পোশাক-টুপিই নয়!

রকমারি সেমাই, লাচ্ছার স্বাদ না পেলে তো এই উৎসবে পূর্ণতাই আসে না। তাই শহরের পুরাতন বাজার থেকে হকার্স মার্কেট, সর্বত্রই বিভিন্ন ধরনের সেমাই কিনতে লম্বা লাইন দেখা গেছে।


সময়ের আলো/এএ/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close