ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ঈদে গলার কাঁটা হতে পারে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৪ কিমি
প্রকাশ: শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪, ২:২৪ এএম  (ভিজিট : ৪৩৬)
বঙ্গবন্ধু সেতু দেশের উত্তরাঞ্চলের গেটওয়ে হিসেবে পরিচিত। এ সেতু পেরিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আসা-যাওয়া করে রাজশাহী-রংপুর বিভাগের ষোল জেলাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলার লাখ লাখ মানুষ। একইভাবেই প্রতি বছর পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে একসঙ্গে বাড়ি ফেরেন রাজধানী ও আশপাশের শিল্পাঞ্চলে কর্মরত মানুষও। আর মাত্র কয়দিন পরই ঈদুল ফিতর। ঈদের ছুটির কয়েক দিন মহাসড়কে যানজট ও ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। এবার আগেভাগেই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ লক্ষ করা গেছে। ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেন হলেও এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়ক দুই লেনের হওয়ায় গলার কাঁটা হতে পারে এ অংশটুকু।

বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে টাঙ্গাইল অংশে ৬৫ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে। বেড়েছে পরিবহনের সংখ্যাও। যানজট কমাতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এরইমধ্যে সড়কে মাঝে মাঝে অতিরিক্ত ডিভাইডারও দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হাইওয়ে পুলিশ স্বাভাবিক তৎপরতার সঙ্গে আরও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। 

সাধারণত ঈদের ৫-৬ দিন আগে ঘরে ফেরা মানুষ ছুটতে শুরু করে। এবার ৮-৯ দিন আগেই মহাসড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। পাশাপাশি মহাসড়কে সদ্য রং করা কিছু ফিটনেসবিহীন গাড়িও দেখা গেছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা, পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কর্মসূত্রে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থানরত দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ ঈদে এ পথে বাড়ি ফেরেন। তাদের বেশির ভাগই বিভিন্ন শিল্পকারখানায় কাজ করেন এবং এসব কারখানায় ঈদের ছুটি সাধারণত একসঙ্গে হয়ে থাকে। এতে হাজার হাজার শ্রমিক ছুটি পেয়ে গ্রামের উদ্দেশে বের হন। ফলে অতিরিক্ত মানুষের চাপে মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের সুবিধা পেলেও এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দুই লেন হওয়ায় প্রতি বছরই দীর্ঘ যানজটে পড়তে হয়। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এ ১৪ কিলোমিটার অংশে বসে থাকতে হয় যাত্রীদের। 

প্রতিদিন এ মহাসড়কে যাতায়াতকারী উত্তরবঙ্গগামী কয়েকটি পরিবহনের চালকের সহকারীরা জানান, প্রতি বছর ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী থাকে। ফলে গাড়িও বেশি প্রয়োজন হয়। মহাসড়কে এখন বাহারি গাড়ির মহড়া দেখা যাবে। 

তারা জানান, এসব বাহারি রঙের ও নামের গাড়ি কোথায় থেকে যে আসে তা তারা জানেন না। যেগুলো আঞ্চলিক সড়কেই চলতে হিমশিম খায় সেগুলোও ঈদে দূরপাল্লার বাস হয়ে যায়।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাজেদুল ইসলাম জানান, ঈদকে সামনে রেখে প্রতিদিন যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। তবে এখনও তেমন কোনো চাপ নেই। স্বাভাবিক গতিতে মহাসড়কে যান চলাচল করছে। ঈদ উপলক্ষে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকেও কিছু বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

টাঙ্গাইল সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমিরী খান জানান, এ বছর টাঙ্গাইল অংশে ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়কের ১৩ কিলোমিটারে চার লেন প্রকল্পের কাজ চলছে। এরমধ্যে সেতু থেকে এলেঙ্গার দিকে তিন কিলোমিটার ও এলেঙ্গা থেকে সেতুর দিকে তিন কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে। মাঝে প্রায় সাত কিলোমিটার দুই লেনের সড়ক রয়ে গেছে। ওই অংশে যাতে জট না হয় সে জন্য প্রতি কিলোমিটারে ১০ জন করে দায়িত্বশীল ব্যক্তির নজরদারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওই অংশে নছিমন, করিমন, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ কোনো প্রকার থ্রিহুইলার চলতে দেওয়া হবে না। 

বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। প্রতিদিন এ সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঈদের দিন পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। 

তিনি জানান, ঈদ সামনে রেখে টোলপ্লাজায় টোলবুথ বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। মোটরসাইকেলের জন্যও আলাদা দুটি করে টোলবুথ বাড়ানো হবে। সব মিলিয়ে এবারের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, এবার ঈদে ঘারমুখো মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারে এ জন্য এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত উত্তরবঙ্গগামী সব যানবাহন একমুখী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী যানবাহন সেতুর পূর্বপার গোলচত্বর থেকে ভূঞাপুর হয়ে এলেঙ্গা এসে ঢাকা যাবে। এ ছাড়া মহাসড়কে ৭০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যানজট রোধে মহাসড়কে ছয়টি রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close