প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ২:৩৮ পিএম (ভিজিট : ৫৬৪)
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে সেই পুকুরে এবার পাওয়া গেল একশত রুপালি ইলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ‘যুগান্তর কিল্লা’ গুচ্ছ গ্রামের পুকুরে মাছগুলো ধরা পড়ে। এর আগে বুধবার (২৭ মার্চ) একই পুকুর থেকে ১০ কেজি রুপালি ইলিশ ধরা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ‘যুগান্তর কিল্লা’ গুচ্ছ গ্রামের পুকুরটি ৪০টি পরিবার ব্যবহার করে। পুকুরটি লিজ নিয়েছেন নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের আবদুল মান্নান নামে এক ব্যক্তি। বিশাল এ পুকুরে প্রায় সাত দিন ধরে সেচ দিয়ে পানি কমান তিনি।
বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে পানি কমে এলে জেলেরা জাল জাল ফেলে পুকুরটিতে। এ সময় অন্যান্য মাছের সাথে রুপালি ইলিশ মাছ ধরা পড়ে। পরে সেগুলো ওজনে মাপলে প্রায় ১০ কেজি হয়। বৃহস্পতিবার সকালে সেই পুকুরে পানি আরো কমে আসলে জাল ফেলে আরো একশ রুপালি ইলিশ ধরা হয়। বিগত বছরগুলোতেও এই পুকুরে ইলিশ মাছ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আমাদের নিঝুম দ্বীপ মেঘনা নদী দ্বারা বেষ্টিত। দ্বীপে কোনো বেড়িবাঁধ নেই। তাই জোয়ার এলেই সহজেই প্লাবিত হয়। সেই জোয়ারের পানির সঙ্গে মেঘনার ইলিশ মাছ বিভিন্ন পুকুরে ঢুকে পড়ে। আজ একশ পেয়েছে, গতকাল প্রায় ১০ কেজি পেয়েছে।
পুকুরের নিজ গ্রহীতা আবদুল মান্নান বলেন, আমি দীর্ঘসময় ধরে পুকুরটি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করি। প্রতি বছর কম বেশি ইলিশ পাওয়া যায় পুকুরটিতে। ২০২২ সালে প্রথম ৩৫টি ইলিশ পেয়েছিলাম। ২০২৪ সালে এসে গতকাল পেয়েছি ১০ কেজি, আর আজকে একশ ইলিশ পেয়েছি।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ বলেন, প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস এলে নিঝুম দ্বীপের প্রায় সবগুলো পুকুর তলিয়ে যায়। এর মধ্যে যুগান্তর কিল্লা পুকরটিও ছিল। মূলত জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় তখন ইলিশ পুকুরে এসেছে। পানি বের হতে না পারায় মাছগুলো নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আনিসুজ্জামান বলেন, হাতিয়ায় পুকুরে ইলিশ পাওয়ার খবর পাওয়া যায়। নোয়াখালী উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় নিম্নাঞ্চলগুলো জোয়ারে প্লাবিত হয়। তখন ইলিশ প্রবেশ করায় বর্তমানে সেটি ধরা পড়ছে। নদীতে ইলিশ যেমন বৃদ্ধি পায়, পুকুরে তেমন বৃদ্ধি পায় না এবং স্বাদ ও আকৃতিও এক হয় না।
নোয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে কোন বেড়ি বাঁধ না থাকায় প্রতিবছরই প্লাবিত হয়। তখন হয়তো জোয়ারের সাথে ইলিশ মাছগুলো পুকুরে প্রবেশ করেছে। পুকুরের মালিক পানি ধরে রেখে সেগুলোকে হয়তো সংরক্ষণ করে রেখেছে। এখন পুকুরের পানি কমিয়ে অন্যান্য মাছের সাথে সেগুলো ধরা হচ্ছে।
সময়ের আলো/এএ/