প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০২৪, ৪:১৯ পিএম (ভিজিট : ৫৯৬)
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার চারাতলা নামক স্থানে অবৈধ সীসা কারখানার বিষক্রিয়ায় আবারো তিনটি গরুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া একই মালিকের আরো ৫টি গরু অসুস্থ হওয়ার পর তড়িঘড়ি করে কসাইদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এই নিয়ে বিভিন্ন সময় ১০/১২টি গরু মারা গেছে।
অপরদিকে ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তর খবর পেয়ে বুধবার (১৩ মার্চ) বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অবৈধ সীসা কারখানা সিলগালাসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন হরিণাকুন্ডুর এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপমা রায়। অভিযানের সময় ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুন্তাছির রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর ধরে চারাতলা বাজারের পাশে পায়রাডাঙ্গা গ্রামের ডালিম মন্ডল তার জমি ভাড়া দিয়ে এই অবৈধ কারখানা পরিচালনা করতে সহায়তা করে আসছিলেন। গাইবান্ধা জেলার মশিয়ার রহমান জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিতাড়িত হয়ে চারাতলা বাজারের নির্জন স্থানে অবৈধ সীসা কারখানায় পুরানো ব্যাটারি থেকে সীসা সংগ্রহের কাজ করে আসছিল। এই কারখানা থেকে তীব্র ঝাঝালো এসিডের গন্ধে এলাকার পরিবেশ বিপন্ন হতো। কত পক্ষীকুল এসিডের কারণে মারা গেছে।
শিতলী গ্রামের আলো জোয়ারদার অভিযোগ করেন, বুধবার (১৩ মার্চ) ওই কারখানার পাশে তার ৮টি গরু ঘাস খাচ্ছিল। বিষক্রিয়ায় তার ৮টি গরুই অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাড়ি আনার পর তিনটি গরু মারা যায়। বাকী পাঁচটি গরু তড়িঘড়ি করে স্থানীয় ইবাদত কসাইয়ের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
পায়রাডাঙ্গা গ্রামের মকলেছুর রহমান জানান, এর আগে ভালকী গ্রামের খেলাফৎ ও পায়রাডাঙ্গা গ্রামের কলিম উদ্দীনসহ একাধিক কৃষকের ১০/১২টি গরু মারা গেছে। এসব গরুর দাম প্রায় ১৫ লাখ টাকা হবে। এই অবৈধ সীসা কারখানা উচ্ছেদের জন্য এলাকাবাসী বহুবার হরিণাকুন্ডু উপজেলা প্রশাসন ও ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানালেও তারা অদৃশ্য কারণে বন্ধ করেনি। অবশেষে বিভিন্ন সময় ১০/১২টি গরুর মৃত্যুর পর গতকাল (বুধবার) ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কারখানাটি সিলগালা করা হয়।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলার মশিয়ার রহমান এর আগে সদর উপজেলার আসাননগর, বংকিরা, বৈডাঙ্গা ও হরিশংকরপুর গ্রামে এই কারখানা স্থাপনের চেষ্টা করে গ্রামবাসীর প্রবল বাঁধার মুখে বিতাড়িত হয়।
কারখানা পরিচালক গাইবান্ধা জেলার মশিয়ার রহমান জানান, তিনি ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে এই কারখানা চালিয়ে আসছিলেন। আমার টাকা সবার পকেটে আছে। তিনি দাবী করেন ৪০ জায়গায় তিনি মাসিক টাকা দিয়ে এই ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুন্তাছির রহমান জানান, আমার লোকবল নেই। একটা অভিযান পরিচালনা করতে প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ। কিন্তু অফিসের কোন বরাদ্দ নেই।
তিনি আরও বলেন, বুধবার ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অবৈধ সীসা কারখানা সিলগালাসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
সময়ের আলো/আরআই