ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

বিজিপির ১৭৯ সদস্য নাইক্ষ্যংছড়িতে বিজিবির স্কুলে
প্রকাশ: বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০২৪, ৭:১৮ এএম  (ভিজিট : ৪৪৬)
প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ উত্তেজনার জেরে জীবন রক্ষার্থে সীমান্ত অতিক্রম করে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৭৭ জন সদস্য গত সোমবার বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাদের ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিকভাবে যোগাযোগ করছে ঢাকা। তবে এ ঘটনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করতে পারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

তবে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) মঙ্গলবার সকালে জানায়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের (১১ বিজিবি) দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকা দিয়ে এখন পর্যন্ত বিজিপির ১৭৯ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। গত সোমবার রাতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিনও ১৭৯ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসার তথ্য দেন।

এদিকে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার জামছড়ি সীমান্ত এলাকা পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। 

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে যুদ্ধে টিকতে না পেরে সোমবার দুই দফায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বিজিপির ১৭৯ সদস্যকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবির স্কুলে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, আবারও মিয়ানমারের ১৭৭ জন সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। সঙ্গে কিছু সিভিলিয়ানও এসেছিল। সিভিলিয়ানদের পুশব্যাক করা হয়েছে। এর আগেও মিয়ানমার থেকে তাদের সীমান্তরক্ষী, সেনাবাহিনীর সদস্য এবং তাদের পরিবারের কয়েকজন সদস্য এসেছিল। তখন আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ফেরত পাঠিয়েছি। এবারও মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করেই তাদের ফেরত পাঠাতে কাজ করছি। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অত্যন্ত ঘোলাটে, বিশেষ করে সীমান্ত অঞ্চলে। এ জন্যই বারবার এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।

এ ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কি না এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হবে কি না? জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে এ বিষয়ে সবসময়ই আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। তাদের সঙ্গে যেহেতু যোগাযোগ রয়েছে তাই প্রয়োজন হলে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডাকা হবে।

এর আগে, গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ উত্তেজনায় তাদের ছোড়া মর্টারসেল, গুলি বাংলাদেশ অংশে এসে পড়ে। মর্টারসেলের আঘাতে দুজন মারা যান। মূলত মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ উত্তেজনায় এসব ঘটনা ঘটে, যা বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এজন্য ওই সময়ে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। তখন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের হাতে একটি কূটনৈতিক পত্রও ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই পত্রে চলমান ঘটনার বিষয়ে তীব্র ভাষায় উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। 
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, সোমবার বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বিজিপির ১৭৯ জন সদস্যকে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাদের উপজেলা প্রশাসন ও বিজিবির পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ১১ বিজিবি-পুলিশ-সিভিল প্রশাসনের সমন্বয়ে কাজ করা হচ্ছে এবং সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জনপ্রতিনিধি জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারদিকে কাপড় ঘেরাও করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়েছে। সেদিক দিয়ে সাধারণের চলাচল সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে বিজিপির সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জেরে ৪ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিজিপিসহ মিয়ানমারের ৩৩০ জন নাগরিক বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তাদের মধ্যে বিজিপি ৩০২ জন, তাদের পরিবারের চার সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক ছিল। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নিয়মতান্ত্রিকভাবে তাদের ফেরত পাঠানো হয়।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close