ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

চট্টগ্রামে ওয়াসার পানি উৎপাদনে ঘাটতি
প্রকাশ: বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০২৪, ২:২১ এএম  (ভিজিট : ৫১৪)
হঠাৎ করেই চট্টগ্রামে কমে গেছে ওয়াসার পানি উৎপাদন। দৈনিক ৫০ কোটি লিটার উৎপাদন সক্ষমতা থাকলেও গেল এক সপ্তাহ ধরে উৎপাদন হচ্ছে ৪১ কোটি লিটার থেকে ৪২ কোটি লিটার। দৈনিক গড়ে অন্তত ৮ কোটি লিটার উৎপাদন কমে গেছে। এতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে পানির সংকট। গত সোমবার সেহরিতে অনেকে পানি নিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হন। মঙ্গলবারও বিভিন্ন এলাকায় পানি সংকট ছিল। 

তবে ওয়াসা দাবি করেছে, নগরীর পুরো অংশেই পানি সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। উৎপাদন ঘাটতির প্রভাব পড়েছে সীমিত এলাকায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংকট কেটে যাবে বলেও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুম আলম সময়ের আলোকে বলেন, হালদা নদী থেকে চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পানি নেয়। বলতে গেলে ওয়াসার পানি শোধনাগারগুলো হালদা নদীর পানির ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। এই হালদা নদীর পানি উত্তোলন করতে গিয়ে দুই ধরনের সমস্যায় পড়ছে ওয়াসা। একটি হচ্ছে হালদার পানির লেয়ার অনেক নিচে নেমে যাওয়া। যে কারণে পানি শোধনাগারে পাইপের মাধ্যমে আগের মতো পানি নিতে পারছে না। আরেকটি হচ্ছে কাপ্তাই জল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত পানি না ছাড়া। এতে হালদা নদীতে মিঠা পানির সংকট দেখা দিয়েছে। কারণ পর্যাপ্ত মিঠা পানি থাকলে সমুদ্রের জোয়ার ভাটার সময় আসা লবণাক্ত পানি দূর করা যায়। এসব সমস্যার কারণে উৎপাদন কমেছে। এতে গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহে কিছুটা সংকট হয়েছে। 

চট্টগ্রাম ওয়াসার বিতরণ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানান, নগরীর মূল কেন্দ্রগুলোতে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। যেখানে ঘনবসতি সেখানে পানির চাহিদা বেশি থাকে। এসব এলাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সংকট বলতে পানির চাপ কমে গেছে। একটানা সরবরাহ পাচ্ছে না এমনটি নয়। পানি সরবরাহ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। এই মুহূর্তে নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় পানি সংকট আছে। অন্য কোথাও তেমন সংকট নেই। সব জায়গায় সংকট প্রকট হয়নি দাবি করে ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুম আলম বলেন, ৮ কোটি লিটার দৈনিক উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় নগরীর পতেঙ্গা বিশেষ করে মধ্যম পতেঙ্গা এলাকায় পানির সংকট হচ্ছে। অন্য কোথাও পানি সংকট হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। আমরা সংকট এড়াতে কারিগরি কাজ নিয়মিত করে যাচ্ছি। আশা করি উৎপাদন স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর জামালখান, চকবাজার কাপাসগোলা, হেমসেন লেন, হালিশহর এবং পতেঙ্গা এলাকায় পানি সংকট বেড়েছে। এসব এলাকায় পানির সরবরাহ পৌঁছালেও চাপ থাকছে কম। তাই সরবরাহ থাকাকালে পানি রিজার্ভারে ধরে রাখাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার মানুষ দুর্ভোগে আছেন। বিশেষ করে দুপুরের দিকে পানি সরবরাহ কমে যায়। বিকালের পর থেকে আবার বাড়ে। নিরবচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ না পাওয়ার কারণে কিছু কিছু এলাকায় দুর্ভোগ বেড়েছে।

ওয়াসার কর্মকর্তারা জানান, গেল ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে হালদার পানিতে অতিরিক্ত লবণ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি লিটার পানিতে সর্বনিম্ন ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণের উপস্থিতি মিলছে। হালদা নদী ও কর্ণফুলী নদী থেকেই ওয়াসার পানি শোধনাগারগুলোতে পানি নেওয়া হয়। পরিশোধন করে সরবরাহ করা হয় গ্রাহক পর্যায়ে। নগরীতে ওয়াসার গ্রাহকদের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা পানির অন্তত ৯০ ভাগই নদী থেকে নেওয়া পরিশোধন করা পানি। বাকি পানিগুলোতে ওয়াসার গভীর নলকূপ থেকে সরবরাহ করা হয়। প্রতি বছর গ্রীষ্ম মৌসুম শুরু মাঝামাঝি পর্যায়ে হালদা ও কর্ণফুলী নদীতে লবণাক্ততা দেখা দেয়। এবার আগেভাগেই লবণাক্ততা দেখা দেওয়ায় গ্রাহক পর্যায়ে পানি সরবরাহে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। বৃষ্টি হলে এবং নদীর পানির লবণাক্ততা কেটে গেলে পরিস্থিতি দ্রুত উন্নতি হবে বলে কর্মকর্তারা মনে করছেন।

সময়ের আলো/আরএস/ 















https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close