ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নেই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ডাম্পিং স্টেশন
কিশোরগঞ্জে ভাগাড় নিয়ে ভোগান্তি
প্রকাশ: সোমবার, ১১ মার্চ, ২০২৪, ২:২৬ এএম  (ভিজিট : ৫৩৬)
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর পৌর এলাকায় যত্রতত্র ময়লার ভাগাড় নিয়ে পৌরবাসীর ভোগান্তির শেষ নেই। কাগজে-কলমে ২৪ জন পরিছন্নতাকর্মী থাকলেও কাজ করেন মাত্র ৫ জন। ২০০৬ সালে ৫ দশমিক ৪৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত পৌরসভাটি ২০১৬ সালে ‘বি’ গ্রেডে উন্নীত হয়। কিন্তু দীর্ঘ দেড় যুগেও সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে পৌরবাসী পরিছন্নতার সুফল পায়নি। 

দুই মেয়াদে হোসেনপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া বর্তমান মেয়র আবদুল কাইয়ুম খোকন। দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন, আবার তিনি মেয়র পদে নির্বাচিত হলে ডাম্পিং স্টেশন স্থাপনসহ আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর ২ বছর পেরিয়ে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হোসেনপুর পৌর এলাকার নিত্যদিনের ময়লা ফেলা হচ্ছে উন্মুক্ত বিভিন্ন স্থানে। ময়লা ফেলার জন্য দুটি ভাগাড় ট্রাক থাকলেও একটি ট্রাক ব্যবহার করা হয়। আরেকটি ট্রাক খোলা জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখায় সেটি নষ্ট হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এসব বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে পৌর মেয়র আবদুল কাইয়ুম খোকন বলেন, ঝাড়ুদার পাওয়া যায় না। এটি একটি ছোট পৌরসভা। এখানে তেমন কোনো আয় না থাকায় এত কিছু করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া পৌর এলাকায় কোনো ডাম্পিং স্টেশন নেই। ময়লা কোথায় ফেলব? 

পৌর এলাকার প্রতিদিনের ময়লা পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের কিনারে ফেলে নদের পানি দূষিত করে পরিবেশ নষ্ট করা হলেও এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিন্দ্য মণ্ডল বলেন, মেয়রকে প্রতি মাসেই মাসিক সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হলেও তিনি সভায় উপস্থিত হন না। তিনি যদি আমাদের কাছে ডাম্পিং স্টেশনের বিষয়ে সহায়তা নিতে চান তা হলে আমরা এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে সরকারিভাবে সহায়তা করতে পারি।

এ বিষয়ে ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজাহান আলম কাজলের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি রেগে গিয়ে বলেন, মেয়র কোনো ঝাড়ুদার নিয়োগ না দিলে আমাদের কী করার আছে? ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লুৎফুর রহমান রাসেল মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি নিয়ে মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে হবে। প্যানেল মেয়র নাজমুল হক লিমন বলেন, বৃষ্টির আগেই ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা জরুরি। 

৯টি ওয়ার্ড নিয়ে হোসেনপুর পৌরসভা গঠিত হলেও অধিকাংশ এলাকাই এখনও গ্রামই রয়ে গেছে। পৌরসভার বেশির ভাগ বাজার ও আবাসিক এলাকায় ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই। নেই কোনো ডাস্টবিন। এ জন্য বাসাবাড়ি ও দোকানপাটের ময়লা-আবর্জনা প্রতিদিন বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে ফেলে রাখা হয়। আগের দিন উন্মুক্ত স্থানে ফেলে রাখা ময়লাগুলো পরদিন সকাল ৮টার পর একটি পিকআপ গাড়িতে করে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের কিনারে ফেলে দেন ৪-৫ জন পরিছন্নতা কর্মী। এতে একদিকে যেমন পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ ভরাট হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে নদের পানি দূষিত করে পরিবেশ বিনষ্ট করা হচ্ছে। 

হোসেনপুর পৌর এলাকার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শুধু হাসপাতাল চৌরাস্তা থেকে মিষ্টিপট্টি পর্যন্ত ৫০০ থেকে ৬০০ ফুট রাস্তা রাতের বেলায় ঝাড়ু দেন মাত্র একজন ঝাড়দার। এ ছাড়া বাকি রাস্তায় কখনোই ঝাড়ু দেওয়া হয় না। এমনকি রাস্তায় হাঁটু পর্যন্ত ধুলা জমে গেলেও কখনোই পরিষ্কার করা হয় না। এ জন্য বাধ্য হয়েই অনেক সময় ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানের সামনের অংশে রাস্তায় জমে থাকা ধুলা নিজ উদ্যোগে পরিষ্কার করে থাকেন। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তার ধুলা-বালু কাদায় পরিণত হয়। এতে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শুধু তাই নয়, অনেক জায়গায় রাস্তার পাশের ড্রেনে ধুলা-বালু আর কাদা জমে গেছে। পানি প্রবাহের পথ বন্ধ হয়ে দূর্বাঘাস গজিয়ে গেছে এসব জায়গায়। প্রায় সময়েই এসব রাস্তায় ড্রেনের পানি জমে থাকে। এতে করে রাস্তাগুলো নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। 

সরেজমিন কথা হয় স্থানীয় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে। এ সময় তারা সবাই অভিযোগ করে বলেন, হোসেনপুর নতুন বাজার থেকে হাসপাতাল চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তাটি পৌর এলাকার মূল সড়ক হলেও এখানে কখনোই ঝাড়ু দিতে দেখেননি তারা। এই রাস্তা দিয়ে বালুবাহী লরি ট্রাক, যাত্রীবাহী বাসসহ ছোট বড় অসংখ্য যানবাহন চলাচল করায় শুকনো মৌসুমে ধুলা-বালুর কারণে শ্বাসকষ্টসহ নানা সমস্যা হয় তাদের।


সময়ের আলো/আরএস/






https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close