ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল
চার বছর ধরে নেই চক্ষু চিকিৎসক
প্রকাশ: সোমবার, ৪ মার্চ, ২০২৪, ১:৪৬ এএম  (ভিজিট : ৩৭৪)
উত্তর জনপদের একটি অবহেলিত জেলা কুড়িগ্রাম। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদী বেষ্টিত এ জেলায় রয়েছে সাড়ে চার শতাধিক চর ও দ্বীপ চর। দারিদ্র্যপীড়িত এ অঞ্চলের প্রায় ২৫ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল।

অথচ এই সরকারি হাসপাতালে দীর্ঘ চার বছর ধরে নেই চক্ষু চিকিৎসক। চিকিৎসকের অভাবে সরকারি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত এ অঞ্চলের হতদরিদ্র রোগীরা। উপায়ান্তর না পেয়ে চোখের চিকিৎসা নিতে নির্ভর করতে হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোর ওপর। আবার অনেকেই উপায় না পেয়ে ছুটছেন বিভাগীয় শহর রংপুরে। ফলে দারিদ্র্যপীড়িত এ অঞ্চলের মানুষের চোখের চিকিৎসায় গুনতে হচ্ছে বাড়তি খরচ। এমন পরিস্থিতিতে চক্ষু চিকিৎসক সংকটে দ্রুত সমাধান চান রোগী ও তাদের স্বজনরা।

জানা গেছে, কুড়িগ্রামে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বছরের পর বছর ধরে চলছে চিকিৎসক সংকট। চিকিৎসক সঙ্কটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ অঞ্চলের চিকিৎসা সেবা নিতে আসা অসহায় রোগীরা। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক জনবল না থাকায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ। বিশেষ করে চক্ষু চিকিৎসক, অর্থোপেডিক্স ও মেডিসিন চিকিৎসকের গুরুত্বপূর্ণ ৬ পদের মধ্যে নেই কোনো চক্ষু চিকিৎসক। অর্থোপেডিক্স ও মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসক রয়েছে মাত্র একজন করে। জেলার সর্ববৃহৎ এ হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে জনসাধারণ। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে চিকিৎসকের চাহিদা প্রতি বছর পাঠানো হলেও কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সংকট দূর হচ্ছে না।

হাসপাতালে কথা হয় চোখের সমস্যা নিয়ে আসা রোগী মরিয়ম বেওয়ার সঙ্গে। বয়স তার ৬০। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমার চোখে ছানি পড়ায় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক না পেয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চোখের অপারেশন করে নিয়েছি। আমরা গরির মানুষ। গরু বিক্রি করে বেসরকারি হাসপাতালে চোখের চিকিৎসা নিয়েছি। থাকা খাওয়া, চিকিৎসা ব্যয় বাবদ খরচ হয়েছে প্রায় ৩২ হাজার টাকা। আবারও চোখে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আজ হাসপাতালে এসে চোখের ডাক্তার না পেয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছি। এখানে যদি একজন ডাক্তারও থাকত তা হলে আমাদের এমন দুর্ভোগ আর ভোগান্তি পোহাতে হতো না।

ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা থেকে আসা আরেক চোখের রোগী মো. আজনাল হক বলেন, গত কয়েক দিন ধরে চোখের তীব্র ব্যথার কারণে ঘুমোতে পারি না। আজ বাধ্য হয়ে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চোখের চিকিৎসা নিতে এসেছি। অথচ এখানে কোনো চোখের ডাক্তার নেই। হাসপাতালের একজন কর্মচারী রংপুর মেডিকেলে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাড়ির পাশে এত বড় হাসপাতাল অথচ চোখের চিকিৎসার জন্য একজন ডাক্তারও নেই।

কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. শাহীনুর রহমান শিপন বলেন, ‘কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘ চার বছর ধরে চক্ষু চিকিৎসক নেই। বিকল্প পন্থায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। আমরা ২৫০ শয্যার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পাঠিয়েছি। আশা করছি দ্রুত এর সমাধান হবে।


সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close