প্রকাশ: বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৯:০৯ পিএম (ভিজিট : ১১০২)
কক্সবাজারের উখিয়ায় চাচাতো ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে জেঠাতো ভাই সৈয়দ করিম হত্যার ঘটনায় ঘাতক চাচাতো ভাই সালামত উল্লাহকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫ এর সদস্যরা। হত্যাকাণ্ডের ১০ ঘণ্টার মধ্যে রামু খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচার দ্বীপের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরি ও নিহতের পরিহিত জামাও উদ্ধার করে র্যাব।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মো. আবু সালাম চৌধুরী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরও জানান, উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের নিদানিয়া তেতুলতলা গ্রামের বাসিন্দা সালামত উল্লাহ ও সৈয়দ করিম সম্পর্কে একে অপরের আপন চাচাতো-জেঠাতো ভাই। পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে উভয়ের মধ্যে বিরোধ চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে উখিয়ার উত্তর নিদানিয়া গ্রামের স্থানীয় স্টেশন থেকে সৈয়দ করিম বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির নিকটে সুপারি বাগানে পৌঁছালে সালামত উল্লাহ পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার উপর আকস্মিক হামলা করে। একপর্যায়ে ঘাতক সালামত উল্লাহ সৈয়দ করিমের বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ছুরিকাঘাতের ঘটনায় সৈয়দ করিম মারা যান। নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
র্যাব-১৫ বিষয়টি অবগত হওয়ার পর ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত ঘাতককে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। র্যাব জানতে পারে; ঘাতক সালামত উল্লাহ পালানোর উদ্দেশ্যে মেরিন ড্রাইভ রোড হয়ে কক্সবাজার শহরের দিকে যাচ্ছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯ টার দিকে টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ রোডে একটি অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপনপূর্বক তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে।
তল্লাশি অভিযান চলাকালীন একটি সিএনজি চেকপোস্টের সামনে আসা মাত্রই ঘাতক সালামত উল্লাহ র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে সিএনজি থেকে নেমে নিকটবর্তী পাহাড়ি এলাকায় পালানোর চেষ্টা কালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরি ও নিহতের পরিহিত জামা উদ্ধার করা হয়।
ঘাতক সালামত উল্লাহ উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের নিদানিয়া তেতুলতলা গ্রামের সৈয়দ কাশেমের ছেলে।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সালামত উল্লাহ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে বলেন, নিহত সৈয়দ করিমের সাথে তার স্ত্রীর দীর্ঘদিন যাবত পরকীয়া সম্পর্কের সন্দেহ এবং পারিবারিক ভাবে পূর্ব শক্রতা চলে আসছিল। এরই জেরে ঘাতক দীর্ঘদিন যাবত সুযোগের অপেক্ষায় ছিল এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি সংগ্রহে রেখেছিল। ঘটনার দিন সকালে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের উত্তর নিদানিয়া গ্রামের স্থানীয় স্টেশন থেকে সৈয়দ করিম বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে নিহতের বাড়ির সুপারি বাগানে পৌঁছালে তার উপর হামলা করে। একপর্যায়ে সুপারি বাগানে একটি ছোট গর্তে ফেলে সে সৈয়দ করিমের বুকে ছুরিকাঘাত করে এবং ঘটনাস্থলে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি ফেলে পালিয়ে যায় মর্মে স্বীকার করে।
সময়ের আলো/আরআই