ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আজ
প্রকাশ: বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১২:৫০ এএম আপডেট: ২১.০২.২০২৪ ১০:৪০ এএম  (ভিজিট : ৬৮৯)
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।’ আজ সেই মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। মহান শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ। মায়ের ভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা অর্জনের দিন আজ। মায়ের ভাষার জন্য প্রাণ বলি দেওয়ার দিন আজ। যে মাতৃভাষার জন্য ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউররা। ভাষা শহিদ ও ভাষা সৈনিকদের সেই অমরগাথায় বাংলা ভাষার সেই গৌরব অমর একুশে এখন পালিত হচ্ছে গোটা পৃথিবীব্যাপী। মায়ের ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করে বিশ্বের বুকে এই অনন্য ইতিহাস রচনা করেছিল বাংলাদেশ। যার ফলশ্রুতিতে সারাবিশ্বে পালিত হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। আজ একুশে ফেব্রুয়ারি, বাংলা ভাষার দাবিতে প্রাণদানের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের ৭২ বছর পূর্ণ হলো।

দিবসটি উপলক্ষে ভাষা শহিদদের স্মরণে ২১ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এ ছাড়া শহিদ মিনারে তিন বাহিনীর প্রধানসহ পর্যায়ক্রমে দলমত নির্বিশেষে সব পর্যায় থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। দিবস উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ রাজনৈতিক দলগুলো এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে শ্রদ্ধা জানানো হয়। মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারসহ আশপাশের এলাকায় নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর, ডগ স্কোয়াটসহ গোয়েন্দারা বাড়তি নজরদারি রেখেছেন ওই এলাকায়।

জানা গেছে, বুধবার রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপরই শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর অন্যরা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভোর সাড়ে ৬টায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবনসহ সারা দেশে সংগঠনের সব শাখা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন। এদিন সকাল ৭টায় কালোব্যাজ ধারণ, প্রভাত ফেরি সহকারে আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহিদদের কবরে ও কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন। নিউমার্কেটের দক্ষিণ গেট থেকে প্রভাত ফেরি শুরু হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাজধানী ঢাকার বাইরেও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে জাতি মহান একুশের ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে। কালো ব্যাজ ধারণ, প্রভাতফেরিসহ আজিমপুর কবরস্থানে শহিদদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানো হয়।

একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে আজ (বুধবার) সরকারি ছুটি। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। উত্তোলন করা হয় কালো পতাকা। দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আলাদা বাণী দিয়েছেন। গণমাধ্যমগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশসহ দিবসটির তাৎপর্য অনুসারে নানা আয়োজন করা হয়েছে।

ভাষা আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস : জানা যায়, তৎকালীন পূর্ব বাংলার রাজধানী ঢাকায় ১৯৪৭ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে প্রথম ভাষা-বিক্ষোভ শুরু হয়। পাকিস্তানি শাসকরা বাঙালিদের ওপর জোরপূর্বক ঊর্দু ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ নিয়ে ১৯৪৮ সালের মার্চে সীমিত পর্যায়ে আন্দোলন হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এর চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ওইদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে বেরিয়ে এলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে আমতলায় পুলিশ তাদের ওপর নির্বিকারে গুলি চালায়। এতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউররা শহিদ হন।

১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। সেখানে ১৮৮টি দেশ সমর্থন জানালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোয় যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। এরপর ২০১০ সালে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারিকে সারাবিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।


সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close