ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

৫০ শয্যার জনবলে চলছে ১০০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
প্রকাশ: রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৫:৩৭ পিএম  (ভিজিট : ৯২৮)
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স । ছবি: সময়ের আলো

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স । ছবি: সময়ের আলো

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত হাসপাতালের জনবল সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ৫০ শয্যার জনবলও নেই। কোন রকম খুরিয়ে চলছে এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অন্যদিকে হাসপাতালে রয়েছে শয্যা সংকট। ফলে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পরছে। 

এই ১০০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি কোটালীপাড়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। হাসপাতালকে ৫০ শয্যা থেকে ২০২৩ সালে ৬ জানুয়ারি ১০০ শয্যা উন্নতি করা হয়। তখন হাসপাতালটির শয্যা সংখ্যাও বাড়ানো হয়। কিন্তু হাসপাতালের জনবল কাঠামোর কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। সেই ৫০ শয্যার জনবল কাঠামোতেই চলছে ১০০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রম। ১০০ শয্যার জন্য সিনিয়র কনসালটেন্ট ১০ জন বিপরীতে কর্মরত নেই একজনও। আর জুনিয়র কনসালটেন্ট ১১ জনের বিপরীতে কর্মরত আছে ৬ জন।

শূন্য রয়েছে ৫ জনের পদ। মেডিকেল অফিসার ও সহকারী সার্জনের ২৭ জনের বিপরীতে কর্মরত আছে ১৫ জন। শূন্য রয়েছে ১২ জনের পদ। ৪৭ জন নার্সের পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৩২ জন। শূন্য রয়েছে ১৫ জনের পদ। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের পদ ২৩৭ জনের। সেখানে ৬৯ পদ শূন্য রয়েছে। কর্মরত আছেন ১৬৮ জন।

জানা যায়, প্রতিদিন কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বহির্বিভাগে ৬০০-৭০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। আর ৫০ শয্যার বেড থাকলেও প্রতিদিন গড়ে হাসপাতালে রোগী ভর্তি থাকেন ১০০ থেকে ১২০ জন। শয্যার দিগুণ রোগী থাকার কারণে তাদের মেঝেতে, করিডোরে, করিডোরের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তাদের বিছানা, খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে না। কারণ হাসপাতালে ৫০ জন রোগীর জন্য সব সুযোগ সুবিধা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ৫০ রোগীর বেশি ভর্তি থাকলে তাদের নিজ দায়িত্বে খাবার, বিছানাসহ অন্যান্য সেবা বাইরে থেকে গ্রহণ করতে হয়।

সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছে মাত্র ৪ জন। বছরের পর বছর ধরে চারজনে গোঁজামিল করে সারলেও কাজের কাজ কিছুই না। রোগীর কেবিন, টয়লেট, বারান্দাসহ প্রতিটি কক্ষ এবং পুরো হাসপাতাল চত্বরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজগুলো দায়সারাভাবে সেরেছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।

এ বিষয়ে হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নন্দা সেন গুপ্তা সময়ের আলোকে বলেন, ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আমি কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করার পর থেকে নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিল এখনও আছে। তারপরও আমার আন্তরিক প্রচেষ্টায় এবং আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রচেষ্টায় অনেক খানি উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু পুরোপুরি আদৌ সম্ভব নয়। তার একটা প্রধান কারণ হচ্ছে জনবল। 

তিনি আরো বলেন, আমার হাসপাতালে ৫০ শয্যার যে জনবল সেটাই নাই। কিন্তু এই জনবল দিয়ে ১০০ শয্যার হাসপাতাল চালাচ্ছি। এই হাসপাতালের নতুন ভবনটি ৫ তলা ও পুরাতন ভবনটি ৩ তলা। এই ভবন দু’টির ২৪ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী প্রয়োজন। সেখানে আছে মাত্র ৪ জন। এই হাসপাতালে অনেক সার্ভিস বন্ধ ছিল। কিছু কিছু সার্ভিস জোড়াতালি দিয়ে চলছিল। আমি আসার পরে ডিজিটাল আল্ট্রাসোনোগ্রাম মেশিন চালু করি। চালু হওয়ার এই এক বছরের মধ্যে সরকারি রাজস্ব খাতে ১২ লক্ষ টাকার বেশি জমা দিতে পেরেছি।

তিনি জানান, এখানে এনালগ একটা এক্সরে মেশিন চলছে কিন্তু এটা যদি ডিজিটাল হয় তাহলে ভালো হতো। এখানে নিরাপত্তা কর্মী দরকার। কারণ বিভিন্ন সময় জটিল রোগী আসে। জটিল রোগীর মৃত্যু হয়। ওই রোগীর আত্মীয় স্বজনরা আবেগ আপ্লুত হয়ে অনেক ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করে। তাই নিরাপত্তার জন্য আনসার বাহিনী দরকার। আমার জনবল যা আছে তাই দিয়ে রোগীদের ভালো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি হাসপাতাল চত্বরে নিজস্ব অর্থায়নে একটি ফুলের বাগান করেছি। ফুলতো মানুষের মনের খোরাক তাই রোগীরা ফুল দেখলে হয়ত তার মনটা তখন ভালো হতে পারে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সবধরনের সার্ভিস চালু করার জন্য বার-বার লেখা হচ্ছে জানানো হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ  আমাকে এই বিভিন্ন সুবিধা গুলো যখনি দেবেন সাথে সাথে সে কার্যকর করার জন্য বদ্ধ পরিকর। সেক্ষেত্রে জনগণ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্য প্রয়োজন।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স   জনবল সংকট  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close