ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

শিগগিরই দুই দেশের পতাকা বৈঠক
প্রকাশ: শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৬:৪৯ এএম  (ভিজিট : ৬৮২)
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার জান্তা সরকারের সেনাদের মধ্যকার তুমুল গোলাগুলিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৬৪ জন সদস্যকে টেকনাফের হ্নীলা এলাকায় রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শিগগিরই দুই দেশের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে তা নিয়ে দুই দেশের রাষ্ট্রদূতসহ কূটনীতি সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত আছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত এক সপ্তাহ ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) ও মিয়ানমারের জান্তা সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এরই মধ্যে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ে দুজন নিহত এবং গুলিতে শিশুসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। ওপারের গোলাগুলিতে এপারে সীমান্ত এলাকার আতঙ্কিত নারী-শিশুসহ হাজার হাজার মানুষ গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

তবে গত দুদিন ওপারে গোলাগুলি পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ায় ফিরতে শুরু করেছেন গ্রামবাসী। সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি কমলেও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

কয়েক দিন ধরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যকার ব্যাপক সংঘর্ষে প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষাকারী বিজিপির কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আশ্রয় নিয়েছেন বিজিপির ৩৩০ জন সদস্য। পালিয়ে আসা বিজিপির এই সদস্যদের নিরস্ত্রীকরণ করে খাবার ও আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে আশ্রয় নেওয়া বিজিপির ১০০ জন সদস্যকে প্রশাসনিক সুবিধা বিবেচনা করে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে টেকনাফের হ্নীলাতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে এখনও ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের স্থানান্তর করা হয়নি।
বিজিবি সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, গতকাল দুপুরে আশ্রয় নেওয়া বিজিপির ১০০ জন সদস্যকে টেকনাফের দিকে স্থানান্তর করা হয়েছে।

অন্যদিকে সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত হয়ে ওঠায় উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ঘুমধুম-তুমব্রু, জলপাইতলী সীমান্তের ২৪৩ জন বাসিন্দা গতকাল ঘরে ফিরেছেন। তবে সীমান্তবর্তী বাসিন্দারা নিজ ঘরে ফিরতে শুরু করলেও আতঙ্ক কাটেনি।

স্থানীয়রা জানান, গত দুদিন ধরে ওপার থেকে গোলাগুলির কোনো শব্দ শোনা যায়নি। সীমান্ত পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ায় সবাই ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। বাজারগুলোয় বেড়েছে সাধারণ মানুষের আনাগোনা। দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও এখনও আতঙ্ক কাটেনি সীমান্তে বসবাসরত বাসিন্দাদের।

তুমব্রু এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিন আগে যে গোলাগুলি শুরু হয়েছিল ভয়ে সবাই পালিয়ে গেছে। এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় সবাই আবার বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে।

ঘুমধুমের বাসিন্দা জহির বলেন, সীমান্তে গোলাগুলির কারণে চাষবাস কিছুই করতে পারছি না। সবকিছু ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। এখন স্বাভাবিক হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, বুধবার দুপুরের পর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ওপার থেকে গোলাগুলির কোনো শব্দ শোনা যায়নি। পরিস্থিতি শান্ত হয়ে ওঠায় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া লোকজন বাড়ি ফিরে গেছে।

এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম সীমান্তের নয়াপাড়ায় গতকাল সকালে একটি অবিস্ফোরিত মর্টারশেল দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী এসে সেটি নিষ্ক্রিয় করে। টেকনাফ-২ বিজিবি কর্মকর্তা মেজর শহীদুল ইসলাম সময়ের আলোকে জানান, গত মঙ্গলবার টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করা ৬৪ জন বিজিপি সদস্যকে টেকনাফের হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। গতকাল তুমব্রু থেকে মিয়ানমারে ফেরতের উদ্দেশে নিয়ে আসা আরও ১০০ জন বিজিপি সদস্যদের হ্নীলার ওই একই বিদ্যালয়ে রাখা হয়। হ্নীলার ওই উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৬৪ জন বিজিপি সদস্যকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

অনুপ্রবেশের সময় দুই রোহিঙ্গা পুশব্যাক : মিয়ানমারে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত বুধবার টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মাঝেরপাড়া সীমান্ত দিয়ে দুই রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বিজিবি সদস্যরা আটক করে তাদের পুশব্যাক করে। অনুপ্রবেশকারী দুজনই পুরুষ বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন হোয়াইক্যং বিওপির কমান্ডার আবু।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close