ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

আজ বিশ্ব ক্যানসার দিবস
ব্যয় মেটাতে মাঝপথেই বন্ধ চিকিৎসা
প্রকাশ: রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১২:৩৩ এএম  (ভিজিট : ৪৬৮)
দুই বছর ধরে মলদ্বারে ক্যানসারে আক্রান্ত বাঘের হাটের মোংলার নুরুজ্জামান (৩৫)। পেশায় কৃষক ছিলেন। চার বছর আগেও তার ২৫ কাঠা জমি ছিল। আর এখন সেই জমি তো দূরের কথা ঘরের ভিটে পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছেন দুরারোগ্য ক্যানসারের চিকিৎসার খরচ মেটাতে। শুধু তাই নয়, দুই সমিতি থেকে ঋণ নিয়েছেন ২ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে তার লোন এখন ৭ লাখ টাকার মতো। মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে কোনোমতে দিন কাটালেও মাঝখানে তার চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল টাকার অভাবে। এখন তিনি আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অনকোলজি বিভাগে এসেছেন কেমোথেরাপি দিতে। সেখানেই এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা তার। পাশে ছিলেন তার স্ত্রী রুমা আকতার।

চিকিৎসা খরচের কথা উঠতেই নুরুজ্জামান জানান, তিন বছর আগে কয়েক দিন পরপর শুধু জ্বর ও পেট ব্যথা হতো। প্রথমে ফার্মেসি থেকে ওষুধ খেলেই ভালো হয়ে যেত। কিন্তু কিছু দিন পর আর ভালো না হওয়ায় ডাক্তারের কাছে যাই। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাই। কিছুই ধরা পড়েনি। পরে আমাকে খুলনায় পাঠানো হয়। সেখানেই কমপক্ষে ১৫টি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক ঘুরি কিন্তু কোনো কিছুই ধরা পড়েনি। ৬ মাসে আমার প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। পরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হলে আমার ক্যানসার ধরা পড়ে। ততক্ষণে আমার ক্যানসার তৃতীয় স্তরে পৌঁছে গেছে। চিকিৎসকের পরামর্শে খুলনায় গিয়ে কেমোথেরাপি দিতে শুরু করি। একবার কেমোথেরাপির খরচ ২২ হাজার টাকা আর ওষুধ, থাকা-খাওয়া ও যাতায়াত খরচ কমপক্ষে ৪ হাজার টাকা। এভাবে আটটি কেমোথেরাপি-ওষুধে প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর পরেও অসুখ ভালো হয়নি। তখন পাঠানো হয় বিএসএমএমইউতে। এখানেও ছয়টি কেমো দিয়েছি। ওষুধপত্র বা অন্য খরচ বাদেই এক একটি কেমোর খরচ ৩০ হাজার টাকার বেশি হচ্ছে।
তিনি জানান, গত দুই বছরে তার ১৬ লাখ খরচ হয়ে গেছে। সামনে আর কত লাগবে কে জানে? পাশেই বসা কান্নাজড়িত কণ্ঠে স্ত্রী রুমা আকতার বলেন, জমিজমা যা ছিল সবই শেষ। এখন আমার সংসার চালানো অনেক কষ্ট হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে ৪ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এখন টাকার অভাবে স্বামীর চিকিৎসা করাতে পারছি না। সমিতির কিস্তির টাকার দিতে হয়। সেটিও দিতে না পারায় ঘরেও ঠিকমতো থাকতে পারি না। দুই সন্তানের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। একটা পোলারে কাজে দিয়েছি। তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে তা ভাবতেই পারছি না।

বিএসএমএমইউতে কেমোথেরাপি দিতে আসা ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, একসময় স্বামীর ছোটখাটো ব্যবসা ছিল। তখন মোটামুটি সচ্ছল জীবনযাপন করেছি। কিন্তু ক্যানসারে আমার সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। প্রথমে ক্যানসার নির্ণয় করতেই খরচ হয়ে গেছে ৫ লাখ টাকা। কমপক্ষে ১০টি হাসপাতাল ঘুরেছি কিন্তু কোথাও ধরা পড়েনি। পরে ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে ধরে পড়ে। সেখানে ১৫ দিন ভর্তি হয়ে সার্জারি করতে হয়েছে। ওই ১৫ দিনেই আমার সাড়ে ৬ লাখ টাকা খরচ হয়। পরে টাকা না থাকায় বাধ্য হয়ে এখানে আসি। এখানে খরচ কম হলেও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।

তিনি জানান, টাকার জন্য বেশ কয়েক মাস কেমো নিতে পারি না। ওষুধ খাওয়া তো দূরের কথা ছোট দুই সন্তানের খাবার জোগাতেই মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করতে হচ্ছে আমাকে। আর সামনের দিনে কীভাবে কেমোথেরাপি দেব আর ওষুধের খরচ কীভাবে জোগাড় হবে সেই চিন্তায় আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছি।

শুধু এই দুই রোগী নয়, বিএসএমএমইউ, ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং বেসরকারি বেশ কয়েকটি হাসপাতালে ক্যানসারতে আক্রান্ত চিকিৎসা নেওয়া অন্তত ২০ জন রোগী ও তাদের স্বজনরাও ব্যয় মেটাতে গিয়ে ফতুর হওয়ার কথা জানিয়েছেন। ক্যানসার চিকিৎসায় তাদের কারও খরচ ১০ লাখ টাকা, কারও ১৫ লাখ। আবার বেসরকারি হাসপাতালে গেলে ২০ লাখ টাকার ওপরে।

খুব অসহায় কণ্ঠে এক রোগীর স্বজনরা বলছিলেন, ক্যানসার হলে ১০ লাখ টাকা খরচ। টাকার ব্যবস্থা করার সামর্থ্য তাদের নেই। দরিদ্র সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি এখন ঘরে পড়ে আছে। চিকিৎসা ব্যয়ের জন্য অনেকে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। আবার কারও কারও মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বিনা চিকিৎসায় তাদের ধুঁকে ধুঁকে মরতে হচ্ছে। এ ছাড়াও সময়মতো হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা পাওয়ার জন্যও তাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। সময়মতো সিরিয়াল পাওয়া যায় না। আবারও এলে কয়েক দিন পর আসতে বলে। চিকিৎসকরা ঠিকমতো কথা শোনেন না। বেসরকারিতে গেলে টাকাও অনেক খরচ হয়। ফলে নিশ্চিত মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই তাদের।

এদিকে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে বার্ষিক ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে ৭৫ শতাংশের বেশি, অনুমান করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ডব্লিউএইচওর ক্যানসার বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের (আইএআরসি) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০৫০ সালে গিয়ে বার্ষিক নতুন আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৩ কোটি ৫০ লাখ। ক্যানসারে আক্রান্ত ও মৃত্যু বৃদ্ধির নেপথ্যে অসমতার ভূমিকার কথাও বলেছেন তারা। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

আইএআরসির তথ্য অনুযায়ী ২০১২ সালে নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিল ১ কোটি ৪১ লাখ মানুষ, মৃত্যু হয়েছিল ৮২ লাখ। এক দশক পরে ২০২২ সালে এসে ক্যানসারে আক্রান্ত হয় ২ কোটি মানুষ। মৃত্যু হয় ৯৭ লাখ। আইএআরসি অনুমান করছে, ২০৫০ সালে ৩ কোটি ৫০ লাখ মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হতে পারে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৭৭ শতাংশ বেশি। ২০৫০ সালে ক্যানসারে মৃত্যু হবে ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ, ২০১২ সালের তুলনায় যা দ্বিগুণেরও বেশি। 

আইএআরসি বলছে, তামাকের ব্যবহার, অ্যালকোহল বেচাবিক্রি আর স্থূলতা ক্যানসার বৃদ্ধির প্রধানতম কারণ। তাদের অনুমান ২০৫০ সালে যে ৩ কোটি ৫০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হবে, তাদের মধ্যে উন্নত দেশের আক্রান্ত হবে কেবল ৪৮ লাখ মানুষ। তবে স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে আক্রান্তের সংখ্যা মারাত্মকভাবে বাড়বে বলে তাদের অনুমান। ওই দেশগুলোতে ক্যানসারে মৃত্যু দ্বিগুণ হবে বলে ধারণা করছে আইএআরসি। আইএআরসির ক্যানসার সারভেইলেন্স ব্রাঞ্চের শীর্ষ ব্যক্তি ড. ফ্রেডি ব্রে মনে করছেন, দেশে দেশে মৃত্যু বৃদ্ধির ব্যাপারটা ঘটবে এমন না। তারাই বেশি ভুক্তভোগী হবে, যাদের এই রোগ মোকাবিলার আর্থিক সামর্থ্য নেই। 

বিশ্বের ১৮৫টি দেশের ৩৬ ধরনের ক্যানসার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আইএআরসির গ্লোবাল ক্যান্সার অবজারভেটরি। তারা বলছে, ২০২২ সালে বিশ্বে যত মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছে এবং যতজনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে দুই- তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী ১০ রকমের ক্যানসার। 

২০২২ সালে নতুন আক্রান্তের ১২.৪ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে ফুসফুসের ক্যানসারে। এই বছরের ১৮ শতাংশ মৃত্যু ঘটেছে ওই ক্যানসারে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১.৬ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে স্তন ক্যানসারে। এই ক্যানসারে মৃত্যু হয়েছে ৭ শতাংশের। এ ছাড়া লিভার ও পাকস্থলীর ক্যানসারেও বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। 
ক্যানসার বৃদ্ধিতে অসমতার ভূমিকার কথা তুলে এনেছে আইএআরসি। দেখিয়েছে স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে ধনী দেশের তুলনায় দরিদ্র দেশে চিকিৎসা নেওয়ার হার ৫০ শতাংশ কম। সে কারণে মৃত্যু বেশি। সাব সাহারান আফ্রিকার দেশগুলোতে নিরাময়যোগ্য ক্যানসারেও বহু মানুষের মৃত্যুর কথা তুলে এনেছে তারা। 

ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কন্ট্রোলের প্রধান ড. ক্যারি অ্যাডামস দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, মানুষের জীবনকে মানুষের জীবন হিসেবেই বিবেচনা করা উচিত। তার মতে ক্যানসার সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার হিসেবে নেওয়া উচিত সরকারগুলোর। প্রত্যেকের জন্য মানসম্মত ও সাশ্রয়ী ক্যানসার সুরক্ষা নিশ্চিতের ব্যবস্থা করতে হবে। এটা রাজনৈতিক ইচ্ছার প্রশ্ন।

এমন পরস্থিতিতে দেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদিকে অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং অন্যদিকে দীর্ঘ মেয়াদে অনেক ব্যয়বহুল। কারণ ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় হরমোন থেরাপি থেকে শুরু করে রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি এবং অনেক ওষুধের প্রয়োজন হয়। আবার প্রতিটি ধাপেই বড় অঙ্কের টাকা খরচ হয়। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে দেশের মানুষের একটি বড় অংশ সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছে। আবার রোগীরা খরচ বহন করতে গিয়ে যেমন নিঃস্ব হচ্ছে তেমনি চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। 

তারা বলছেন, ফুসফুস, শ্বাসতন্ত্র এবং মুখের ক্যানসারসহ অন্তত ১২ ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এ ছাড়া খাদ্যে ভেজাল, খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, মদ্যপান করা, স্থূলতা, তামাক (পান, জর্দা, সুপারি খাওয়া) ব্যবহারজনিত ব্যবহারে ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। পরোক্ষ ধূমপানেও ক্যানসার হতে পারে। তাই ক্যানসার প্রতিরোধে সতেচনতার পাশাপাশি স্ক্রিনিংয়ের ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে দেশে সরকারিভাবে ২২টি সেন্টারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে আরও ১০টি সেন্টার ক্যানসারের চিকিৎসা দিচ্ছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারিভাবে ২২টি চিকিৎসাকেন্দ্র থাকলেও অধিকাংশেরই নষ্ট যন্ত্রাদি, পর্যাপ্ত পদ না থাকা, যেসব পদ আছে সেগুলোতেও লোকবলের ঘাটতিসহ নানা সংকট ও জটিলতা রয়েছে।

রাজধানীর জাতীয় ক্যানসার হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, এখানে চিকিৎসা নিতে আসা বেশিরভাগ রোগীই নিম্ন আয়ের পরিবারের নারী এবং পুরুষ। কাক্সিক্ষত শয্যা না পেয়ে হাসপাতালের বারান্দা থেকে শুরু করে করিডোর পর্যন্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রোগীরা সেবা নিচ্ছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ বিভিন্ন কেমোথেরাপির দেওয়া পর্যন্ত রোগীদের উপচেপড়া ভিড়। আবার কেউ কেউ শয্যা না পেয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চলে যাচ্ছে।
এদিকে শুধু বেসরকারি হাসপাতালে নয়, সরকারি হাসপাতালেও রোগীরা খরচ বহন করতে না পেরে অনেকেই মাঝপথে চিকিৎসা ছেড়ে দিচ্ছে। 

ক্যানসার চিকিসার অতিরিক্ত ব্যয় প্রসঙ্গে ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যানসার ইপিডেমোলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন সময়ের আলোকে বলেন, ক্যানসার হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা আবার ওষুধের দাম খুব বেশি। আর সরকারি হাসপাতালে কম, কিন্তু রোগীদের সিরিয়াল পাওয়াসহ নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আর বেসরকারি হাসপাতালে সার্জারিসহ মাত্রাহীন খরচ। কিন্তু সরকারি ব্যবস্থপনা ত্রুটির কারণে ক্যানসার ইনস্টিটিউটের মতো প্রতিষ্ঠানেও ৬টি মেশিনের মধ্যে ২টি কোনোরকমে চালু আছে। ফলে বাধ্য হয়ে রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালে চলে যাচ্ছে এবং খরচও বেশি হচ্ছে। 

তিনি বলেন, আমাদের সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার অভাব রয়েছে। বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনায় দেখা যাচ্ছে অনেক গাফিলতি থাকে, তা দূর করতে হবে। এ ছাড়া জেলায় পর্যায়ে ক্যানসার হাসপাতাল তৈরি করতে হবে। যাতে মানুষ নিজ এলাকায় সেবা নিতে পাওে, তা হলে খরচ আরও কমবে। 

ক্যানসার সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক সময়ের আলোকে বলেন, আমাদের দেশে রোগী বেশি কিন্তু তুলনায় চিকিৎসকসহ নানা ধরনের সক্ষমতায় অনেক ঘাটতি রয়েছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও একটি বড় সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য একটা মেশিন দরকার। সে হিসেবে আমাদের ১৬ কোটি মানুষের জন্য ১৬০টা মেশিন থাকা দরকার। আর চিকিৎসাসেবা সহজ করতে প্রয়োজন ২০০টি মেশিন। তবে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বাংলাদেশে আছে মাত্র ২০টি মেশিন। এর অর্ধেকের বেশি আবার নষ্ট। ফলে রোগীরা কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছে না এবং ক্যানসার রোগীর মৃত্যু বেশি হচ্ছে।

দেশে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে উল্লেখ করে বিএসএমএমইউর অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান নাজির উদ্দিন মোল্লাহ সময়ের আলোকে বলেন. খাদ্যে ভেজাল, খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, মদ্যপান করা, তামাক (পান, জর্দা, সুপারি খাওয়া) খাওয়া-দাওয়ার সমস্যার কারণে আমাদের পরিপাক তন্ত্রের ক্যানসার, কিডনি ক্যানসার এসব বেড়ে যাচ্ছে। আর কিছু ক্যানসার হয়ে থাকে জেনেটিক কারণে।
ওষুধের ব্যয় প্রসঙ্গে বলেন, ভারতে কাঁচামাল, ওষুধ নিজেরা উৎপাদন করে। আর জনগুরুত্বপূর্ণ হলে সেটি সরকার কিনে নিয়ে কম দামে মার্কেটে ছেড়ে দেয়। এর মাঝে ক্যানসারের ওষুধ একটি। এর কারণে যেটি আমাদের দেশে ১০ হাজার টাকা ভারতে সেটা ১ হাজার টাকায়ই পাওয়া যায়। এ চিকিৎসায় সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে। আগে বিএসএমএমইউতে কিছু ওষুধ ফ্রি দিত চাহিদা অনুযায়ী। আমরা গরিব রোগীদের ফ্রিতে দিতে পারতাম। প্রধানমন্ত্রীর একটি তহবিল আছে সেখান থেকে কিছু রোগীকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। সমাজকল্যাণ অফিস থেকে এলে সে ক্ষেত্রে কিছু পেয়ে থাকে। তবে এসব অপ্রতুল। ২০ লাখ রোগীর জন্য এটি একেবারেই কম।

সময়ের আলো/আরএস/





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close