ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নিষেধাঙ্গা সাইনের নিচেই ময়লার ভাগাড়, দেখার নেই কেউ
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৫:১৯ পিএম  (ভিজিট : ৯২৮)
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সুতিয়া নদীরপাড় ঘেঁষে ফেলা হচ্ছে ত্রিশাল পৌরসভার ময়লা। পশুরা সেই ময়লা আছড়ে ফেলছে মহাসড়কের উপর। বন্ধ হয়ে গিয়েছে পায়ে হেটে চলার রাস্তা। সৃষ্টি হয়েছে দুর্গন্ধ। পাশেই একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করছে হাজারো কোমল মতি শিক্ষার্থী। ভরাট হচ্ছে নদী।

প্রায় একযুগ ধরে ত্রিশাল পৌরসভার নওধার এলাকায় সুতিয়া নদীর ধারে গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার পাহাড়। পৌর এলাকার এই ময়লার নিদিষ্ট কোন স্থান বা ডাম্পিং ব্যবস্থা না থাকার ফলে দুর্গন্ধে এ এলাকায় থাকা গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল, স্কুল, মাদ্রাসা ও শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়তই। পৌর কর্তৃপক্ষের এ নিয়ে নেই কোন মাথা ব্যথা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, ত্রিশালের পৌর কর্তৃপক্ষই প্রতিদিন মহাসড়কের পাশে নদীর ধারে বর্জ্য ফেলছে। সেই বর্জ্যের উপরই সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) নিষেধাজ্ঞা সাইনবোর্ড ঝুলছে ময়লা না ফেলার জন্য। সেই নিষেধাজ্ঞা সাইনবোর্ডের নিচেই প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে ময়লা। ত্রিশাল বাজার থেকে নওধার হয়ে যে রাস্তাটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মিশেছে, সেই স্থানেই এই ময়লার স্তূপ। ময়লার দুর্গন্ধে দুটি রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী লোকজনকে রুমাল বা কাপড়ে মুখ চেপে চলাচল করতে হচ্ছে। পাশেই রয়েছে উপজেলা হাসপাতাল ও একটি বড় মাদ্রাসা যেখানে রয়েছে রোগীসহ শতশত শিক্ষার্থী। এখানে ফেলা ময়লাগুলো আবার নদীর পানির সঙ্গে মিশে পানিকেও দূষিত করছে। পাশাপাশি কঠিন বর্জ্য নদীতে পড়ছে বলে নদীও ভরাট হচ্ছে ক্রমেই।

স্থানীয় নওধার এলাকার আজিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার ময়লা এখানে ফেলা হচ্ছে। ময়লাগুলো নদীর ধারে এবং রাস্তার কিনারে ফেলার কারণে পানি ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এখানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শতশত রোগী ও বড় একটি মাদ্রাসা রয়েছে। আশপাশের লোকজনকে মুখে হাত চেপে বা রুমাল ব্যবহার করে চলাচল করতে হচ্ছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) ময়লা ফেলতে নিষেধ করে তাদের পক্ষ থেকে একটি সাইনবোর্ড টানানো আছে। কিন্তু সাইনবোর্ড হঠাৎ যেন কোথায় উধাও হয়ে যায়। এখন সওজ আবারও সাইনবোর্ড দিয়েছে ওই টার নিচেই ময়লার স্তূপ। অনেকবার পৌর কর্তৃপক্ষকে বলার পরও নেই কোন কার্যকর ব্যবস্থা।

স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী আরিফা সাদাত জাহান বলেন, আমি এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন নজরুল সেনা স্কুলে যাই। এ ময়লার দুর্গন্ধ অনেক খারাপ লাগে। এখানে এসেই নাক চেপে রাস্তা পাড় হই। আর গরু ময়লা খাচ্ছে আর সড়কে ছেটাচ্ছে। এতে হেটে যাওয়াও কষ্টকর।

পৌর ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আওলাদুল ফরহাদ বলেন, বিধি নিষেধ স্বত্বেও অনেকদিন ধরেই পৌরসভার বর্জ্য এখানে ফেলা হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে দুর্গন্ধের কারণে সকলের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। লোকালয় থেকে দূরে কোথাও এই ময়লা পরিবেশসম্মত উপায়ে সংরক্ষণ করা উচিত। সম্ভব হলে এগুলোকে রিসাইকেল করে জৈব শক্তিতে রূপান্তর করা যেতে পারে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকী বলেন, আমরা বুঝে না বুঝেই এভাবে যত্রতত্র ময়লা, আবর্জনা ফেলছি। এভাবে ময়লা, আবর্জনা ফেলে আমরা পরিবেশকে মারাত্মকভাবে দূষিত করছি। অথচ পরিবেশসম্মত উপায়ে লোকালয় থেকে দূরে এগুলো সংরক্ষণ করে এবং পূর্ণ ব্যবহারযোগ্য করে দূষণ কমানো সম্ভব। সুস্থ ও সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে আমাদের সচেতন হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। আমরা অনেক শিক্ষিত ও ধনী হচ্ছি কিন্তু সচেতন হচ্ছি না।

ত্রিশাল পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা নওশীন আহমেদ বলেন, পৌরসভার বর্জ্য ফেলার জন্য এখনো নির্দিষ্ট কোনো ডাম্পিং স্টেশনের জন্য জায়গা করতে পারিনি। নিদিষ্ট জায়গা হলেই ঐখানেই ময়লা ফেলা হবে।

ত্রিশাল পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মানিক সাইফুল বলেন, পৌর এলাকার বর্জ্য ফেলার জন্য পৌরসভার নিদিষ্ট কোন ডার্ম্পিং স্টেশন নেই। মহাসড়কের পাশে খালি জায়গায় বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। বর্জ্য মহাসড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলে তা লেবার পাঠিয়ে পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করছি। নিদিষ্ট স্টেশনের জন্য জায়গা হলেই সকল বর্জ্য ঐখানেই ফেলা হবে।  

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  ত্রিশাল পৌরসভা   ময়লার ভাগাড়   দুর্ভোগে মানুষ  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close