ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

মিয়ানমারে সংঘাত
তুমব্রু সীমান্তে ফের প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ
পরিস্থিতি খারাপ হলে আবারও বন্ধ রাখা হবে বিদ্যালয়
প্রকাশ: বুধবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪, ৫:২৫ এএম  (ভিজিট : ৫০৬)
মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মি এবং আরএসও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর চলমান সংঘাত এক দিন বন্ধ ছিল। সীমান্ত পরিস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, তুমব্রু সীমান্তে আবারও প্রচণ্ড গোলাবারুদ বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গেছে। আতঙ্ক বিরাজ করছে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত স্থানীয়দের মধ্যে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুমধুম সীমান্তের কাছে কোনো প্রকার গোলাবারুদ বা মর্টারশেলের শব্দ শোনা যায়নি। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে আবারও থেমে থেমে গোলাবারুদের শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে তা সীমান্ত থেকে দুইণ্ডতিন কিলোমিটার দূরে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে মর্টারশেল ও গোলা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। ঘুমধুম সীমান্তবর্তী পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান সোমবার বন্ধ রাখা হলেও মঙ্গলবার পাঠদান শুরু হয়। পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি কঠোর নজরদারিসহ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি খারাপ হলে প্রয়োজনে আবারও বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হবে। এ ছাড়া পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রধান শিক্ষকরাও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এটি শিক্ষকদের বলা হয়েছে।

সীমান্তে বসবাসরত স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সীমান্তের কাছাকাছি সংঘাত না হলেও মিয়ানমারের ভেতরে সংঘাত তীব্র হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্রোহী আরাকান আর্মি ক্রমাগত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যাওয়ায় দেশটির সেনাবাহিনী পেছনে সরে যাচ্ছে। সীমান্ত থেকে সাতণ্ডআট কিলোমিটার ভেতরে সংঘর্ষ হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা। বিজিবির পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান জানান, মিয়ানমারণ্ডবাংলাদেশ সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।
মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির এ সংঘর্ষ শুরু হয় দেড় বছর আগে। ২০২২ সালে জুলাই থেকে শুরু হয়ে টানা ছয় মাস যুদ্ধ চলে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে। এরপর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত থাকলেও সম্প্রতি আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উদ্বেগ, প্রত্যাবাসনে ছন্দপতন : মিয়ানমারের অভ্যন্তরে নতুন করে সংঘাতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কক্সবাজারে উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। তাদের দাবি, মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা সরকারের সংঘাতের কারণে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন হতে পারে। এতে ফের বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। একই সঙ্গে প্রত্যাবাসন বাধাগ্রস্ত হবে।
উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, মিয়ানমারের মংডু ও আকিয়ার শহরের আশপাশের গ্রামে এখনও চারণ্ডপাঁচ লাখ রোহিঙ্গা আছে। বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর সেখানে জান্তা বাহিনী বোমাবর্ষণ, নির্যাতন করছে। এতে অনেকেই হতাহত হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা অনেকেই গ্রাম ছেড়ে পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়ার খবর আসছে।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবাইর বলেন, মিয়ানমার আমাদের একবার গণহত্যা চালিয়ে দেশ ছাড়া করেছে। তখন বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছে। মিয়ানমার আমাদের দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছে না। তারপরও বাংলাদেশ চীনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে।

রাখাইনে সংঘাতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ থমকে আছে বলে মনে করছেন কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা অনেক এগিয়ে গিয়েছিল। তার ছন্দপতন হয়েছে। সংঘাত হয়তো দীর্ঘমেয়াদি হবে না। আশা করি পরে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের একটি আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর জন্য প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে, যেন কোনোভাবেই নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ না ঘটে।

সময়ের আলো/আরএস/ 














https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close