ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

২০০ বছরের ঐতিহ্য ভাসমান বেডে সবজি চাষে অনন্য বরিশাল
প্রকাশ: সোমবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪, ১০:১০ পিএম  (ভিজিট : ৭৮২)
ডিজিটাল বাংলাদেশের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার প্রান্তিক কৃষকদের স্বনির্ভর করছে। যে জলাভূমিতে ময়লা কচুরিপানা কিংবা পরিত্যক্ত ছিলো সেই জমিকে ব্যবহারযোগ্য করতে এবং কৃষির বিপ্লব ঘটাতে ভাসমান বেডে সবজি চাষ অনন্য উদাহরণ। আর বরিশাল আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে দক্ষিণাঞ্চলের যেসব জলাভূমি আছে তার মাঝে চাষাবাদে কৃষকদের হাতে কলমে শিক্ষা দিচ্ছে।

বরিশাল রহমতপুরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে গেলে তার সচিত্র দেখতে পাবেন পুকুরে। পানিতে সারি সারি বেডে ভাসছে নানা জাতের সবজি ও মসলার বেড। দক্ষিণাঞ্চলে সনাতন পদ্ধতিতে বছরের পর বছর এই ভাসমান বেডে চাষ পদ্ধতিকে আরও আধুনিক রূপ দিয়ে তা কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রটি। সাথে অন্যান্যদের উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এরই মাঝে এই আধুনিক প্রযুক্তিগত কৃষকের মাঝে বেশ সারা ফেলেছে। তাই দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষকরা। টমেটো, পাতা কপি, ফুল কপি, লাউ, করল্লা ও মিষ্টি আলু থেকে শুরু করে মসলা জাতীয় কাঁচামরিচ, পিয়াজ, রসুন আদাসব কিছুই চাষ হচ্ছে ভাসমান বেডে। সহজেই বছরে ১২ মাস চাষ করা যায় এই বেডে। বেড তৈরি থেকে শুরু করে গাছের চারা রোপণ করার উপায় বলছেন এই কৃষক।

কৃষক মো. আল আমিন বলেন, প্লাস্টিকের ৬ ইঞ্চির পাইপের দুই মাথা বেঁধে তার সাথে বাঁশের চেড়া বেঁধে নেট দিয়ে কচুরিপানা রেখে বেড তৈরি করেন। এই বেড দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়। মাটিতে যত ধরনের সবজি চাষ করা যায় তা এই ভাসমান বেডে চাষ করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

বরিশালের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় আমরা ভাসমান কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ভাসমান কৃষির মাধ্যমে বাংলাদেশে ৫ ভাগের এক ভাগই জলজ যায়গা। সেই জলজ যায়গাকে আমরা কাজে লাগাতে পারি মসলা ও সবজি উৎপাদনে আমরা এগিয়ে যাবো। দক্ষিণাঞ্চলের ২০০ বছরের ঐতিহ্য ভাসমান বেডে সবজি চাষকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছে এই প্রকল্প পরিচালক।
 
প্রযুক্তিগুলো সফল হওয়ায় কৃষকের মাঝে বেশ সারা ফেলেছে বলে জানিয়েছে বরিশালের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বিমল চন্দ্র কুন্ডু। তিনি বলেন, ২০০ বছরের ঐতিহ্য। আগে এভাবে চারা উৎপাদন করা হতো। সেটিকে আমরা উন্নত করে এখন সবজির চাষ করছি। এভাবে মিষ্টি কুমড়া, শসা, লাউসহ বিভিন্ন সবজি ব্যাপক ভাবে উৎপাদন করা যায়। এর মাধ্যমে আমরা যেমন মাছ পাচ্ছি পাশাপাশি শাকসবজিও পাচ্ছি।

উল্লেখ্য, দেশের ২০ হাজার হেক্টর জলা ভূমিতে কোন আবাদ হয়না। ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ, গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ জনপ্রিয় করনে এরই মধ্যে ১৮শ হেক্টর জলাভূমি ভাসমান বেডের চাষের আওতায় এসেছে। এছাড়া জলমগ্ন ও অর্ধ জলমগ্ন ৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে আগামীতে ২০ হাজার হেক্টর জলমগ্ন জমিতে চাষাবাদ করার আশা ব্যক্ত করেছে কৃষি বিভাগ।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  ভাসমান বেডে সবজি চাষ   আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি   বরিশাল  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close