ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচন
একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী আওয়ামী লীগে
প্রকাশ: রবিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪, ২:৪৭ এএম  (ভিজিট : ২৫৬)
৯ মার্চ ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক) ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। গত বুধবার তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সিটি নির্বাচন নিয়ে সরব হয়ে উঠেছেন সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। তারা নিজেদের জানান দিচ্ছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। মেয়র পদে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার পোস্টার চোখে পড়ে ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে। ওইসব পোস্টারে ময়মনসিংহ নগরের বিভিন্ন নাগরিক দুর্ভোগ লাঘবের ঘোষণা রয়েছে। ভোটের আগে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের বড় চ্যালেঞ্জ দলীয় মনোনয়ন। গুঞ্জন রয়েছে দলের মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রে লবিং করছেন অনেকেই। এখন পর্যন্ত জানা যায় মেয়র পদে নিজেদের মনোনয়ন চাওয়ার কথা জানান দিয়েছেন আওয়ামী লীগের ৪ জন। আর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতারা। এবারও নির্বাচনের বাইরে রয়েছে বিএনপি। দ্বিতীয়বারের মতো ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ ভোটারদের মধ্যে উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে।

২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করে ময়মনসিংহকে পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। ২২ বর্গকিলোমিটারের পৌরসভাকে চারগুণের বেশি বর্ধিত সীমানা নিয়ে ৯১.৩১৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সিটি করপোরেশন গঠন করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের ৫ মে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়। নির্বাচনে বিএনপির কয়েকজন কাউন্সিলর পদে অংশগ্রহণ করলেও মেয়র পদে আসেননি কেউ। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আহমেদ দলীয় সিদ্ধান্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. ইকরামুল হক টিটু। মেয়র পদে ভোট না হলেও ১২৭টি কেন্দ্রে ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১১টি সংরক্ষিত আসনে নির্বাচন হয়েছিল। সব কয়টিতেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হয়।

বিভিন্ন সূত্রে এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আসন্ন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন-মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাদেক খান মিল্কি টজু এবং প্রয়াত পৌর মেয়র মাহমুদ আল নূর তারেকের ছেলে অ্যাডভোকেট ফারমার্জ আল নূর রাজীব। 

সিটি মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ৪০ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। যেহেতু মেয়র পদের পাশাপাশি কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এই তিনটি স্তরে নির্বাচন হবে সেহেতু স্বাভাবিক অর্থেই ভোটাররা আরও বেশি উপস্থিত হবেন এবং উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে বলে আমরা মনে করি। স্থানীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভোটাররা যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের পছন্দমাফিক প্রার্থী নির্বাচন করেন সে বিষয়ে আমাদের দলের পক্ষ থেকেও নাগরিকবৃন্দকে উদ্বুদ্ধ করা হবে। 

মেয়র টিটু বলেন, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর নগর উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। বৃহৎ পরিকল্পনা নিয়ে নগরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের কাজ শুরু করি। কিন্তু বৈশ্বিক সংকট আর করোনা মহামারির কারণে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অনেকাংশে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছেন, যার ফলে বহু প্রতিকূলতা পেরিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী নগরীর অনেক উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি। নগরের বিভিন্ন রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ এখনও চলমান রয়েছে। আমি আশাবাদী দল আমাকে আবারও মনোনয়ন দিয়ে ময়মনসিংহবাসীর সেবা করার সুযোগ দেবে। নির্বাচিত হতে পারলে নগর উন্নয়নের অসমাপ্ত যে কাজগুলো রয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করে একটি স্মার্ট, সমৃদ্ধ এবং আধুনিক ময়মনসিংহ গড়ে তুলব।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম বলেন, নগরবাসী আমার কাছে সেবা প্রত্যাশা করে, আমি তাদের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে নগরীর উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ দেবেন বলে আশা করি।

সাদেক খান মিল্কি টজু ময়মনসিংহ নগরীকে অপরিচ্ছন্ন, নোংরা, ধুলাবালিযুক্ত ও অপরিকল্পিত শহর উল্লেখ করে বলেন, নগরজুড়ে অপরিকল্পিতভাবে শত শত আকাশছোঁয়া ভবন হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যানজটে নাকাল ময়মনসিংহ শহর এখন বিশ্বের ৯ নম্বর ধীরগতির শহরে স্থান পেয়েছে। আমি সুযোগ পেলে এই শহরকে পরিকল্পিত ধুলাবালিমুক্ত, পরিচ্ছন্ন ও স্মার্ট নগরী হিসেবে গড়তে চাই।

প্রয়াত পৌর মেয়র মাহমুদ আল নূর তারেকের ছেলে অ্যাডভোকেট ফারমার্জ আল নূর রাজীব মনোনয়ন প্রত্যাশায় প্রচার চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে নগরের বিভিন্ন দেয়ালে শুভেচ্ছা জানিয়ে রঙিন পোস্টার লাগিয়েছেন। 
তিনি বলেন, আমার বাবা এই পৌরসভার দুবার চেয়ারম্যান ও মেয়র ছিলেন। তিনি মেয়র থাকা অবস্থায় ২০০৯ সালের ২৩ এপ্রিল মারা যান। এই শহরকে নিয়ে বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন। সে স্বপ্ন পূরণে এই শহরের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। বিশ্বের ৯ নম্বর ধীরগতির শহর থেকে মুক্ত করে আধুনিক এবং স্মার্ট নগর গড়তে চাই। গত সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলাম, তখন প্রধানমন্ত্রী পরে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতারা। মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি জাহাঙ্গীর আহমেদ বলেন, গত সিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ছিলাম। দলীয় সিদ্ধান্তে পর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি। এই নির্বাচনে এখন পর্যন্ত কেন্দ্র থেকে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত আমরা পাইনি। তবে ৪-৫ দিনের মধ্যে যেকোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আমরা মনে করি।

নগরের বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নগরের যেকোনো আড্ডায় নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠে আসছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের যোগ্যতা-অযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার বদরুল আলম বলেন, নগরের উন্নয়নের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হওয়া জরুরি। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন হওয়ার পর থেকে এখনও কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি। মানুষ চায় উন্নয়ন এবং সব ধরনের নাগরিক সুবিধাপূর্ণ নগর। এ জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হওয়া উচিত।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close