প্রকাশ: শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪, ১০:৩৭ পিএম (ভিজিট : ৬৮৮)
নওগাঁয় মজুদবিরোধী অভিযানে ধানের দাম কিছুটা কমার পর আবারও ধানের দাম বেড়েছে। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতিমণে দাম বেড়েছে ২০-৩০ টাকা। কৃষকদের ঘরে এখন ধান না থাকায় দাম বাড়লেও ব্যবসায়ীরা বলছেন বড় বড় গ্রুপ ব্যবসায়ীদের কারণে ধানের দাম বাড়ে। এদিকে ধানের দাম বাড়ায় বেড়েছে চালের দামও।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। যা থেকে ৯ লাখ ৭ হাজার ৫২৫ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়।
কৃষকদের কাছ থেকে ধান চলে যাচ্ছে ব্যবসায়ী ও মিলমালিকদের কাছে। প্রান্তিক কৃষকদের ঘরে এখন ধান নেই বললেই চলে। তবে জোতদার কৃষকদের ঘরে কিছুটা ধান আছে। এ কারণে মিলমালিকরা ইচ্ছেমত ধানের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ছিল জেলার মহাদেবপুর উপজেলার সরস্বতীপুর হাট। ভোর থেকে এ হাটে ধান বেচাকেনা শুরু হয়। হাটে ধানের সরবরাহ কমায় গত ৭ দিনের ব্যবধানে প্রতিমণে দাম বেড়েছে ২০-৩০ টাকা। স্বর্ণা-৫ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২২০ টাকা থেকে ১ হাজার ২৩০ টাকা, ব্রিআর ৪৯ জাত ১ হাজার ২০০ টাকা মণ। এছাড়া সুগন্ধি আতব জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা মণ।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) চকগৌরি হাট আবারও ধানের দাম বাড়তে শুরু করেছে। অভিযানের পর জেলায় গেল এক সপ্তাহে প্রতিমন ধানের দাম ৫০-৬০ টাকা কমেছিল। তবে বৃহস্পতিবার প্রকারভেদে মণে ২০ টাকা থেকে ৮০ টাকা দাম বেড়েছে। তবে আতব ধানের দাম কমেছে মণে ২০০ টাকা। স্বর্না-৫ ধান ২০ টাকা বেড়ে ১২০০-১২২০ টাকা, ব্রিআর ৪৯ ধান ৭০-৮০ টাকা বেড়ে ১২৭০-১২৮০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। অভিযানে দাম কমার পরে আবারোও আতপ ধান বিক্রি হচ্ছে ২৪-২৫শ টাকা মণ দরে।
বিশিষ্ট ধান ব্যবসায়ী শাহাজ্জামান বলেন, ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে বড় বড় গ্রুপ কোম্পানিগুলো। তাদের বেধে দেওয়া দামে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা ধান কিনে থাকেন। ধান বাজারে আসার পূর্বে তারা বেধে দেন ধানের দর। সেই দামের সাথে তাদের লাভের অংশ যোগ করে তারা ধান ক্রয় করেন।
ধান ব্যবসায়ী সুইট হোসেন বলেন, কৃষকদের ঘরে ধানের পরিমাণ কমায় হাটের সরবরাহ কমেছে। এ কারণে মণে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। হাটে যে পরিমাণ ধান আসছে ব্যবসায়ী বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
ধান ব্যবসায়ী রাশেদুজ্জামান জামান চৌধুরী বলেন, ধানের দাম বাড়ার দুইটি কারণ। ধানের দাম বাড়ার মূল কারণ হচ্ছে এখন সাধারণ কৃষকের ঘরে ধান নেই। এই কারণে ধানের দাম বেশী। হাটে ধানের সরবরাহ কম হওয়ার কারণে ধানের দাম বাড়ছে। দ্বিতীয় কারণ হলো যেহেতু এবার ধানের উৎপাদন কম হয়েছে। এই কারণে বড় বড় গ্রুপ কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতা করে বাজারে ধান কেনার কারণে ধানের দাম বাড়ছে।
নওগাঁ চাউলকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, হাটে ধানের সরবরাহ কমেছে। বাড়তি দামে ধান কিনায় খরচ পড়ছে বেশি। এ কারণে চালের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজিতে পাইকারিতে ১-২ টাকা বেড়েছে।
সময়ের আলো/জেডআই