বর্ষার সময় মাছ আর শুষ্ক মৌসুমে জমিতে ভুট্টা আর বোরো ফসল থাকায় খাদ্যের মজুত থাকে বেশ। সেজন্য বছরজুড়ে হাকালুকি হাওরে থাকে দেশি ও অতিথি পাখির আনাগোনা।
তবে শীতের তীব্রতা বাড়ায় প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে নতুন পাখির আগমন নজরে পড়েনি রাজশাহীর পুঠিয়ার বিলগুলোতে,এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শীতের সময়ে বিলগুলোতে পানি থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অতিথি পাখি ভিড় জমায় এই বিলের পানিতে। শীতের শুরু থেকেই অতিথি পাখির আসা শুরু হয়। তবে দুই সপ্তাহ ধরে শীতের তীব্রতা বাড়ায় পাখি আসতে দেখা যাচ্ছে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে এরা এ অঞ্চলের কাছাকাছি কোথাও অবস্থান নিয়েছে।
জানা যায়, পুঠিয়া উপজেলা ৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। ছোট, বড়, মাঝারি মিলিয়ে এখানে বেশ কয়েকটি বিল রয়েছে। শীতকালে আর্মেনিয়া, কিরগিজস্তান, মঙ্গোলিয়া, সাইবেরিয়া, সাইপ্রাসসহ ইউরোপের বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি আসে এখানকার বিলগুলোতে। সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এখানে থেকে ফিরে যায় নিজের দেশে।
কান্তার বিলে গিয়ে দেখা যায়, নানা রঙের পাখির কলকাকলিতে মুখরিত এই বিল। কিছু পাখি মাছ শিকার করছে। অনেক পাখি কুয়াশায় বিভিন্ন জলাশয়ের পানিতে নানা কায়দায় কসরত করছে। বিলগুলোতে এ সময় নিয়মিতভাবে পাখির ঝাঁক নামতে দেখা গেলেও গত কয়েকদিন এমন দৃশ্য চোখে পড়েনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বালিহাঁস, গিরিয়া হাঁস, বক,সাইবেরিয়া,পানিকাউর, হুটুটিটি, ঈগলসহ ১৫-২০ প্রজাতির পাখি এসেছে।
তীরবর্তী উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের রুস্তম আলী জানান, সকাল ও বিকালে পাখি বেশি দেখা যায়। পাখিরা এক জায়গায় দল বেঁধে না থেকে বিচ্ছিন্নভাবে পুরো বিলে ঘুরে বেড়ায়। তবে পাখির ঝাঁক নামার দৃশ্য দেখে বোঝা যায় সেখানে আরও পাখি আসছে কিনা, যা গত কয়েক দিনে নজরে পড়েনি।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, রাজশাহী বিভাগীয় কর্মকর্তা: আহম্মদ নিয়ামুর রহমান বলেন: এলাকায় অতিথি পাখির নিরাপদ আবাস ও খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করতে কাজ করা হয়েছে। পাখি শিকার বন্ধে নেওয়া হয়েছে পদক্ষেপ। পাখিরা ভীত হতে পারে– এমন পরিস্থিতি নেই। এরপরও গত কয়েক দিনে পাখির আগমন চোখে না পড়ায় ধারণা করা হচ্ছে শীতের তীব্রতা বাড়ার কারণেই পাখি আসছে না।
তিনি জানান, পাখির নিরাপদ আবাস নিশ্চিতে কাজের পাশাপাশি শুমারি ও গতিপথ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
সময়ের আলো/এএ/