ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ফের হুমকির মুখে নলেয়া
খননকৃত নদীর পার খাচ্ছে মাটিখেকোরা
প্রকাশ: সোমবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৪, ৫:৩০ এএম  (ভিজিট : ৫৭৪)
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে নলেয়া নদীর অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়লে ২০২১ সালে খনন করা হয়। নদী রক্ষায় খননকৃত সেই নদীর পার কেটেই চলছে মাটি বাণিজ্যের মহোৎসব। নদীর পার থেকে মাটি কাটার পর তা বহন করা হচ্ছে ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টর দিয়ে। ধুলাবালি উড়িয়ে ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টরগুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাস্তায়। এতে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা ও পরিবেশ। এ ছাড়া হারিয়ে যেতে বসেছে নলেয়া নদীর জীববৈচিত্র্য। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, মাটি কাটার অবৈধ বাণিজ্যে মেতেছেন রাব্বী মিয়া নামের এক অসাধু ব্যবসায়ী। সম্প্রতি সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের পূর্ব সীমান্তবর্তী লালমাটির ঘাট ব্রিজ সংলগ্ন ভাতগ্রাম ইউনিয়নের তরফ মহোদী এলাকায় দেখা গেছে নলেয়া নদীর পার কাটার দৃশ্য। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নলেয়া নদীটি দীর্ঘদিন ধরে শাসন না করায় অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ২০২১ সালে উপজেলার বকশীগঞ্জ হাটের উত্তর পাশ থেকে দক্ষিণে লালমাটির ঘাট পর্যন্ত নলেয়া নদী খনন করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। তখন উঁচু ও মজবুত করে নদীর দুই পার তৈরি করায় ফিরে আসে নদীর ভরা যৌবন। কিন্তু সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের তরফ মহোদী গ্রামের আবদুল হামিদ মিয়ার ছেলে রাব্বী মিয়া প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে মাটিবাণিজ্যে মেতে উঠেছেন। লালমাটির ঘাটসংলগ্ন স্থানে ভেকু মেশিন বসিয়ে রাতভর মাটি কেটে ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে ফের হুমকির মুখে পড়েছে নলেয়া নদীর অস্তিত্ব। 

অবশ্য নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে নারাজ মাটি ব্যবসায়ী রাব্বী মিয়া। তার দাবি, কৃষকদের সুবিধার্থেই নলেয়া নদীর পারের পাশে রাখা অতিরিক্ত মাটি অপসারণ করা হচ্ছে। তার কথার সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন কৃষক মিজানুর রহমানও। এ বিষয়ে মিজানুরের ভাষ্য, নদী খননের সময় আমার জমিতে মাটি রাখা হয়েছিল। অতিরিক্ত সেসব মাটি আমি রাব্বী মিয়ার মাধ্যমে অপসারণ করিয়ে নিচ্ছি। 

ভাতগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান বলেন, নদীর পারে থাকা অতিরিক্ত মাটি কৃষক অপসারণ করে নিতে পারবেন। তবে কোনোভাবেই নদীর পার কাটা যাবে না। ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ শুকুর আলী মিয়া বলেন, মাটিবাণিজ্যের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জানার জন্য সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করতে বলেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অবাধে মাটিবাণিজ্য চালিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন মাটিখেকো রাব্বী মিয়া। তার এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে খননের পর যৌবন ফিরে পাওয়া নলেয়া নদীর অস্তিত্ব আবারও হুমকির মুখে পড়েছে। কয়েক বছর আগে নলেয়া নদী খনন করার পর দুষণ রোধ হয়েছিল। নাব্যতাও ফিরেছিল। কিন্তু নদীর দুই পার বিলীন করে মাটিবাণিজ্যে মেতে ওঠায় আবারও নদীটি তার যৌবন হারাতে বসেছে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close