ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

চোরদের কাছে জিম্মি পুঠিয়াবাসি, চুরি হবে কিন্তু বলা যাবে না!
প্রকাশ: শনিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৪, ৮:০০ পিএম আপডেট: ২০.০১.২০২৪ ৮:১৬ পিএম  (ভিজিট : ১১৯০)
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ধোপাপাড়া গ্রামে জানালার সিক (গ্রিল) কেটে এক দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও ওই একই এলাকায় ৫০টির মতো রয়েছে চুরির ঘটনা। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে ভাগিনাকে বিয়ে করাতে বাসা বাড়ি তালা দিয়ে সপরিবারে পাবনার উদ্দেশ্যে যায় ধোবড়াকুল ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. আহসানুল্লাহ। পরে ওই দিনই সন্ধ্যা প্রায় ৭টার সময় ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ আহসানুল্লাহ বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নিজ বাসায় ফিরে আসেন ও দেখতে পায় ভেতর থেকে দরজা আটকে দেওয়া। এবং জানালা আর গ্রিল কাটা। পরে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে দেখা যায় পুরো ঘর এলোমেলো করা। এছাড়াও ওই এলাকায় বিগত দিনে বহুবার চুরির ঘটনা ঘটলেও চোররা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। শুধু অধ্যক্ষ আহসান উল্লাহ বা নাসিরুদ্দিন মাস্টার নয় ওই এলাকায় রয়েছে প্রায় ৫০টির মতো চুরির ঘটনা ঘটেছে। যার কোন কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ।

অধ্যক্ষ মো. আহসানুল্লাহ তিনি ভালুকগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের বোন জামাই।

বাড়ির টাকা-পয়সা ডলার স্বর্ণ গহনা চুরি হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অধ্যক্ষ মো. আহসানউল্লাহ বলেন, আমরা সকালের দিকে বিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায় পরে সন্ধ্যার পরে বাসায় ফিরে দেখি জানালা ভাঙ্গা এবং ঘরের ভিতর থেকে আটকে দেওয়া। পরে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে দেখি সবকিছু এলোমেলো। চুরি হয়েছে আমার বাড়ির কিছু টাকা ও স্বর্ণ গহনা। এছাড়াও আমার বাড়িতে বেড়াতে আসা আমার ভাস্তির স্বর্ণ ও ভাস্তি জামাইয়ের ১ হাজার ২০০ শত ইউএস ডলার ও বিভিন্ন দেশের আরো প্রায় ৫ হাজার বৈদেশিক মুদ্রা ছিল সেগুলো তারা নিয়ে গেছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। দেখি কি হয়। এই এলাকায় বহু চুরি হয় এর কোন ফায়সালা হয় না। আমরা সঠিক বিচার চাই।

ওই এলাকার হাছেনের পিতা হুসেনের বাসায় মাগরিবের আজানের সময় জানালা ভেঙ্গে চুরি হয় ৯৪ হাজার টাকা। একই এলাকার নাসির উদ্দিনের পিতা নওশাদের বাসা থেকে চুরি হয় নগদ টাকা-পয়সা সোনাদানাসহ আরো মূল্যবান জিনিসপত্র। ইদ্রিস আলী পিতা শুকুর প্রামানিকের বাসা থেকে টাকা পয়সাসহ ঘরের সকল জিনিসপত্র চুরি হয়ে যায়। বেল্লালের পিতা ওয়াজের বাসা থেকে জানালা ভেঙ্গে চুরি হয় ৬০ হাজার টাকা। রহমত উল্লাহ রহম পিতা হাচেনের বাসা থেকে জানালা ভেঙ্গে চুরি হয় মোবাইল। জলিল পিতা খোদাবক্স এর বাসা থেকে এনজিও থেকে তোলা ২০ হাজার ৭৩০ টাকা দিনের আলোয় দরজা ভেঙ্গে নিয়ে যায় সেদিন অন্য আরেক বাড়িতেও হয়েছিল চুরি। শুকুর আলীর পিতা সুবীর আলী সন্ধ্যার সময় বাড়ির ভেতর থেকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি নতুন সাইকেল। এছাড়াও ওই এলাকায় ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন আরএফএল কোম্পানির একজন লোক তার বাসা থেকেও চুরি করে নিয়ে যায় অনেক কিছু।

এছাড়াও রয়েছে আরও বহু বাড়িতে ওই এলাকায় চুরির ঘটনা। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো এরা কেউই থানায় অভিযোগ বা জিডি করতে চায় না এসব বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তারা চোরদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। তারা সবাই মনে করছে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে হয়তো পরবর্তীতে আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারে। এ সকল চুরির বিষয়ে কেউই প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছে না। এখন প্রশ্ন হল কেন এতগুলো চুরির ঘটনার পরেও কেউ ভয়ে মুখ খুলছে না কেন?

অন্যদিকে এসব চুরির কোন হদিস করতে পারেনি প্রশাসনসহ কেউই। আর চোররা থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। চলছে প্রতিনিয়ত চুরির মত ঘটনা যেন দেখার কেউ নেই।

এসব চুরির বিষয়ে নাম প্রকাশে একাধিক ব্যক্তিরা বলছেন, মাদকাসক্ত ও প্রভাবশালী হওয়ায় ওই সকল চোরদের বিরুদ্ধে কেউই মুখ খুলতে চায় না। এর আগে বেশ কয়েকবার ধোপাপাড়া বাজারেও চুরির ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে মোবাইল সামগ্রী এক ব্যবসায়ীর টিনের চালা কেটে, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনসহ আরো মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে তৎকালীন সময়ে পুঠিয়া থানায় চুরি হওয়া মোবাইল ফোনের আইএমই নাম্বারসহ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যবসায়ী। ওই ঘটনার কোন সুরাহা করতে পারেনি পুলিশ। এতে করে যেমন বাড়ছে পুলিশের প্রতি অনাস্থা, তেমনি বাড়ছে অভিযোগ বা জিডি না করার বিষয়টা। এমন পরিস্থিতিতে কেউ কেউ পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন এখন।

এদিকে এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, ঘটনা শোনার পর গতকাল (শুক্রবার) রাতে আমি সেখানে বিট অফিসার পাঠিয়েছিলাম তারা তদন্ত করেছে। এখন ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সময়ের আলো/আরআই



আরও সংবাদ   বিষয়:  চুরি-ছিনতাই   অতিষ্ঠ পুঠিয়াবাসি   রাজশাহী  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close