ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

পীরগঞ্জে নয়নাভিরাম অরেঞ্জ ভ্যালী, দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়
৬০ লাখ টাকার কমলা বিক্রির আশা
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৪, ৮:১৫ পিএম  (ভিজিট : ৪৫০)
চার দিকে সবুজ মাঠ। মাঝখানে বাগানের সারি সারি গাছের ডালে ঝুলছে হলুদ রঙের বড় বড় সুমিষ্ট কমলা। কমলার ভারে হেলে পড়েছে গাছের ডালপালা। এমন নয়নাভিরাম কমলা বাগান দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে শত শত মানুষ আসছেন। ঘুরছেন, ফিরছেন। খাচ্ছেন চোঁখের সামনে গাছ থেকে পারা পাকা কমলা। ছবি/সেলফি তুলছেন বন্ধু বান্ধব বা পরিবার পরিজন নিয়ে। কমলা কিনে হাসি মুখে বাড়ি ফিরছেন। সমতল ভূমিতে এমন কমলা বাগানের দেখা মিলবে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার উত্তর মালঞ্চা গ্রামে। বাগানটির নাম দেয়া হয়েছে অরেঞ্জ ভ্যালী।

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানান, এ অঞ্চলের মাটি কমলা তথা লেবু জাতীয় ফল উৎপাদনের জন্য উপযোগী। এ জন্য এরই মধ্যে অরেঞ্জ ভ্যালীসহ আরো বেশ কয়েকটি কমলা ও মাল্টা বাগান হয়েছে। অরেঞ্জ ভ্যালী সারা দেশে বেশ নাম করেছে। ঐ বাগানের কমলা সুমিষ্ট ও রসালো।

এরই মধ্যে বাগান থেকে কমলা তোলা শুরু হয়েছে। বাইরে বিক্রি করা হয়না এখানকার কমলা। বাগানেই বিক্রি করা হচ্ছে তিন’শ টাকা কেজি দরে। বাগানের সাড়ে চার’শ গাছ থেকে এবার কমলা পাওয়া যাবে প্রায় ১৬ হাজার কেজি। সে হিসেবে প্রায় ৬০ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা বাগান মালিকের।  

বাগান মালিক উপজেলার বীরহলি গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা আবু জাহিদ ইবনুল ইকরাম জুয়েল জানান, ১৩ বছর আগে আড়াই বিঘা জমিতে ভারতীয় দার্জিলিং জাতের কমলার বাগান করেন তিনি। শুরুতে বাগানটিতে আড়াই’শ কমলা গাছ রোপণ করা হয়। এখান থেকে বেশ আয় হয় তার। দু’বছর আগে পাশের আম বাগান কেটে সেখানে আরো দুই’শ কমলা চারা রোপণ করা হয়। এবার সব গাছেই ফল ধরেছে।  

গত বছর এ বাগানের আড়াই’শ গাছের কমলা থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছিলেন তিনি। এবার সাড়ে চার’শ গাছ থেকে প্রায় ৬০ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করতে পারবেন। বাগানে প্রচুর দর্শনার্থী আসছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। তাদের রেস্ট নিতে এবার বাগানের ভিতরে দুটি কটেজ ও খাবারের জন্য একটি রেস্টুরেন্টও চালু করা হয়েছে। সন্ধ্যায় বাগানের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে বিশেষ আলোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

দর্শনার্থীর চাপ কমাতে বাগানে প্রবেশের জন্য ৪০ টাকা প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় এখন প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে তিন’শ দর্শনার্থী বাগানে আসছেন বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। তার পরেও ভিড় সামাল দিতে মালিকসহ ১৫ জনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ রকম চলবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত।

উদ্যোক্তা জুয়েল আরো জানান, কমলা একটি অর্থকরী ফসল, যা খুব সহজে ও স্বল্প খরচে উৎপাদন করা যায়। তার বাগানে কমলার চারাও উৎপাদন করা হয়। কেউ যদি এমন বাগান করতে চায়, তাহলে তার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন বলেও জানান তিনি।

সম্প্রতি বিকেএসপি’র পরিচালক ফুয়াদ হাসান কমলা বাগান পরিদর্শনে এসে মুখ হয়ে বাগানে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, দেশেই এমন কমলা বাগান হতে পারে তা স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাসই করা যায় না। মনে হচ্ছে দার্জিলিং এর কোন এক কমলা বাগানে ঘুরছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সেনা কর্মকর্তা জানান, সপরিবারে ঘুরে আসার মত একটি চমৎকার জায়গা এ কমলা বাগান।

সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান জানান, অরেঞ্জ ভ্যালীর সাফল্য দেখে তারা পীরগঞ্জ-বোচাগঞ্জ পাকা সড়কে বাঁশগাড়া এলাকায় একটি কমলা বাগান করেছেন। তাদের বাগানেও ফল আসতে শুরু করেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া কমলা তথা লেবু জাতীয় ফলের জন্য উপযোগী। অরেঞ্জ ভ্যালীর উদাহরণ। এ জাতীয় ফল বাগান করতে তাদের পক্ষ থেকে চাষিদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। চাষিরাও আগ্রহী হচ্ছেন। এতে তারা লাভবানও হচ্ছেন। আগামীতে কৃষি অর্থনীতিতে লেবু জাতীয় ফল উৎপাদন বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেই এ কৃষিবিদ।

সময়ের আলো/আরআই



আরও সংবাদ   বিষয়:  অরেঞ্জ ভ্যালী   দর্শনার্থীদের ভিড়   কমলা বিক্রি   পীরগঞ্জ  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close