ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

কনকনে শীতে কাঁপছে হিলির মানুষ, জনজীবনে দুর্ভোগ
প্রকাশ: সোমবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪, ২:৫২ পিএম  (ভিজিট : ৬৭৬)
কনকনে শীত আর ঠাণ্ডা হিমেল বাতাসে কাঁপছে হিলির মানুষ। উত্তরের জেলা দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলিতে গত এক সপ্তাহ ধরে সকাল থেকেই ঝরছে বৃষ্টির মতো কুয়াশা। রাতেও একই ঝরছে কুয়াশা সাথে ঠাণ্ডা হিমেল বাতাস। ঘন কুয়াশার কারণে পথঘাট কিছুই দেখা যাচ্ছে না। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাহিরে বের হচ্ছেন না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও অনেক অংশে কমেছে। যারা জীবিকার তাগিদে বের হচ্ছেন তারাও কাজ না পেয়ে অলস সময় পার করছেন। দিনে ও রাতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে শিশু ও বয়স্করা। 

এদিকে প্রচণ্ড শীতের কারণে হাসপাতালে বেড়েছে শীত জনিত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সকাল ৯টায় দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৬ শতাংশ। আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এই জেলায়। গতকাল একই সময় তাপমাত্রা ছিল ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। যা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো এই জেলায়। 

এলাকাবাসী, হাসপাতালের রোগীসহ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

হাকিমপুর উপজেলার চকচকা গ্রামের মিলন মন্ডল বলেন, এক সপ্তাহ ধরে আমাদের সূর্য মামার দেখা মিলছে না। প্রতিদিন বিকেল থেকে শুরু করে পরদিন বিকেল পর্যন্তও রোদ উঠছে না। তার সঙ্গে ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতাকে আর বাড়িয়ে দিয়েছে। শিশু ও বয়স্করা আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। 

হাকিমপুরের পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা যারা বয়স্ক মানুষ তারা শীতবস্ত্রের অভাবে বাড়ি থেকে কাজ ছাড়া বের হচ্ছি না। তিনি সরকারি ভাবে শীতবস্ত্র বিতরণের দাবি জানান।

হাকিমপুর হাসপাতালে ভর্তি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল (রোববার) বিকেল থেকে শীতের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছি। তাই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে রয়েছি।

কথা হয় হিলি বাজার সিপি রোডের এলএসডি গোডাউন মোড়ে বসা কামার কৃষ্ণ কর্মকার এর সাথে। তিনি বলেন, টানা কয়েক দিন ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাস। ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু কি করব দাদা পেট তো আর মানে না। তাই আজ কাজ করার জন্য হিলি বাজারে আসছি। সকাল থেকে বসে থাকার পর দুপুরে দুটি বটির কাজ পেয়েছি। দুটি বটির কাজ করে একশত টাকা পেয়েছি। কয়েক দিন থেকে তেমন কাজকাম নেই।

হিলির রিকশা চালক মজিবর বলেন, সকালে বের হয়েছি। তেমন কাজকাম নেই। ঠাণ্ডা আর বাতাসের কারণে যাত্রীরা রিকশায় উঠতে চায় না। আমি সকাল থেকে এ পর্যন্ত পঞ্চাশ টাকা পেয়েছি।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমান জানান, এই সময়টায় অতিরিক্ত শীতের কারণে সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, মাথা ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগে দেখা দেয়। তাই সকলকে সতর্ক হয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি যারা হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাদের ওষুধসহ সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত রায় বলেন, গতকাল নিজ কার্যালয়ে এবং রাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পে শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে হাকিমপুর উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ৩টি ইউনিয়নে ২ হাজারেরও বেশি শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র ( কম্বল) বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আরও শীতবস্ত্রের জন্য জেলায় চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আসলে শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  শীতের তীব্রতা   শীতার্ত মানুষ   জনজীবন বিপর্যস্ত   হিলি  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close