প্রকাশ: রবিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪, ৫:৪৫ পিএম (ভিজিট : ৯০৬)
সিরাজগঞ্জে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় ক্ষতির মুখে পড়েছে সরিষা ও বোরো আবাদের বীজতলা। ভাটা পড়েছে সরিষার ফুল থেকে মধু উৎপাদনেও। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯টি উপজেলায় এ মৌসুমে ৮৫ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আসন্ন বোরো মৌসুমে জেলায় ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বোরো আবাদের জন্য ৮ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে বীজতলা প্রস্তুত করছে কৃষক।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে সিরাজগঞ্জে আসা মৌ চাষিরা ২৯ হাজার ১১৬টি মৌ বাক্স স্থাপন করেছে। কিন্তু তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় মৌমাছি বের হতে না পারায় মধু উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় পাশাপাশি সরিষার ফলন নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে কৃষকদের মধ্যে।
কামারখন্দ উপজেলার চৌবাড়ী গ্রামের কৃষক বেলাল হোসেন জানান, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে সরিষার ফুল পচে যাচ্ছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মধু সংগ্রহ করতে মৌ চাষিরা আসায় মৌমাছির পরাগায়নের ফলে সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় মৌমাছি বের হতে পারছে না। সব মিলিয়ে সরিষার কাঙ্ক্ষিত ফলন নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
একই গ্রামের কৃষক স্বপন পারভেজ জানান, ঘন কুয়াশার কারণে বোরো ধানের বীজতলা প্রথমে হলুদ ও পরে সাদা হয়ে যাচ্ছে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করেও তেমন উন্নতি দেখছি না। বীজতলা তৈরি করতে না পারলে চড়া দামে বীজতলা কিনে জমিতে রোপণ করতে হবে। এতে ধানের উৎপাদন খরচ অত্যধিক বাড়বে।
গোপালগঞ্জ থেকে আসা মৌ চাষি ইয়াছিন শেখ জানান, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে মৌমাছি বের হতে পারছে না, অনেক মৌমাছি মারা যাচ্ছে। এতে মধু উৎপাদনে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বাবলু কুমার সুত্রধর জানান, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে সরিষা ও বীজতলার ক্ষতি রোধে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ প্রদান করছেন। এর মধ্যে ফুল ঝরা সরিষায় কীটনাশক স্প্রে করতে বলার পাশাপাশি বীজতলা পলিথিন দিয়ে রাতভর ঠেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বীজতলার ওপরে শিশির জমে থাকলে লাঠি দ্বারা শিশিরের পানি ফেলে দেওয়ার পাশাপাশি বীজতলায় রাতভর পর্যাপ্ত পানি রাখতে বলা হচ্ছে।