ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

সেতুর অভাবে দুর্ভোগে ৬০ গ্রামের মানুষ
প্রকাশ: শুক্রবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৪, ২:৪৫ এএম  (ভিজিট : ৫৭৬)
কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলা শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সোনাভরি নদী। এই নদী পার হয়ে উপজেলা শহরে যাতায়াত করে কোদালকাটি ইউনিয়নের ৬০ গ্রামের মানুষ। উপজেলার অদূরে খাজার ঘাট এলাকায় মাত্র ৭০ মিটার চওড়া এই নদী। বর্ষা মৌসুমে এখান দিয়ে নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা খেয়া নৌকা। আর শুকনো মৌসুমে নদীর পানি শুকিয়ে গেলে কাদা-পানি মাড়িয়ে নদী পার হতে হয় স্থানীয়দের। বছরের পর বছর ধরে সদর ইউনিয়নের খাজার ঘাট এলাকায় সোনাভরি নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী। তাদের দাবি, একটি সেতু নির্মাণ করা হলেই ঘুরে যেতে পারে এই এলাকার অর্থনৈতিক চাকা। বদলে যেতে পারে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ কর্মব্যস্ত মানুষের জীবনধারা। 

সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে উপজেলার সদর ইউনিয়নের খাজার ঘাটে সোনাভরি নদী পার হতে হয় খেয়া নৌকায়। অন্যদিকে শুকনো মৌসুমে কাদা-পানি মাড়িয়ে পার হতে হয় নদী। এভাবেই বছরের পর বছর কষ্ট করে নদী পার হচ্ছে কোদালকাটি ইউনিয়নের বদরপুর, আনন্দ বাজার, সাজাই, চরসাজাই, পাখিউড়া, হাতিমারাসহ অন্তত ৬০ গ্রামের মানুষ। কোদালকাটির চরে রয়েছে ২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২টি দাখিল মাদরাসা, ৪টি ইবতেদায়ি মাদরাসা ও কয়েকটি হাফেজিয়া মাদরাসাসহ বেশ কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়াও প্রতিদিন সকাল-বিকাল নিয়মিত বাজার বসে নদীপারের এই বাজারে।
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিছিন্ন কুড়িগ্রাম জেলার ১১১ বর্গ কিলোমিটারের ছোট্ট একটি উপজেলা রাজীবপুর। রাজীবপুর সদর, কোদালকাটি ও মোহনগঞ্জ-এই তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলা। উপজেলা সদর থেকে সোনাভরি নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে পুরোপুরি বিছিন্ন কোদালকাটি ইউনিয়ন। এই এলাকায় উৎপাদন করা হয় হরেক রকম কৃষিপণ্য। ধান, পাট, গম, ভুট্টা, বাদাম ও বিভিন্ন ধরনের রবি ফসলসহ শাকসবজি দিয়ে ভরপুর এই এলাকার ফসলের মাঠ। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে রাজীবপুর সদর ও রৌমারীর বিভিন্ন হাট-বাজারসহ সারা দেশে বিক্রি হয় এখানকার কৃষিপণ্য। এসব পণ্য পার করতে হয় সোনাভরি নদীর ওপর দিয়ে। এ ছাড়া জীবন বাঁচানোর তাগিদে এবং শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য, হাট-বাজারসহ নিত্যপ্রয়োজনে চরবাসীকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে সোনাভরি নদী। এ এক চরম দুর্ভোগ এই অঞ্চলের মানুষের জন্য। একটি সেতু নির্মাণের অভাবে উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজীবপুর উপজেলা প্রকৌশলী মনছুরুল হক বলেন, সব প্রকল্পেই খাজার ঘাটে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে। একই ধরনের কথা জানিয়েছেন রাজীবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর আহমেদও। তার কথায়, খাজার ঘাট এলাকা পরিদর্শন করে সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা করি, দ্রুত সেতু নির্মাণ হয়ে যাবে এবং ওই এলাকার মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।

কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির ছক্কু ও ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, খাজার ঘাটে একটি সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় কোনো গর্ভবতী মা কিংবা মুমূর্ষু কোনো রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সে নেওয়ার সময়। খাজার ঘাটে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে যাতায়াতের সমস্যা দূর হবে। এতে এলাকার মানুষ শান্তি পাবে। 

স্থানীয় শিক্ষক শিরিনা খাতুন, আকতারুজ্জামান, বেলাল হোসেনসহ আরও অনেকে বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সুফল ভোগ করতে পারছেন তারা। দেশের নানা স্থানে সেতু-কালভার্ট নির্মিত হচ্ছে। কিন্তু এই এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ হয় না। নির্বাচন এলেই এই অঞ্চলের মানুষকে জনপ্রতিনিধিরা উন্নয়নের নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচন শেষে তাদের আর মাঠে দেখা যায় না। চর এলাকা নিয়ে ভাবেও না কেউ। দুঃখের বিষয় হলো, শুধু সেতুর দাবি করেই গেলাম, কিন্তু বাস্তবায়ন আর হলো না।

সময়ের আলো/আরএস/ 











 


































https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close