ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

আমদানি নির্ভরতা কমাতে চায় কৃষি বিভাগ
ভোজ্য তেল-মধু সংগ্রহে সরিষাবাড়ীতে বাড়ছে সরিষা চাষ
প্রকাশ: সোমবার, ১ জানুয়ারি, ২০২৪, ১২:৫৭ এএম  (ভিজিট : ৮২৬)
দেশের ভোজ্য তেল আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনার পাশাপাশি খাঁটি মধু আহরণে সরিষা চাষে ঝুঁকছেন 
কৃষকরা। সরকারিভাবে কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করা হচ্ছে। কৃষকরা বলছেন, বিনামূল্যে এই প্রণোদনা সহায়তা পাওয়ায় লাভবান হবেন তারা। চলতি মৌসুমে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গত বছরের তুলনায় বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। মাঠের পর মাঠ ছেয়ে গেছে সরিষার হলুদ ফুলে। শীতের হিমেল হাওয়ায় বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে দুলছে সরিষা গাছ। দেখে মনে হচ্ছে, প্রকৃতি যেন হলুদবরণে সেজেছে।   

সরিষাবাড়ী উপজেলায় গত মৌসুমে সরিষা চাষ হয়েছিল লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি। গত মৌসুমে ৪ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হলেও চলতি মৌসুমে চাষ হয়েছে আরও বেশি। চলতি মৌসুমে মোট ৫ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করেছেন কৃষকরা। উপজেলায় টরি-৭ জাত ছাড়াও উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৭, বারি সরিষা-১৮, বিনা সরিষা-৪, বিনা সরিষা-৯ ও বিনা সরিষা-১১ জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। 

অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বোনা বিভিন্ন জাতের সরিষার ফুলে ফুলে হলুদবর্ণ ধারণ করেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং বাজারমূল্য ভালো থাকলে সরিষা চাষিরা এবার অধিক লাভের আশা করছেন। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জমিতে সরিষা চাষ হওয়ায় স্থানীয়ভাবে ভোজ্য তেলের চাহিদা মিটবে বলে মনে করছেন কৃষকরা। একটা সময় বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষার চাষ হলেও এখন সরিষা চাষকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন কৃষকরা। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। কৃষকদের প্রত্যাশা, উৎপাদিত সরিষা থেকে তারা দ্বিগুণ লাভ পাবেন। উৎপাদিত সরিষার ন্যায্য দাম নিশ্চিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সরিষা থেকে মধু সংগ্রহের জন্য স্থাপন করা হয়েছে শত শত বাক্স। সরিষা ক্ষেতের পাশেই সারিবদ্ধভাবে স্থাপন করা হয়েছে সেগুলো। সেই বাক্সে ঘর বেঁধেছে মৌমাছির দল। তারা বাক্স থেকে দল বেঁধে বের হয়ে সরিষা ক্ষেতের ফুল থেকে মধু আহরণ শেষে আবার ফিরে যাচ্ছে বাক্সে। তাদের মতো মৌচাষিরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন মধু আহরণে। মৌমাছির বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষিরা। 
ভোজ্য তেলের চাহিদার পাশাপাশি সরিষা থেকে তেল নিষ্কাশনের পর অবশিষ্ট অংশ থেকে তৈরি হয় খৈল। এসব খৈল জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফল, ফুল এবং সবজি গাছের জন্য উৎকৃষ্ট জৈব সার এই খৈল। এছাড়া জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় সরিষার গাছ।

মহাদান ইউনিয়নের গুঠুর মোড় এলাকার কৃষক মজিবর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এক কেজি সরিষা বীজ আর ২০ কেজি সার পেয়েছি। সরকারিভাবে বিনামূল্যে সার ও বীজ পাওয়ায় আমার ভালো উপকার হয়েছে। দাসের বাড়ি গ্রামের বাশিরুল ইসলাম হেলাল বলেন, আমি এবার তিন বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে অন্য বছরের তুলনায় ফলন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুপ সিংহ বলেন, ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে কাজ করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। সরিষা চাষিদের বিনামূল্যে বীজ ও সার সরবরাহের পাশাপাশি সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে। ভোজ্য তেলের উচ্চমূল্যে সাধারণ মানুষ বিপর্যস্ত। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয় অনেক চাষি সরিষার চাষ করছেন। উপজেলায় আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে সরিষার চাষ।

কৃষক আবুল হোসেন জানান, কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতা, উন্নত জাতের সরিষা বীজের সহজলভ্যতা সৃষ্টির পাশাপাশি উৎপাদিত সরিষার ন্যায্য দাম নিশ্চিতে সরকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে আগামীতে সরিষার চাষ আরও বাড়বে বলে মনে করেন কৃষকরা। 

সময়ের আলো/আরএস/ 





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close