ই-পেপার বুধবার ১৬ অক্টোবর ২০২৪
বুধবার ১৬ অক্টোবর ২০২৪

ত্বকের যত্নে ১২ তেল
প্রকাশ: শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৩:৫৫ পিএম  (ভিজিট : ৩১৭০)
শীতকালে ত্বক ভালো রাখতে তেল ব্যবহার জরুরি। কারণ শীতের মৌসুম মানেই রুক্ষ ত্বক। আর সেই রুক্ষ ত্বক থেকে বাঁচতে আজকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী এলেও ত্বকের যত্নে আজও তেলের জুড়ি মেলা ভার। তবে সব তেল সবার জন্য নয়। তা বুঝেই তেল মাখুন।

ত্বকের জন্য কেন তেল জরুরি
যুগ যুগ ধরে দেশে ত্বকের পরিচর্যায় তেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তেল আমাদের রোমকূপের মধ্যে প্রবেশ করে ত্বকে পুষ্টি জোগায়। ফলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং তেল ব্যবহারের ফলে ত্বকে বাইরের আবহাওয়ার কোনো খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে না। এ ছাড়া তেল শরীর থেকে টক্সিন শুষে নেয়। আবার তেল গরম করে মাখলে পেশি শিথিল থাকে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।

কখন কীভাবে তেল মাখবেন
তেল শুধু মাখলেই হবে না, তেল মাখার পরে ভালো করে মালিশ করতে হবে। ত্বক শুষ্ক থাকলে গোসলের পর তেল মাখা উচিত। এতে শুষে যাওয়া পানি বেরোতে পারে না। আবার দাদ, ত্বকে সমস্যা দেখা দিলে শুকনো অবস্থায় তেল লাগিয়ে গোসল করতে হবে। কারণ তেল লাগিয়ে স্নান করলে পানি শুষে যায় না বলে চামড়া নরম হয় না। ফলে ওই নির্দিষ্ট জায়গায় ফাঙ্গাস বাড়তে পারে না।

ত্বকের যত্নে কোন তেল ব্যবহার করবেন-

সরিষার তেল
এই তেলে অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল গুণ আছে, যা শীতকালে ত্বকের যত্নে কার্যকরী। ম্যাসাজ করলে বলিরেখা দূর হয়। শরীরের তীব্র গন্ধ দূর করতেও সরিষার তেল খুব কার্যকরী।

নারকেল তেল
নারকেল তেল শুধু চুলের জন্যই উপকারী নয়, ত্বকের জন্যও সমান উপকারী। অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল গুণসমৃদ্ধ এই তেল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। এটি ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে।

বাদামের তেল
বাদাম তেল ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-ডি, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এগুলো আমাদের ত্বক ও চুলকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে মুখে কয়েক ফোঁটা বাদাম তেল ম্যাসাজ করলে তা মুখের দাগ কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আসে। এ ছাড়া নিয়মিত মাথা ম্যাসাজ করলে চুল মজবুত ও সুন্দর হয়।

তিলের তেল
শুষ্ক ত্বকের সমস্যা থাকলে তিলের তেল ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকে কোমলতা আনা এবং বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ হওয়া থেকে রক্ষা করে এই তেল। এ ছাড়া তিল তেলে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায় এটি খেলেও ত্বক মোলায়েম থাকে। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তোলে এই তেল। ত্বকে বয়সের ছাপও পড়তে দেয় না এই তেল।

অলিভ অয়েল
শীতকালে অনেকেই অলিভ অয়েল মাখেন। আজকাল ক্রিম, লোশন, শ্যাম্পু অনেক প্রসাধনীতে ব্যবহৃত হচ্ছে এই তেল। এই তেল সহজে ত্বকের গভীরে পৌঁছে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। এর ক্লিনজিং ইফেক্টের কারণে ত্বকে ময়লা জমতে পারে না। রাতে শোবার আগে অলিভ অয়েল মুখে ও ঘাড়ে ম্যাসাজ করে একটি টিস্যু পেপার দিয়ে হালকা করে মুছে নিলে অতিরিক্ত তেল শুষে নেবে এবং ভালো নাইট ক্রিম হিসেবে কাজ করবে।

টি ট্রি অয়েল
তুলার বলের সাহায্যে টি ট্রি অয়েল সরাসরি ত্বকে মাখুন। ভালো ফলাফলের জন্য চাইলে কয়েক ঘণ্টা পর পর ব্যবহার করতে পারেন। টি ট্রি তেল ব্রণ প্রবণ ত্বককে সুস্থ ও মসৃণ করতে ভূমিকা পালন করে।

ভ্যানিলা তেল
ভ্যানিলা আদতে একটি ফলের নির্যাস। দেখতে অনেকটা মটরশুঁটির মতো। সেই ফল শুকিয়ে গুঁড়ো করে তৈরি হয় ভ্যানিলা এসেন্স। ক্রিম, তেল, ময়েশ্চারাইজার সব তৈরি হয় ভ্যানিলার নির্যাস থেকে। এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের জন্যই তা ব্রণ, অ্যাকনে প্রতিরোধে সাহায্য করে। শরীরের ব্যথা, বেদনা সারিয়ে তোলার মতো ক্ষমতাও কিন্তু রয়েছে এই ভ্যানিলা অয়েলের। শীতে আমাদের চামড়া কুঁচকে থাকে। ত্বক শুকনো থাকে। ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে ভ্যানিলা এসেন্স।

আঙুর বীজের তেল
আঙুরের বীজের তেলে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়। এটি ভিটামিন ‘ই’ এবং ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে এটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাব এবং ত্বকে দূষণের প্রভাব দূর করে। এটি ত্বককে ভেতর থেকে হাইড্রেট করে এবং ত্বকের রেখা কমাতে সাহায্য করে।

জোজোবা তেল
জোজোবা তেল ৪-৫ ফোঁটা নিয়ে ত্বকে শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত আপনার পরিষ্কার মুখের ত্বকে ম্যাসাজ করুন। এটি ধোয়ার প্রয়োজন নেই। ভালো ফলাফলের জন্য, জোজোবা তেল রাতে ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করুন। ঘুমানোর আগে আপনার পরিষ্কার মুখে কয়েক ফোঁটা জোজোবা তেল মালিশ করুন এবং পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলুন। জোজোবা তেল নিয়মিত লাগালে ব্রণের সমস্যা দূর হয়।

আর্গন তেল
আর্গন তেল ত্বক, চুল, নখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে কাজে লাগে। এতে ভিটামিন এ, ভিটামিন ই ও নানা ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। অন্য তেলের তুলনায় আর্গন তেল বেশ হালকা। শীতকালে ময়শ্চারাইজার ও বডি লোশনের বিকল্প হতে পারে এই তেল। ফাটা ঠোঁটের যত্নেও তা খুব কার্যকর।

অ্যাভোকাডো তেল
এই তেল চুল ও ত্বকের জন্যও ভালো। অ্যাভোকাডো তেল পটাসিয়াম, ভিটামিন ডি এবং ম্যাগনেসিয়াম এবং লিনোলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এই তেল ত্বককে দীর্ঘ সময়ের জন্য হাইড্রেটেড রাখে।

ডালিম তেল
ডালিমের বীজের তেল সব ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই তেল শুধু ত্বককে সুস্থই রাখে না, ব্রণ ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যায়ও উপকারী।

দীর্ঘদিনের পরিচর্যা
বাজার চলতি সব তেলের মূল কাজ একই রকমের হয়। শুধু সুগন্ধীসহ কিছু জিনিস মিশিয়ে তেলের মানের প্রকারভেদ করা হয়। একই সঙ্গে ত্বকে তেল ব্যবহারের উপকারিতা কিন্তু এক দিনে পাওয়া যায় না। নিয়মিত ত্বকে তেল ম্যাসাজ করলে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর ত্বকে উপকার চোখে পড়বে। একই সঙ্গে প্রতিটি তেলের মূল কার্যকারিতা এক থাকলেও কোন তেল আপনার ত্বকের জন্য উপযুক্ত তা সঠিকভাবে বাছাই করা জরুরি।


আরও সংবাদ   বিষয়:  ত্বকের যত্ন   ত্বকের জন্য তেল  




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close