ই-পেপার বুধবার ১৬ অক্টোবর ২০২৪
বুধবার ১৬ অক্টোবর ২০২৪

বিশ্বব্যাংক জানাল
আরও এক বছর চাপে থাকবে দেশের অর্থনীতি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৩৯ পিএম আপডেট: ১৬.১০.২০২৪ ২:৪৯ এএম  (ভিজিট : ১৮৭)
বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও এক বছর চাপে থাকবে বলে জানিয়েছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমে ৪ শতাংশ হবে। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সেটি বেড়ে ৫ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। 

মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটি বলেছে, করোনা মহামারি সংকটের পরবর্তী সময়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। ফলে ২০২৪ সালে প্রবৃদ্ধি কমে প্রকৃত প্রবৃদ্ধি দশমিক ২ শতাংশ।

সংবাদ সম্মেলনে ওয়াশিংটন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা, অর্থনীতিবিদ নাজমুস খান, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহবুব।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলছে, দেশে প্রবৃদ্ধির ধারা কমছে। যদিও সংস্থাটি ২০২৩ সালে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা জানায়। এছাড়া ২০২৫ সালে দেশে প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ হবে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশ তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সেগুলো হলো- উচ্চ মূল্যস্ফীতি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা ও বৈশি^ক খাতের চাপ।

আর্থিক খাত নিয়ে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে বিভিন্ন ধরনের সংকট রয়েছে, বিশেষ করে খেলাপি ঋণ অনেক বেশি। সরকারের অনেক প্রচেষ্টার পরও সেটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এছাড়া মূল্যস্ফীতি কমাতে ঋণের সুদের হার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বেসরকারি খাতে ঋণ গ্রহণ কমেছে।
প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে ৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ২ শতাংশের মধ্যে থাকবে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, মধ্যবর্তী পয়েন্ট হবে ৪ শতাংশ। যদিও চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বিশ্বব্যাংক এপ্রিলে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল।

চলমান অর্থবছরের বাজেটে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। সেই হিসাবে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস সরকারি লক্ষ্যের চেয়ে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ কম হবে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী কমে গেলে তা হবে কোভিড মহামারির পর সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।

চলতি অর্থবছরের পূর্বাভাস কমানোর পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলনও কমিয়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশে নামিয়েছে। গত অর্থবছরের জন্য সরকারের সাময়িক প্রাক্কলন ছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ।

কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, চাকরি সৃষ্টি বিশেষ করে নগর এলাকায় এবং তৈরি পোশাক খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরগুলোতে স্থবির হয়ে পড়েছে। ২০১৬ সাল থেকে চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেটে কর্মসংস্থানে ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশের শ্রমবাজারে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ফাঁক রয়েছে। সেটি একটি বড় সমস্যা। এক্ষেত্রে রফতানি বহুমুখীকরণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং শিক্ষার মান বাড়াতে হবে। দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার ‘মিস ম্যাচ’ আছে। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে এসব বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের পরিস্থিতি খারাপ বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। 

সংবাদ সম্মেলনে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে খুব বেশি ভূমিকা রাখতে পারেনি। অথচ প্রতি বছর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে শিক্ষিত ও শহরে বেকার বৃদ্ধি পাওয়াটা একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

তিনি আরও বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের জন্য অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও এটি কমানো যাচ্ছে না। বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি, যা সাধারণ মানুষের জীবনমানকে নিচে নামাচ্ছে। পাশাপাশি বৈষম্যও বাড়ছে বাংলাদেশে। এক্ষেত্রে বৈষম্য কমানোর উদ্যোগ নেওয়া দরকার। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং আর্থিক খাতে বিভিন্ন সংস্কার দ্রুত করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।



সময়ের আলো/এএ/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close