ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ছাড়া আছে সবই
প্রকাশ: শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪, ৪:৪৬ এএম  (ভিজিট : ১৯৮)
সুন্দর গ্রামীণ পথ দিয়ে পায়ে হেঁটে যেতে হয় ঝালকাঠির রাজাপুরে ১২১নং নিজ গালুয়া মরহুম ফজলুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। দোতলা আধুনিক ভবন, শ্রেণিকক্ষ, চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, খেলার মাঠ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, শিক্ষক থেকে শুরু করে সবকিছু ঠিকঠাক মতোই আছে। কিন্তু শিক্ষার্থী উপস্থিতি নেই বললেই চলে। এতে সরকারের প্রতি মাসে বিদ্যালয়ের পেছনে লক্ষাধিক টাকা অপব্যবহার হচ্ছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। 

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজম খান বলেন, স্কুলে শিক্ষার্থী না থাকলে নেই। অসুবিধা কী? আমরা তো আর কোথাও নিয়ে রাখিনি। স্কুলের শিক্ষার্থীরা পাশর্^বর্তী নূরানি মাদরাসায় পড়ে। যার জন্য স্কুলে আসে না। তার স্কুলের শিক্ষার্থীরা কেন নূরানি মাদরাসায় পড়ে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আরবি পড়ার জন্য ওই মাদরাসায় যায়।

রাজাপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, এরকম উপজেলায় ৩ থেকে ৪টা স্কুল রয়েছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পরে প্রতিষ্ঠান বন্ধের জন্য সুপারিশ করা হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে উপস্থিত নেই কোনো শিক্ষার্থী। অফিস কক্ষে গল্পে মশগুল ৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। স্থানীয়রা জানান, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি শুধু কাগজপত্রেই আছে। বাস্তবে এটাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলে মনে হয় না। কারণ এখানে শিক্ষক থাকলেও কোনো শিক্ষার্থী নেই বললেই চলে। প্রতিদিন শিক্ষকরা সকালে স্কুলে এসে হাজিরা দেন। এরপর ছুটি হওয়ার আগেই বাড়িতে চলে যান। স্কুলে অডিটের সময় একটি মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীদের এনে এই স্কুলের শিক্ষার্থী দাবি করে দেখানো হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজিস্ট্রার ও কাগজপত্রে ৫১ জন দাবি করলেও শ্রেণিকক্ষের হাজিরা খাতায় ৫৪ জনের নাম পাওয়া যায়। তবে নিয়মিত হাতে গোনা ৩ থেকে ৫ জন শিক্ষার্থী ক্লাসে এলেও প্রতিদিন হাজিরা খাতায় উপবৃত্তির জন্য শতভাগ উপস্থিতি দেখানো হয়।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোসা. ফাতিমা বেগম বলেন, প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কম। তবে নিয়মিত ৩ থেকে ৫ জন শিক্ষার্থী আসে। কিন্তু হাজিরা খাতায় উপবৃত্তির ক্ষেত্রে সবাইকে উপস্থিতি দেখানো হয়। তবে কেন দেখানো হয় সেটা আমি জানি না। উপবৃত্তি দিলেও তারা কেন স্কুলে আসে না এবং ৩০ তারিখে হাজিরা খাতায় কেন হাজিরা নেওয়া হলো না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের টিফিনের বিরতিতে অফিস কক্ষে বসে হাজিরা দিয়ে দিই। আজকে কোনো শিক্ষার্থী না থাকায় হাজিরা নেওয়া হয়নি। ওরা নূরানি মাদরাসায় যায়। আমরা তো ওদের জোর করতে পারি না।

এ বিষয়ে সিরাতুন নবী মডেল মাদরাসা ও এতিমখানার প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ১২১নং নিজ গালুয়া মরহুম ফজলুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী আমার মাদরাসায় পড়ে না। বরং ওই স্কুলে অডিটের সময় আমার মাদরাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাদের স্কুলের শিক্ষার্থী বলে কর্তৃপক্ষকে দেখানো হয়।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close