ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নওগাঁয় ২ মাস বন্ধ ওএমএস
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৬:৩০ পিএম  (ভিজিট : ১৬৮)
নওগাঁয় দুই মাস থেকে বন্ধ রয়েছে স্বল্পমূল্যে খোলা বাজারে খাদ্যশস্য (ওএমএস) এর চাল ও আটা বিক্রি। ৩০ টাকা কেজি দরে চাল ও ২৪ টাকায় আটা কিনতে পারেন হতদরিদ্র ও নিম্নবিত্তরা। একজন ক্রেতা ৫ কেজি করে নিতে পারবেন। তবে ওএমএস কার্যক্রম বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। তবে দ্রæত সমস্যা সমাধান করে চালু করার দাবি জানান উপকারভোগীরা।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়- সদর উপজেলায় ১৮ জন ওএমএস ডিলার আছেন। জনপ্রতি ১ টন আটা ও ১ টন চাল বরাদ্দ। ১৮ জনের মধ্যে প্রতিদিন শহরের ১১ টি পয়েন্টে ১১ জন ডিলার চাল ও আটা বিক্রি করেন। যা থেকে প্রায় ২২শ জন হতদরিদ্র ও নিম্নবিত্তরা সুবিধা পেয়ে থাকেন। বর্তমানে ১৫ জন ডিলারের বরাদ্দ বন্ধ রাখা হয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিন জন ডিলার ওএমএস বিতরণ করছেন। শহরের মুক্তির মোড়, খলিশাকুড়ি ও সুলতানপুর মহল্লায় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিক্রি কার্যক্রম চলে। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জনপ্রতি ১ টন চাল ও ১ টন আটা বরাদ্দ ছিল। তবে চলতি মাসের প্রথম তারিখ থেকে শুধুমাত্রা আটার বরাদ্দ ৫০০ কেজি বাড়িয়ে দেড় টন করা হয়েছে। এ তিন জন ডিলারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৯০০ জন হতদরিদ্র ও নিম্নবিত্তরা সুবিধা পাচ্ছেন।

সারা বছরই নওগাঁ সদর উপজেলার ওএমএস এর চাল ও আটা বিক্রি হয়। বাজার মূল্যের চেয়ে দাম কিছুটা কম পেয়ে উপকৃত হন হতদরিদ্র ও নিম্নবিত্তরা। ওএমএস থেকে যে মোটা চাল ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাজারে ওই মানের চাল অন্তত ৫৪-৫৮ টাকা কেজি। আবার ২৪ টাকার আটা বাজারে অন্তত ৪০ টাকা কেজি। দাম কম পাওয়ার আশায় হতদরিদ্র ও নিম্নবিত্তরা ওএমএস থেকে কিনতে ভীড় করেন।

১৮ জন ডিলারর মাধ্যমে সরকারি ছুটি ব্যতিত প্রতিদিন প্রায় ২২শ জন হতদরিদ্র ও নিম্নবিত্তরা সুবিধা পেয়ে থাকেন। তবে ৫ আগস্ট দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ার পর ১৫ জন ডিলারের ওএমএস কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এসব ডিলার অধিকাংশ আওয়ামী লীগ পন্থি বলে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাদের বরাদ্দ খাদ্য বিভাগ থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে।

শহরের মুক্তির মোড়ের ওএমএস ডিলার হেলাল খান। সকাল ৯টা থেকে বিক্রি কার্যক্রম শুরু হলেও ভোর থেকে সিরিয়ালে লাইন দিয়ে অপেক্ষা করেন হতদরিদ্ররা।

শহরের জনকল্যাণ মহল্লার বাসীন্দা জবেদা বেগম। তিনি বলেন- চার সদস্যের পরিবার। স্বামী রিকশা চালক। বয়স হওয়ায় আয় কমে গেছে। বাজার থেকে চাল কেজিতে ২০ টাকা কমে পাওয়া যায় এই আশায় ভোরে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। নিয়মিত এখান থেকে চাল ও আটা কিনা হয়। এতে করে সুবিধা হয়েছে।

ডিলাররা বলছেন- দুইমাস আগে তারা বরাদ্দের অনুকুলে ট্রেজারির মাধ্যমে ব্যাংকে টাকা জমা দিতেন। এরপর প্রমাণসরুপ খাদ্য অফিসে কাগজপত্র জমা দিয়ে অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর ওই কাগজটি তারা খাদ্য গুদামে দিয়ে মালামাল তুলে বিক্রি করতেন। কিন্তু ৫ আগস্টে দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ার পর তাদের বরাদ্দ বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি জানতে খাদ্য অফিসে প্রতিনিয়ত ঘুরতে হচ্ছে। কিন্তু কোন সদুত্তর তারা পাচ্ছেন না। এ কারণে তারা মালামাল উত্তোলন করতে পারছেন না।

শহরের একএনায়েত মহল্লার ওএমএস ডিলার আসাদুজ্জামান সোহেল বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় থেকে ওএমএস দিয়ে আসছি। হঠাৎ করে আমাদের বরাদ্দ বন্ধ রাখা হয়েছে। বরাদ্দ নেয়ার জন্য খাদ্য অফিসে কয়েকবার স্বশরীরে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছি। পরবর্তীতে আমাদের জানানো হবে। তবে কবে জানানো হবে তার কোন সঠিক তথ্য নেই।

নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফরহাদ খন্দকার বলেন- অধিকাংশ ওএমএস ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় কিছু বাঁধা রয়েছে। যাদের নিয়ে সমস্যা বা আপত্তি রয়েছে তাদের বরাদ্দ স্থগিত রাখা হয়েছে। যাতে কোন ধরণে বিশৃঙ্খলা না হয়। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রনালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। দ্রুত একটা নীতিমালা পাওয়া যাবে। এরপর বরাদ্দ কমিটি যেভাবে নির্দশনা দিবে ঠিক সেভাবে কাজ করা হবে।

গত ১২ সেপ্টেম্বর নওগাঁয় জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন মো. আব্দুল আউয়াল। ওএমএস বন্ধ থাকার বিষয়ে খাদ্য বিভাগ তাকে অবগত করেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, তার জানা নেই বা কেউ অবগত করেনি। যদি বন্ধ থাকে তবে দ্রুত চালু করা হবে।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close