ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

মাগরিবের নামাজে যেসব সওয়াব
প্রকাশ: বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪, ৪:৪১ এএম  (ভিজিট : ২১৪)
প্রত্যেক মুসলমানের ওপর প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের তৃতীয় নামাজ হলো মাগরিবের নামাজ। সূর্য পুরোপুরি ডুবে গেলে মাগরিবের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং পশ্চিম আকাশে দিগন্ত লালিমা শেষ হওয়া পর্যন্ত মাগরিবের নামাজ পড়া যায়। তবে সূর্যাস্তের পর বিলম্ব না করে মাগরিবের নামাজ আদায় করে নেওয়া মুস্তাহাব। 

হজরত সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘সূর্য পর্দার আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা নবী (সা.)-এর ইমামতিতে মাগরিবের নামাজ আদায় করতাম’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬১)। অন্য এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার উম্মত ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে অথবা মূল অবস্থায় থাকবে যতদিন তারা মাগরিবের নামাজ আদায়ে তারকা উজ্জ্বল হওয়া পর্যন্ত বিলম্ব না করবে’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৮)। অর্থাৎ যথাসম্ভব সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গেই মাগরিবের নামাজে দাঁড়িয়ে যাওয়া। বিলম্ব করা অনুচিত।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘আপনি অধিকহারে আপনার পালনকর্তাকে স্মরণ করুন। আর সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৪১)। তাফসিরবিদগণ বলেন, এই আয়াতে পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করা দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে নামাজ আদায় করা। এই আয়াতে ফজর ও মাগরিবের নামাজের প্রতি সবিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কারণ এ দুই সময়ে প্রকৃতিতে বড় দুটো পরিবর্তন হয়। দিন ও রাতের পালাবদল ঘটে। 

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে এবং সন্ধ্যায় নামাজ আদায় করতে মসজিদে যায় এবং যতবার যায় আল্লাহ তায়ালা ততবারই তার জন্য জান্নাতের মধ্যে মেহমানদারির উপকরণ প্রস্তুত করেন’ (বুখারি, হাদিস : ৬২২)। বর্ণিত আয়াত ও হাদিস থেকে সকাল-সন্ধ্যার ইবাদতের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলতের বিষয়টি প্রতীয়মান হয়। এমনকি উল্লিখিত হাদিস থেকে এও বোঝা যায় যে, মাগরিবের নামাজ অতি বরকতময় নামাজ। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কারও বাড়ির সামনে যদি একটি নদী থাকে এবং সে এই নদীতে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে, তা হলে কি তার শরীরে কোনো ময়লা থাকবে? 

সাহাবায়ে কেরাম বললেন, না, তার শরীরে কোনো ময়লা বাকি থাকবে না। অতঃপর তিনি বলেন, এটি হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের উপমা। এর মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাফ করে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৬৭)

পরকালে সাফল্য লাভের চাবিকাঠি হলো নিয়মিত নামাজ আদায় করা। পরকালে নাজাত পেতে হলে অবশ্যই দুনিয়ায় নামাজের প্রতি যত্নবান হতে হবে। নামাজি ব্যক্তিরাই পরকালে জান্নাতের স্থায়ী বাসিন্দা হবেন। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই সফলতা অর্জন করেছে মুমিনগণ, যারা তাদের নামাজে আন্তরিকভাবে বিনীত’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ১-২)। 

অন্য এক আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘যারা নিজেদের নামাজের হেফাজত করে, এরাই আল্লাহর জান্নাতে থাকবে সম্মানজনকভাবে’ (সুরা মায়ারিজ, আয়াত : ৩৪-৩৫)। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করে, উত্তমরূপে ওজু করে, সময়ের প্রতি খেয়াল রাখে, রুকু-সিজদা ঠিকমতো আদায় করে এবং এভাবে নামাজ আদায় করাকে নিজের ওপর আল্লাহ তায়ালার হক মনে করে, তবে জাহান্নামের আগুন তার জন্য হারাম করে দেওয়া হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ : ৪/২৬৭)

মাগরিবের ফরজ নামাজের পর সুন্নত নামাজের কথা হাদিসে বিদ্যমান রয়েছে। এমনকি এর ফজিলতও অপরিসীম। যে ব্যক্তি গুরুত্বের সঙ্গে মাগরিবের পরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করবে তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করা হয় (তিরমিজি, হাদিস : ৬৩৬২)। মাগরিবের নামাজের পর আরেকটি ফজিলতময় নামাজের কথা হাদিসে বর্ণিত রয়েছে। 

সেই নামাজ সম্পর্কে  রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ছয় রাকাত পড়বে তাকে ১২ বছর নফল ইবাদতের সওয়াব দান করা হবে’ (তিরমিজি, হাদিস : ৪৩৭)। পরিভাষায় যাকে আওয়াবিন নামাজ বলা হয়। আওয়াবিন সম্পর্কে দুটি ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। একটি হলো, মাগরিবের ফরজের পর সুন্নতসহ ছয় রাকাত নামাজ পড়লেই তা আওয়াবিন বলে গণ্য হবে। অন্য বর্ণনায় সুন্নতের পর ছয় রাকাতের কথা বলা হয়েছে। সুতরাং আমরা যেকোনো বর্ণনার ওপর আমল করলেই তা আদায় হয়ে যাবে। আল্লাহ আমাদের নেক আমলগুলো কবুল করুন।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close