খাগড়াছড়িতে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক সোহেল রানাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের সংঘর্ষে জেলা সদরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেল ৩টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা শুরু হয়।
শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পাহাড়ি ও বাঙালিরা খাগড়াছড়ি সদরে আবার মুখোমুখি অবস্থান নেন। দুই পক্ষই পৃথক মিছিল বের করে। সদরের মহাজনপাড়ার কয়েকটি দোকানেও ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া একটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খাগড়াছড়িতে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক নিহতের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা সদরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
নিহত শিক্ষক সোহেল রানা প্রতিষ্ঠানটির বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন ও সেফটি বিভাগের চিফ ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি সদরের খেজুরবাগান এলাকায়। এর আগে ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। ওই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়ার পর তিনি কিছুদিন কারাগারে ছিলেন। এরপর একই প্রতিষ্ঠানে তিনি যেন আবার যোগদান না করেন, সে জন্য শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছিল। আজ আবার তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠল।
এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর স্কুলটির শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে সোহেল রানাকে অধ্যক্ষের কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকে ১০–১৫ জন পাহাড়ি তরুণ অভিযুক্ত শিক্ষক সোহেল রানাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। এ সময় তাকে পুলিশসহ কয়েকজন রক্ষা করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল বাতেন মৃধা বলেন, উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে গিয়ে আমিও মার খেয়েছি। এখন ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। পরিস্থিতি বেশ উত্তেজনাকর।