ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

নোয়াখালীতে গণপিটুনিতে একজনের মৃত্যু
নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল
প্রকাশ: সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৮:১৩ এএম  (ভিজিট : ১৮৮)
নোয়াখালীর সদর উপজেলায় গণপিটুনিতে গুরুতর আহত মো. আবদুস শহীদ (৪৩) নামে এক ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গত শনিবার রাতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

পুলিশ বলছে, নিহত শহীদ সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে থানায় আটটি মামলা রয়েছে। অপর দিকে নিহত শহীদকে ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে এই দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে এই ঘটনায় স্থানীয় বিএনপির লোকজন জড়িত বলেও দাবি করা হয়। তবে নোয়াখালী জেলা বিএনপি বলছে, এ ঘটনায় বিএনপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। যে ব্যক্তি নিহত হয়েছেন তিনি একজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ছিলেন। স্থানীয়রা তাকে অস্থসহ আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করে।

গত শনিবার বিকালের দিকে উপজেলার পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের সূর্যনারায়ণপুর গ্রামের ইসমাইল মুহুরীর বাড়ি থেকে ৪ যুবককে ছাত্র-জনতা গণপিটুনি দিয়ে একটি পাইপগানসহ যৌথ বাহিনীর কাছে সোপর্দ করে। পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শহীদের মৃত্যু হয়। নিহত শহীদ উপজেলার পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের চরমটুয়া গ্রামের মমিন উল্যাহ মুন্সির ছেলে।  

এদিকে নিহত শহীদকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ১ মিনিট আট সেকেন্ডের ওই ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, পাকা মেঝেতে হাত ও বাহু বাঁধা অবস্থায় শহীদকে ভারী লাঠি দিয়ে পায়ের মাংসপেশিতে নির্মমভাবে পেটাচ্ছেন এক ব্যক্তি। আরেক ব্যক্তির এক হাতে মুঠোফোন অন্য হাত দিয়ে শহীদের হাতে বাঁধা রশি খুলছেন। এরপর লাঠি হাতে থাকা যুবক তাকে মাথায়, মুখে লাথি মারছেন।  পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার বিকালে উপজেলার পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইসমাইল মুহুরীর বাড়িতে স্থানীয় ছাত্র-জনতা ঘেরাও করে ১টি পাইপগানসহ আবদুস শহীদ (৪৩), মো. জামাল হোসেন (৪২), মো. জাবেদ (২৮) ও মো. রিয়াদ হোসেন (৩৬) নামে চারজনকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। এতে চারজনই আহত হন।

সূত্র আরও জানায়, জনতার হাতে অস্ত্রসহ গণপিটুনির খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর ১৬ রেজিমেন্ট আর্টিলারি ক্যাপ্টেন ইফতেখার আহমেদের নের্তৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। অভিযানে  জনতার হাতে আটক ওই চার ব্যক্তিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় এবং একটি পাইপগান জব্দ করা হয়। যৌথ বাহিনী আহত চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতেই শহীদ মারা যান। অন্য তিনজন একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
 
নিহত মো. আবদুস শহীদকে পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে জানানো হয়েছে, আবদুস শহীদকে পিটিয়ে মেরেছে বিএনপির সন্ত্রাসীরা। শহীদের মৃত্যুর আগে তাকে হাসপাতালে না নিয়ে অস্ত্রসহ গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ততক্ষণে তার জীবন প্রায় নেই বললেই চলে।  

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান বলেন, বিএনপির লোকজন এ ঘটনায় জড়িত কথাটি ঠিক নয়। শহীদ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ছিলেন। স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে মারধর করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করে।  

সুধারাম মডেল থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, ছাত্র- জনতা ঘেরাও করে চার দুর্বৃত্তকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে যৌথবাহিনী তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শহীদের মৃত্যু হয়। ওসি আরও জানান, নিহত শহীদের বিরুদ্ধে থানায় আটটি মামলা রয়েছে। তিনি থানার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী।


সময়ের আলো/আরএস/





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close