বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যারা শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিচ্ছেন তারা যদি তার কথা শুনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করেন তাহলে আখেরে ভালো হবে না। আর ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ফ্যাসিবাদের দোসর রেখে সংস্কার করলেও সফল হবে না।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী নগরীর ভুবন মোহন পার্কে দুপুরে ‘আমারা বিএনপি পরিবারের আয়োজনে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও আন্দোলনে আহত এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজিভী বলেন, ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ফ্যাসিবাদের দোসর এবং স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারকে টিকে রাখার জন্য যারা কাজ করেছিলেন তারা যদি থাকে, তাহলে তার সংস্কার কাজের উদ্দেশ্য সফল হবে না। এই বিষয়টি ড. ইউনূসকে স্মরণ রাখতে হবে।
ভারতকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে আপনারা আশ্রয় দিচ্ছেন ভালো কথা। কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যদি কোন হস্তক্ষেপ করেন তাহলে ফল ভালো হবে না। এটা নেপালও না ভুটানও না এটা বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনে হাজার হাজার নিরীহ ছাত্র জনতাকে হত্যা করেছে শেখ হাসিনা। তাকে আপনারা কিভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন? এটা ঠিক না। খুনি শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসররা এখনো দেশ অবস্থান করছে। এদের বিচার করতে হবে।
রিজভী বলেন, বিগত সরকারের আমলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাদের অস্ত্রের লাইসেন্স দিয়েছিল কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই লাইসেন্স বাতিল করেছেন। কিন্তু সেই অস্ত্র এখনও জমা দেয়নি এবং উদ্ধারও হয়নি। এগুলো উদ্ধার করতে হবে। না হলে তারা ঘাপটি মেরে থাকতে থাকতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। আবারও গণতন্ত্র হুমকির মধ্যে পড়তে পারে। কারণ হাসিনা সরকারের আমলে আমলা থেকে নেতাকর্মীদের হাতে অনেক অবৈধ টাকা রয়েছে।
এ সময় তিনি শেখ হাসিনা হাজার হাজার টাকা উন্নয়নের নামে ঋণ নিয়ে লোপাটের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ঘনিষ্ঠজনদের দিয়ে শেখ হাসিনা কালো টাকা আয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন বিদেশে সেই টাকা রেখে আসার জন্য। বিপদে পড়লে যেন তিনি নিতে পারেন। যারা তার পক্ষে ছিল তাদের তিনি অবাধে লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় মদদে শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় আওয়ামী লীগের নেতারা এস আলম গ্রুপ এবং তার দোসররা দেশের টাকা অবাধে লুটপাট করে বিদেশে প্রচার করেছে।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, আমারা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, উপদেষ্টা আলমগীর কবীর, বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য ফারজানা পুতুল, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য দেবাশিষ রায় মধু, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, সদস্য সচিব মামুনুর রশীদ মামুন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সমাবেশের শেষে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শহীদ পরিবার ও আহতদের মাঝে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে উপহার সামগ্রী তুলে দেন।
সময়ের আলো/আরআই