ক্যাম্পাসে রাজনীতি হবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কল্যাণমুখী বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব।
শনিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক নকীব বলেন, ক্যাম্পাসে রাজনীতির লক্ষ্য ও গুণগত মান উন্নয়নের জন্য কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। ছাত্র রাজনীতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমরা স্টেক হোল্ডারদের মতামত নেব। জুলাই বিপ্লব আমাদের শিখিয়েছে একক কোনো সিদ্ধান্ত কল্যাণ বয়ে আনে না। এই ক্যাম্পাসে রাজনীতি মুক্ত ও একস্ট্রা কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিসের সাথে জড়িত যেসব সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আছে আমরা তাদের সাথে আগে কথা বলব। তারপর ক্যাম্পাসের ছোট হোক বা বড় হোক যত রাজনৈতিক সংগঠন আছে তাদের সাথে বসব। এরপর ছাত্র সমন্বয়কদের সাথে বসে সবার মতামতের ভিত্তিতে একটা চূড়ান্ত কাঠামো তৈরি করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি ছাত্র রাজনীতি বন্ধ বা রাজনীতি বিলুপ্তির যে মতামত তৈরি হচ্ছে তা রাজনীতির বিরুদ্ধে না, এটা অপরাজনীতির বিরুদ্ধে। এতদিন যে রাজনীতি ছিল তাকে রাজনীতি বলা যাবে না, বরং তা হলো মাফিয়া তন্ত্র ও সিন্ডিকেট। এটা আমাদের ছাত্রসমাজকে অতিষ্ঠ করে দিয়েছে এবং অনেকে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কাজেই তারা যখন বলে রাজনীতি বন্ধ করতে হবে, তখন রাজনীতির নামে যে অপরাজনীতি হয়ে এসেছে সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বলে। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির নামে আর কোনো মাফিয়া তন্ত্র চলবে না।
রাকসু নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে গত ৩৪ বছর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধ পরিকর এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন বিষয়ে উপাচার্য বলেন, এসব বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে তা সংশ্লিষ্ট সেলে জানানো যেতে পারে। এসব অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত নীতিমালা রয়েছে। তার আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন জট নিরসনের অধ্যাপক নকীব বলেন, রাবিতে বর্তমানে পাঠদান ও পরীক্ষায় সেমিস্টার পদ্ধতি চলছে। অনিবার্য কারণে যে সেশন জটের সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ একাধিকবার চিকিৎসাধীন ছাত্রদের দেখতে গেছেন এবং ইতোমধ্যে অনেকই সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে।
উপাচার্য আরও বলেন, আবাসিক হলগুলোতে আসন বরাদ্দ বিধিবদ্ধ নিয়মে করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়া হলে খাবারের মান উন্নয়নের বিষয়েও কর্তৃপক্ষ হল প্রশাসনের সঙ্গে মিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা করছে।
মতবিনিময়কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামানিক, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. শেখ সা’দ আহমদ, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, ছাত্র-উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সময়ের আলো/আরআই