টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা সংস্কারে গ্রাহকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া ও অভিযোগ এবং মানসম্পন্ন নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) অ্যাসোসিয়েশনের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গ্রাহকের মতামত ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে এ দাবি জানানো হয়। একই সাথে গত দেড় মাসে ইন্টারনেট ডেটা ও ভয়েস কলের মূল্য হঠাৎ কেন বৃদ্ধি পেল এর ব্যাখ্যা কমিশনের কাছে চেয়েছে সংগঠনটি।
গণশুনানিতে প্রধান অতিথি বক্তব্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সাবেক সদস্য মুকুল ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকারের উচিত টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা সংস্কারে গ্রাহকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া ও অভিযোগ এবং মানসম্পন্ন নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ ঘোষণা করা। সেটা হতে পারে ১৫ দিন এক মাস কিংবা দুই মাস।
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসের বলেন, টেলিযোগাযোগ সেবার ইকোসিস্টেমের প্রতিটি ধাপে ধাপে যে লুণ্ঠন হয় সেটি কমাতে পারলে এখনই ১০ থেকে ১২ শতাংশ মূল্য কমানো সম্ভব। প্রতিযোগিতার কথা বলা হলেও এ সেবায় প্রতিযোগিতা নেই। নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত দেড় মাসে ইন্টারনেট ডেটা ও ভয়েস কলের মূল্য হঠাৎ কেন বৃদ্ধি পেল এর ব্যাখ্যা কমিশনের কাছে চাই। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মেসেজের চার্জ হঠাৎ ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি কেন পেল, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জবাব চাই। দেশের শতভাগ গ্রাহকের দাবি, মেয়াদহীন ইন্টারনেট ডেটা চালু রাখা। তার প্রতি উপদেষ্টা, বিটিআরসি এবং অপারেটর সম্মান প্রদর্শন না করলে আগামী দিনে ইন্টারনেট ডেটা বয়কটের মতো কঠিন কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করব।
সাধারণ সম্পাদক আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, বিগত সরকারের সময় মন্ত্রণালয় যেভাবে ছিল এখনো তাই আছে। পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ আমরা দেখছি না।
জলাধার রক্ষা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ ইবনে রানা বলেন, ইন্টারনেট আর পানির মধ্যে এখন খুব একটা পার্থক্য নাই। পানি ছাড়া যেমন জীবন চলে না ইন্টারনেট ছাড়াও তেমন আর জীবনে চলে না। তাই ইন্টারনেট সহজ প্রাপ্তির জন্য সব উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রায় ১৫ জন গ্রাহক। তারা বলেন, কল ড্রপ, মিউট কল, ইন্টারনেটে ধীর গতি, টাকা কেটে রাখা, হঠাৎ করে টাকা উধাও হয়ে যাওয়া, বিদ্যুৎ গেলেই নেটওয়ার্ক না থাকা, মোবাইল ব্যাংকিং এর উচ্চ সার্ভিস চার্জসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেন। অনেক বক্তা অপারেটরদের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা ও সুবিধা কত তা প্রকাশের দাবি জানান।
আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান শাশ্বত মনির, ডাক্তার আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
সময়ের আলো/জেডআই