ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নবীনগরে জমে উঠেছে ধানের চারার হাট
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১১:৫৩ পিএম  (ভিজিট : ৩৪৪)
চলছে রোপা আমন আবাদের মৌসুম। অনেক কৃষকই আবাদ শুরু করেছেন, আবার অনেকে শেষ সময়ে চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার অনেকেই খুঁজছেন চারার সন্ধান। অন্যদিকে বিভিন্ন রোগ-বালাই ও অতিবৃষ্টি এবং হঠাৎ বন্যায় রোপা আমন বীজতলাসহ সব তলিয়ে যাওয়ার কারণে অনেক বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এসব কৃষকদের একটা বড় অংশের ভরসা এখন নবীনগর-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের বাঙ্গরা চারা বিক্রির হাটের ওপর। এই হাট থেকে চারা কিনে জমিতে রোপণ করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকসহ আশপাশের জেলা থেকে চাষিরা এ বাজারে ধানের চারা কিনতে আসেন। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পদচারনায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মুখরিত থাকে এই হাট। প্রতিদিন ভোরে বিক্রেতারা চারা নিয়ে এসে আঁটি হিসেবে গড়ে ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করেন। এক বিঘা জমি আবাদের জন্য ১০০ থেকে ১১০ আটি প্রয়োজন, এতে খরচ পড়ে গড়ে ১৫০০ টাকা ১৭০০ টাকা।

চারা কিনতে আসা বুড়িচং উপজেলার জগতপুর গ্রামের ইয়াছিন ভূইয়া নামের একজন কৃষক জানান, প্রতি বছরই তিনি এই হাট থেকে ধানের চারা কেনেন। বিআর-২২ জাতের ১০০ আটি চারা ১৫০০ টাকায় কিনেছেন। এক কানি (৩০ শতাংশ) জমিতে এই চারা রোপণ করবেন। গত বছরের তুলনায় এবার চারার দাম একটু বেশি।

রোপা আমন আবাদের জন্য বাঙ্গরা হাটে চারা কিনতে আসা মো. গিয়াস মাহমুদ বলেন, আমাদের যে চারা ছিল তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় হাট থেকে চারা কিনতে হচ্ছে। ৪৫ শতক জমি রোপণের জন্য চারা কিনতে আসছি।

মো. মহসিন আলী বলেন, চারা কিনতে এসেছি আমার পছন্দের জাত বিনা ১৭ এবং বিআর ২২, এখান থেকে প্রতি বছর ধানের চারা ক্রয় করি। ব্যস্ততা থাকায় চারা তৈরি করা আমার জন্য কঠিন।

চারা বিক্রেতা ইব্রাহিম ইউনিয়নের মো. কাউছার বলেন, আমার জমিতে এই মৌসুমে তিনবার বীজতলা তৈরি করা হয়। চারার বয়স ১৮ থেকে ২০ দিন হলেই বিক্রির উপযোগী হয়ে যায়। প্রতি বিঘা বীজতলা থেকে খরচ বাদে এই মৌসুমে দেড় মাসেই ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করা যায়।

চারা বিক্রি করতে আসা জিনোদপুর ইউনিয়নের আব্দুল মান্নান বলেন, এবার ২ কানি জমিতে ধানের চারা করেছি। এই হাটে বিআর-২২, খাসা, বিনা ধান-৭সহ বিভিন্ন জাতের ধানের চারা বিক্রি করি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয়ে অক্টোবরের মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। বিনাধান ১৭, বিনাধান ০৭, বিআর ২২, বিআর ২৩, ব্রিধান ৭৫সহ স্থানীয় বিভিন্ন রোপা আমন ধানের চারা পাওয়া যায়। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ গাড়ি ধানের চারা বেচাকেনা হয় এই হাটে। এতে ক্রেতা-বিক্রিতা উভয়েই লাভবান হয়।

এই বছর সীমান্তবর্তী জেলা কুমিল্লা জেলার গোমতী বাধ ভেঙে যাওয়ায় বুড়িচং, ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলার রোপা আমন শতভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চারার চাহিদা আকাশচুম্বী। অন্যদিকে ফেনী, লক্ষীপুর, নোয়াখালী জেলাতে বন্যার প্রভাবে চারার চাহিদা দেখা দিয়েছে ফলে এই হাটে অন্যান্য জেলা থেকে এই বছর বিভিন্ন কৃষক, সামাজিক সংগঠনের ভীড় বেড়েছে। প্রতিবছর এই হাট থেকে প্রায় এক কোটি টাকার চারা ক্রয় বিক্রয় হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন এই হাট সম্পর্কে বলেন, নবীনগর উপজেলায় অনেক কৃষক বীজতলায় চারা প্রস্তুত করে বিভিন্ন হাটে বিক্রি করে থাকেন। বিশেষ করে যাদের বীজতলা করার জায়গার অভাব রয়েছে তাদের জন্য এই হাট আস্থার জায়গা। 

তিন আরও জানান, উপসহকারী কৃষি অফিসারদের মাধ্যমের চারার কৌশল শিখানো হচ্ছে, এসব চারার গুণগত মান অনেক ভালো। কৃষকদের বেশি বয়সের চারা না কেনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close