ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

নোয়াখালীতে ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫:২২ পিএম  (ভিজিট : ১৮৬)
আবারো টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীতে বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছে জেলার বানভাসিরা। উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে তাদের মাঝে। জেলায় পানিবন্দি হয়ে আছে এখনো প্রায় ১২ লাখ মানুষ। জেলার সদর, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলায় এখনো বেশি পানিতে নিমজ্জিত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বৈরী আবহাওয়া কবলে পড়ে টানা বৃষ্টির কারণেই জনজীবনে স্থবিরতা বিরাজ করছে। অফিসগামী বা জীবিকার তাগিদে নিন্ম আয়ের শ্রমজীবী ছাড়া জরুরি প্রয়োজন ব্যতিত কেউ ঘর থেকে তেমন বের হচ্ছেনা। এছাড়া টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে বেড়ে গেছে জলাবদ্ধতা।  নিন্মাঞ্চলগুলোতে বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় জলাবদ্ধতার পানি নামছে না। নতুন করে বৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে।

সদর উপজেলার নেওয়াজপুর এলাকার শাকের আহমেদ বলেন, আমাদের এলাকায় বন্যার পানি তেমন নামেনি। সর্বত্রই হাঁটু বা তার চেয়ে একটু কম পরিমাণ পানি রয়েছে। তার উপর আবার টানা বৃষ্টিতে পানি বেড়ে গেছে। জনজীবন স্বাভাবিক না। রাস্তার অবস্থাও তেমন ভালোনা। যানবাহন চলাচল করেনা এই সড়কে। ফলে পানির সাথে যুদ্ধ করে চলতে হচ্ছে আমাদের।

কাদিরহানিফ ইউনিয়নের মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, পানি আবার বাড়ছে। পানি নামার রাস্তা বন্ধ। টানা বৃষ্টি হওয়ায় সব ধরনের কাজ বন্ধ। জনজীবন একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

পূর্ব লক্ষীণারায়নপুর গ্রামের রুস্তম আলী বলেন, আমরা শহর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে। কিন্তু মনে হয় আমরা কোনো এক অজপাঁড়া গ্রামে বা চরাঞ্চলে বসবাস করছি। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে আসার পরে থেকে পানির সাথে যুদ্ধ করছি। আজ একটু কমে, কাল আবার বৃষ্টি হলে তার ডাবল বাড়ে। ঘর-বাড়ি বসবাসের অনুপযোগী। রান্নার সমস্যা হচ্ছে। নিন্ম আয়ের, তাই গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের সামর্থ্য নেই।

বেগমগঞ্জ উপজেলার মিজানুর রহমান বলেন, গত বেশ  কিছু দিতো পানি কমেছিলো। অবিরাম বৃষ্টিতে রাস্তা এবং বাসা বাড়ি পানির নিচে চলে গেছে। ফলে বন্যা বার জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির চরম অবনতি হচ্ছে।

সেনবাগ উপজেলার মাহবুবুর রহমান বলেন, কয়েকটি ইউনিয়নের নিচু জায়গায় পানি জলাবদ্ধতা আকারে ছিলো। টানা রোদে অবস্থার মোটামুটি উন্নতি হচ্ছিলো। কিন্তু গত দু’দিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে আবার পানি বেড়ে গেছে। জনজীবন স্থবির হয়ে আছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ কম বের হচ্ছে।

জেলা প্রশাসকের তথ্য মতে, নোয়াখালীর ৮ উপজেলার ৮৭ ইউনিয়নের প্রায় ১২ লাখ ৫ হাজার ৩০০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। ১২৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৯ হাজার ৩২০ জন মানুষ।

জেলা আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গত দুদিনের টানা বৃষ্টিতে নোয়খালীতে পানি আবার বেড়ে গেছে। এছাড়াও সামনে আবার বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস রয়েছে। বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ইতিমধ্যে ৫৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা, ১ হাজার ৭৭৩ মেট্রিকটন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৫ লাখ টাকার শিশুখাদ্য ও ৫ লাখ টাকার গোখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। এখনও সাড়ে ১৭ লাখ টাকা, ২৬ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকার শিশুখাদ্য ও ১০ লাখ টাকার গোখাদ্য মজুদ রয়েছে। বানভাসি কোনও মানুষ যাতে খাদ্যের জন্য কষ্ট না পায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close