ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত সাইমনের মা
এশার নামাজে গিয়ে আর ফেরেনি ছেলে
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:১১ এএম  (ভিজিট : ১৫৬)
এশার নামাজ পড়তে গিয়ে আর ঘরে ফেরেনি সাইমন। ফিরেছে তার নিথর মরদেহ। ২০ সেপ্টেম্বর রাতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার মকিমাবাদ বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের বলি এই কিশোর। সাইমনের মা বিউটি আক্তার বারবার ভেঙে পড়ছিলেন কান্নায়। কিশোর ছেলের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি। তার একটাই প্রশ্ন, কোন অপরাধে তার ছেলেকে হত্যা করা হলো!

বিউটি জানান, প্রতিদিনই এশার নামাজ আদায় করতে মসজিদে যেত সাইমন। যাওয়ার সময় মাকে বলে যেত। ‘সেদিনও মসজিদে গেছে। কিন্তু আমার কাছে বলে যায়নি। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না এলাকায়। রাত ৮টার পর স্থানীয় হাসপাতালে গিয়ে দেখি, তার শরীর রক্তভেজা।’ বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাইমনের মা।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সাইমনের গ্রামের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের দিকদাই গ্রামের সরদার বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়। সাইমন হত্যার ঘটনায় তার মামা পরিচয় দিয়ে জনৈক সাইফুল ইসলাম হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ওসি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক। তিনি বলেন, মামলায় ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

বিউটি আক্তার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘স্বপ্ন ছিল ছেলে কুরআনের হাফেজ হবে। যে কারণে গত দুই বছর আগে এলাকার সাউদুল কুরআন হিফজ মাদরাসায় ভর্তি করাই তাকে। সেখানে হেফজ বিভাগে পড়াশোনা করত সাইমন। কিন্তু ছেলে আমার বেঁচেই রইল না।’ 

বিউটি জানান, সাইমনের বয়স যখন ৯ বছর, তখন তার বাবা সাইফুল ইসলাম তাদেরকে ছেড়ে চলে যান। ‘তিনি অন্যত্র বিয়ে করেন। আমার সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদ হয়। ওই বয়সে সাইমনকে নিয়ে আমি বাবার বাড়ি চলে আসি। গত ৩ বছর আগে মো. ইউনুছের সঙ্গে বিয়ে হয় আমার।’

মো. ইউনুছ বলেন, ‘সাইমুন হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক জামে মসজিদে এশার নামাজ পড়তে আসে। আমিও সেখানে এশার নামাজ আদায় করতে যাই। ৪ রাকাত নামাজ শেষে একজন পরিচিত ব্যক্তি ফোন দিয়ে জানালো সংঘর্ষে সাইমন আহত হয়েছে। তখন দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে অনেক কষ্ট করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাই। সেখান থেকে কুমিল্লা রেফার করে। রাতেই কুমিল্লা থেকে পাঠায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসারত অবস্থায় শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ৭টায় সাইমন মারা যায়।’ 

মো. ইউনুছ আরও বলেন, ‘সেখানে হাসপাতালের খরচ আসে সব মিলিয়ে প্রায় ৭২ হাজার টাকা। অভাবের সংসারে আমাদের সামর্থ্য না থাকায় এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে ঢাকা থেকে চাঁদপুরে আসি।’ 

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close