ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নির্মাণ ব্যয় প্রায় ছয় কোটি টাকা
ছয় বছরেও চালু হয়নি পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগার
প্রকাশ: রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৩:১২ এএম  (ভিজিট : ১৯৬)
নির্মাণের ছয় বছর পরও আজ অবধি চালু হয়নি জয়পুরহাট পৌরসভার আধুনিক স্যানিটারি ল্যান্ডফিল ও পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগার। জয়পুরহাট পৌর শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে আধুনিক পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগারটি চালু না হওয়ায় পৌর সংশ্লিষ্টদের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগারটি চালুর দাবি এলাকাবাসীর। তারা বলছেন, শহরের ময়লা-আবর্জনা শহর থেকে তুলে পাহারপুর রোডের খনজনপুর এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে পৌরসভার ভাগাড়ে ফেলা হয়। এতে ব্যাপক দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণ হওয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানে হিচমী-হিলি বাইপাস-সংলগ্ন কড়ই কাদিরপুরে নির্মিত স্থায়ী পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগারটি দ্রুত চালুর আশ্বাস দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। 

এ বিষয়ে জয়পুরহাট পৌরসভার প্যানেল মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস ঝর্ণা বলেন, জয়পুরহাট পৌরসভার ময়লা আবর্জনা খনজনপুর এলাকার রাস্তার পাশে ফেলা হয়। এতে দুর্গন্ধে সাধারণ জনগণ রোগে আক্রান্ত হন ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন। এই ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য স্থায়ীভাবে কাদিরপুর এলাকায় আধুনিক স্যানিটারি ল্যান্ডফিল ও পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ করা হলেও সেটি এখনও চালু হয়নি। বিগত সরকারের আমলে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা কেন চালু করার পদক্ষেপ নেননি? এখন নতুন প্রশাসক দায়িত্ব নিয়েছেন। তার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সময়ে কীভাবে চালু করা যায় সেই চেষ্টা করা হবে। 

জয়পুরহাট পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মিজানুর রহমান বলেন, এখানে একটি কার্যক্রম চালু আছে। শহরের বর্জ্য সংগ্রহ করার পর সেখানে ফেলা হয় না। কারণ সেখানে বিভিন্ন বর্জ্য, পলিথিন, প্লাস্টিক বা অন্যান্য আবর্জনাগুলো বাছাইয়ের জন্য প্রযুক্তি নেই। এ কারণে চালু করা সম্ভব হয়নি। 

জয়পুরহাট পৌরসভার পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগারের দায়িত্বে থাকা কর্মচারী ফারুক হোসেন বলেন, এই প্রকল্পের শুরু থেকে আমি আছি। কাজ শেষ হয়েছে ছয় বছর আগে। কিন্তু কবে এটা চালু হবে আমি বলতে পারব না। এটা পৌরসভার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে। তারা আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেয় আমরা সেভাবে চলি। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তৃতীয় নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ সেক্টর প্রকল্পের আওতায় জয়পুরহাট পৌরসভার আধুনিক স্যানিটারি ল্যান্ডফিল ও পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগারের কাজ ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট শুরু হয়। এর আগে ৪ দশমিক ৯০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয় ১ কোটি ৩৯ লাখ ৮২ হাজার ৯২২ টাকায়। এরপর ৫ কোটি ৭১ লাখ ৮০ হাজার ১০০ টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণের পর থেকে এই পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগারটির কার্যক্রম দৃশ্যমান দেখতে পাননি এলাকাবাসী। শহরের যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা তুলে পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগারটিতে না ফেলে ফেলা হয় পাহাড়পুর রোডের খনজনপুর এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা পৌরসভার ভাগাড়ে। সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগারটি চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। দ্রুত চালু করে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত শহর গড়ার দাবি জানান এলাকাবাসী। 

পাহারপুর রোডে পৌরসভার খনজনপুর ময়লার ভাগাড় এলাকার পথচারী মাহবুব হাসান, মোস্তাকিম ও রাজু আহম্মেদ বলেন, ময়লার ভাগাড়ের পাশের এই সড়ক দিয়ে ঐতিহ্যবাহী পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারসহ নওগাঁ, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর এলাকার যানবাহন ও সাধারণ মানুষ চলাচল করে। কিন্তু যাওয়া-আসার সময় যে দুর্গন্ধ তাতে দম বন্ধ হয়ে যেতে চায়। স্থানীয় বাসিন্দা শহিদুল, মারুফা আক্তার, মর্জিনাসহ আরও অনেকে বলেন, এই ময়লার ভাগাড়ের কারণে আমাদের চরম সমস্যা। প্রায় ২০ বছর ধরে শহরের সব ময়লা-আবর্জনা এই ভাগাড়ে ফেলা হয়। দুর্গন্ধে আমাদের বসবাস করা অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ছোট বাচ্চাদের আরও সমস্যা। আমাদের স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। অথচ কয়েক বছর আগে কাদিরপুরে কোটি কোটি টাকা খরচ করে পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ করে ফেলে রাখা হয়েছে। 

কড়ই কাদিরপুর এলাকার আনোয়ার সাদাত, মনোয়ার হোসেন ও আবদুল মুমিন বলেন, পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগারটি নির্মাণ করার পর ৫-৬ বছর হলো পড়ে আছে। এখানকার কোনো কাজ আমরা দৃশ্যমান দেখিনি। সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ করার পর ফেলে রাখা হয়েছে। পৌরসভার গাফিলতির কারণে এটি চালু হয়নি। পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগারটি চালু হলে এলাকা উন্নত হবে, কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অবশ্যই এটি তদন্ত করা দরকার কেন চালু হলো না।

সময়ের আলো/আরএস/ 





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close