ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

দফায় দফায় বৈঠক করছে হাইকমান্ড
নির্বাচন ঘিরে গুরুত্ব পাচ্ছে বিএনপির তৃণমূল
প্রকাশ: শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৭:১৩ এএম  (ভিজিট : ৪২৪)
সরকার পতনের পর থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তৃণমূলের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন। বিভিন্ন জেলায় সমাবেশের আয়োজন করে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখছেন। সাংগঠনিকভাবে বিভাগ ও জেলার দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন দফায় দফায়। তাদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। নির্বাচন ঘিরে হাইকমান্ডের এমন তৎপরতা চোখে পড়েছে।

তৃণমূল নেতারা বলছেন, তারেক রহমান সবসময় তৃণমূলকে গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। আন্দোলন থেকে শুরু করে যেকোনো কর্মসূচি পালনে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে সংগঠনকে ঢেলে সাজাচ্ছেন। আন্দোলন কর্মসূচিতে সক্রিয়দের সামনে আনা হচ্ছে। নিষ্ক্রিয়দের সাইড বেঞ্চে রাখা হচ্ছে।

তারা বলেন, তারেক রহমানের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রশংসা কুড়িয়েছে সবখানে। বিশেষ করে উৎপাদন উন্নয়নের রাজনীতির প্রতিশ্রুতি বিশেষ আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে। তার বক্তব্যে তৃণমূল নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছেন।

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল সময়ের আলোকে বলেন, বিএনপি নির্বাচনমুখি দল। এখন আমাদের একটাই লক্ষ্য নির্বাচন। মানুষ এক যুগ ধরে ভোট দিতে পারছেন না। তাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই চলমান আছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আমরা সেই লড়াইয়ের মাঠে আছি। অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের দিকে নিয়ে যেতে হবে। হাইকমান্ড আমাদের আগের চেয়ে বেশি মাঠে থাকার নির্দেশনা দিচ্ছেন। সিরাজগঞ্জ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান সময়ের আলোকে বলেন, আমাদের বিরোধী দলে থেকেই মাঠে থাকতে হবে। নির্বাচন আদায় করে নিতে হবে। সে জন্য এই সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে। যাতে প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে সরকার দ্রুত নির্বাচনের দিকে যেতে পারে। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে আমাদেরকেই। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সেই নির্দেশনা দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, তৃণমূলকে সতর্ক থাকার কথা বলেছেন তারেক রহমান। তিনি সবসময় তৃণমূলকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তৃণমূলকে আরও সুসংগঠিত করতে চেষ্টা করছেন। নেতৃত্বে গুণগত পরিবর্তন আনতে ইতিমধ্যে দুটি জেলায় কমিটি দিয়েছেন। চাঁদাবাজ-দখলদারদের নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। যত বড় নেতাই হোক কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না। আমাদের বলেছেন অপকর্মকারীদের আইনের কাছে সোপর্দ করতে। আমাদের সঙ্গে হাইকমান্ড বিভাগীয় বৈঠক করেছেন। সামনে আরও বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মঈনুল হাসান সাদিক সময়ের আলোকে বলেন, কোনোভাবেই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না। আমাদের কোনো কর্মকাণ্ডে যাতে জনগণ বিরক্ত না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। নির্বাচন আদায়ের জন্যই মাঠে কাজ করতে হবে। পতিত সরকারের দোসররা যাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করতে না পারে সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপির হাইকমান্ড বরাবরই তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। তৃণমূলকে শক্তিশালী করার জন্য নানা দিকনির্দেশনা তিনি দিচ্ছেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিভিন্ন জায়গায় বলেছেন, বিগত সময়ে বিএনপির দুঃসময়ে তৃণমূল নেতাকর্মীরাই দলের পক্ষে থেকে সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করেছেন। এক/এগারোর সময় ষড়যন্ত্র হয়েছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। ষড়যন্ত্র ছিল বিএনপির বিরুদ্ধে, সে সময় তারা বিএনপিকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু তৃণমূল নেতাকর্মীদের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থেকে সে সময় সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেছেন। তৃণমূল নেতাকর্মীরা হলেন বিএনপির প্রাণ। রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের জন্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের আচার-আচরণেও গুণগত পরিবর্তন জরুরি। তাই আমার আহ্বান কোনো প্রলোভন কিংবা উসকানিতে বিভ্রান্ত না হয়ে জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র এবং সমাজের নেতৃত্ব দানের জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখুন।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার কাংখিত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার এই যাত্রাপথে বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিকে হয়তো আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আরও কিছু পথ পাড়ি দিতে হবে। তবে সেই পথ সন্ত্রাস-সংঘর্ষ-প্রতিশোধ কিংবা প্রতিহিংসার নয়। সেই পথ হবে ধৈর্য-সহনশীলতা এবং সমঝোতার।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সংসদ এবং সরকার প্রতিষ্ঠাই এই সরকারের সব সংস্কার কার্যক্রমের প্রথম এবং প্রধান টার্গেট হওয়া জরুরি।

তারেক রহমান যেখানেই দলের অপকর্ম দেখছেন সেখানেই শোকজ-বহিষ্কার এমনকি মামলা দেওয়ার নির্দেশনাও দিচ্ছেন। তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে দলের সাংগঠনিক অবস্থার পাশাপাশি অপকর্মকারীদের তথ্য নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অন্তত দশটি এজাহারও দায়ের করা হয়েছে। দলের নাম ব্যবহার করে অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এরই মধ্যে সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার কিংবা পদ স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া অনেককে শোকজ করা হয়েছে। এ তালিকায় স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদক থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতারা রয়েছেন।

অন্যদিকে জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাংগঠনিক সফরে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা পরিহার করতে বলা হয়েছে। সে সঙ্গে রঙিন ব্যানার-ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনের ওপরে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। এরপর থেকে তৃণমূলে দৃশ্যপট বদলাতে শুরু করেছে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close