ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ নাটোরবাসী
প্রকাশ: রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৯:৩১ এএম  (ভিজিট : ২৬৪)
নাটোরে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোড শেডিং এ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রখর তাপদহের সাথে পাল্লা দিয়ে করা হচ্ছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১২-১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং এর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জেলার গ্রামাঞ্চলের মানুষদের। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না পাওয়ায় ১ ঘণ্টা অথবা দু’ঘণ্টা পর পর লোডশেডিং করতে হচ্ছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, নাটোর জেলার লালপুরে দিনে-রাতে সর্ব্বোচ্চ ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না।

জেলার লালপুরের অটো চালক রবিউল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন ধরে যে হারে লোডশেডিং হচ্ছে ভ্যানের ব্যাটারি ঠিকমতে চার্জ দিতে পারছি না। অটো চালিয়ে সংসার চলে। ভাড়া খাটতে পারছি না। এখন সংসার চালানোই দায়। রাতে তিন-চার বার কোন কোন দিন ৫ বারও লোডশেডিং হয়।

এদিকে সিংড়া উপজেলার পুঠিমারী গ্রামের কৃষক ও এলএলপি সেচ মটরের ড্রাইভার মোক্তার আলী জানান, বেশ কিছুদিন অতিমাত্রায় লোড শেডিং হয়েছে। এতে বর্ষা মৌসুমে ধান চাষে জমি তৈরি করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। তবে আগের তুলনায় বিদ্যুতের যে ঘন ঘন লোড শেডিং গতকাল থেকে কমেছে।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর লালপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম রেজাউল করিম বলেন, চাহিদার তুলনায় প্রতিদিন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি থাকছে। দিনে চাহিদা ১৮ মেগাওয়াট, পাওয়া যাচ্ছে ৯-১০ মেগাওয়াট। একইভাবে রাতে ২৬ মেগাওয়াটের স্থলে মিলছে ১২ থেকে ১৪ মেগাওয়াট। এজন্য এক ঘণ্টা পর পর লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম ও বাগাতিপাড়ায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা শেডিংয়ের করা হচ্ছে। গুাংদাসপুর ৩৩ কেভি ফিডারের বর্তমান চাহিদা ২৩ মেগাওয়াট। বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ২৪ ঘণ্টায় ১০ ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হচ্ছে।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, প্রতিদিনে ৮৩ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ৩৫ শতাংশ কম বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। এছাড়া রাতে ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কম পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে। যখন যেমন সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে তখন সেভাবেই বিতরণ করা হচ্ছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু এলাকায় লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় করা হচ্ছে।

এদিকে চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া উপজেলায় প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টালোড শেডিং করা হচ্ছে। নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সিংড়ার জোনাল অফিসের ভারপ্রাপ্ত এজিএম আতাউর রহমান জানান, সিংড়া উপজেলায় প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৩৫ মেগাওয়াট। পাওয়া যাচ্ছে ১৮ মেগাওয়াট। সরবরাহ কম থাকায় এখন প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা লোড শেডিং করতে হচ্ছে।

অপরদিকে নাটোর সদর ও নলডাঙ্গা উপজেলায় প্রায় ১১ ঘণ্টা লোড শেডিংয়ের করা হচ্ছে। গ্রাহকদের অভিযোগ কখনও ১ ঘণ্টা কখনও ২ ঘণ্টা লোড শেডিং করা হয়। দিন ও রাতে অন্তত ৫ বার লোড শেডিং করা হচ্ছে। এভাবে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোড শেডিংয়ের শিকার হয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মোঃ ফকরুল আলম জানান, নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর দিন রাতের বর্তমান চাহিদা ১০০ থেকে ১২৩ মেগাওয়াট। সেখানে দিনে পাওয়া যায় ৫০ থেকে ৬০ মেগাওয়াট। আর রাতে ১০০ মেগাওয়াট পাওয়া যায়। চাহিদার ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ কম সরবরাহ পাওয়ার কারণে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা লোড শেডিং করতে হচ্ছে। এদিকে নাটোর জেলা শহরে প্রতিদিন ১ থেকে ২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লোড শেডিং করা হচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিপণন কেন্দ্র নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) নাটোর অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী বিলাস কুমার আগরওয়ালা জানান, নাটোর শহরের ৩৫ হাজার গ্রাহকের জন্য চাহিদা রয়েছে ১২ মেগাওয়াট। বর্তমানে ৯ থেকে ১০ মেগাওয়াট। ১০টি ফিডারের মাধ্যমে সরবরাহ পাওয়া বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মাঝে বিতরণ করা হয়। সহনীয় মাত্রায় লোড শেডিং করা হচ্ছে।


সময়ের আলো/এএ/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close