সীমান্তে ফেলানীর মত কাউকে আর ঝুলে থাকতে দেখতে চাই না: সারজিস

প্রকাশ: শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১০:১৯ পিএম (ভিজিট : ১৫৬)

আমাদের চারপাশে যে সীমান্ত রয়েছে সেসব সীমান্তে ফেলানীর মত আর কাউকে ঝুলে থাকতে দেখতে চাইনা বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম।

তিনি বলেন, যদি আজকের পর থেকে এমন কোন ঘটনা ঘটে তাহলে হয় তাদের উপযুক্ত বিচার করতে হবে নাহলে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতা ওই রাষ্ট্র গুলোকে কিভাবে জবাব দিতে হয় তা আবার আমাদের দেখিয়ে দিতে হবে। আমাদের সুনির্দিষ্ট বার্তা, আগামীর বাংলাদেশের যে পররাষ্ট্রনীতি হবে তা হবে ছাত্র-জনতার মতামতের ভিত্তিতে। আমরা কোন স্বামী-স্ত্রী পররাষ্ট্রনীতি চাইনা।

গণঅভ্যুত্থানে ঠাকুরগাঁওয়ে শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ শেষে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় বড় মাঠ প্রাঙ্গণে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র নাগরিক মতবিনিময় সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস বলেন, আমরা যে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলছি তা আমাদের নিজ বাড়ি নিজ পরিবার থেকে করতে হবে। যে দালালরা অবৈধ ভাবে ইনকাম করছে তারা প্রত্যেকেই কেউ না কেউ আমাদের প্রত্যেকের পরিবারের অংশ। ফ্যাসিবাদী দালালি সিস্টেম গুলি যদি আমরা আমাদের পরিবার থেকে, আমাদের ঘর থেকে দূর করতে পারি তাহলেই আমরা রাষ্ট্র সংস্কার করতে পারবো।

‘দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে সন্তানদের ভালো ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, জজ, ব্যারিস্টার বানানোর পাশাপাশি ভালো মেধাবী রাজনীতিবিদ বানানোর মানসিকতা থাকতে হবে। আমাদের প্রতিটি জিনিস ওই সংসদ থেকে নির্ধারিত হয়। তাই ওই সংসদে আমাদের আপনাদের মত যোগ্য ব্যক্তিরা বসতে না পারে তবে অর্থবৃত্তরা বসে বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ যে করাপটেড সিস্টেম তৈরি করেছে তার আবারও চিত্রায়ন দেখা যাবে।’

বিগত ১৬ বছরে হাসিনা সরকার যে ফ্যাসিবাদী নষ্ট সিস্টেমগুলি তৈরি করেছে, এই সিস্টেমগুলি বাংলাদেশে বর্তমান প্রজন্ম চায় না বলেই তাদের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। যে হাসিনাকে আপনারা সকলে মিলে ১৬ বছর ধরেও পতন করাতে পারেননি, আমরা তা পেরেছি বলে মন্তব্য করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক।

সারজিস আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের নির্বাচনের বিষয় নিয়ে বলা হয় যে, ঠাকুরগাঁওকে নির্বাচিত হবে তা নির্ধারণ করে আমাদের হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাই বোনেরা। তাহলে নতুন স্বাধীনতার পর তাদেরকে কেন ওই ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্তের দিকে ঝুঁকতে হবে আর কেন বা আপনাদের চলে যেতে হবে। আপনাদের এ দুর্বলতা আপনারা নিজেরাই সৃষ্টি করেছেন। কারণ সারা জীবন আপনাদের ভোটটি একটি মার্কার জন্য ফিক্সড করে রেখেছেন। আপনি যখন একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফিক্সড হয়ে যান তখন আপনার মূল্য কমে যায় এটাই স্বাভাবিক।

সমন্বয়ক সারজিস বলেন, এখানে বালিয়াডাঙ্গিতে যে দবিরুল এমপিকে বারবার নির্বাচিত করেছেন সেই আপনাদের ভূমি দখল করেছে। শুধু তাতেই ক্ষান্ত থাকেননি। চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেম্বার সব জায়গাতেই তারা পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছে। আমাদের এ ছাত্র জনতা পরিবারতন্ত্রকে কোনভাবেই মেনে নেয় না নেবে না। আমরা স্পষ্ট করে একটা কথা বলতে চাই, বাংলাদেশের যা কিছু হবে তা ছাত্র-জনতার রায় থেকে হবে, কোন পরিবারতন্ত্র থেকে না কোন ফ্যাসিবাদ সিস্টেম থেকে নয়।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক মিশু আলী সুহাস, রকিব রানা মাসুদ সহ অন্যান্যরা। এছাড়াও মতবিনিময় সভায় ঠাকুরগাঁওয়ে নিহত এবং আহত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সময়ের আলো/আরআই