ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

গাজীপুরে মাজার ভাঙচুর-লুটপাট, অগ্নিসংযোগ
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৯:২৭ পিএম  (ভিজিট : ৪৮২)
গাজীপুর মহানগরের সালনা পোড়াবাড়ি এলাকায় ফসি পাগলার মাজারে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর স্থানীয় বিভিন্ন মসজিদের কয়েকশ’ মুসুল্লি একযোগে এসে মাজারের সীমানা প্রাচীর, পাকাভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে অগ্নিসংযোগ করেছে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ এবং সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। 

স্থানীয়দের কাছে এটি শাহ সূফি ফসিহ পাগলা বাবার মাজার নামে পরিচিত। দুপুর তিনটার দিকে গাজীপুর মহানগরের পোড়াবাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে মাজারটিতে হামলা চালানো হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ভাঙচুর চালানো হয়। এরপর ভেকু দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় কবর ও মাজারের প্রধান ফটক। ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড ও মাদকের ছড়াছড়ির অভিযোগে এনে আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার মাদ্রাসাছাত্র-শিক্ষক, মসজিদের ইমামসহ আলেম ওলামারা মাজারটি ভেঙে দিয়েছেন বলে জানা যায়। এসময় নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

হামলাকারীরা জানান, মাজারের শিরক, বেদাত কার্যক্রম, গাঁজা সেবনসহ নানা অ-ইসলামিক কার্যক্রম হয়। তাই এলাকার মুসুল্লিরা পরামর্শ করেই এ মাজার গুড়িয়ে দিয়েছে। ফসি’র মাজারে বছরের পর বছর অশ্লীল নাচ-গান ও গাঁজার আসর বসতো। মাজারের নামে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদা উঠিয়ে নিজেরা ব্যয় করতো। মাজারের কবরগুলোতে কোনো মৃতদেহ নেই। এই মাজার ভেঙে মসজিদ নির্মাণ করার দাবিও জানানো হয়।

তবে মাজারে পরিচালনায় থাকা ব্যক্তিরা জানান, মাজারে মাদক নিষিদ্ধ ছিল। মাজারের টাকায় অসহায় মানুষদের সহায়তা করা হতো। মাজারে একটি এতিম খানা ছিলো। এতিমখানার শিশুরা এসব দেখে আতঙ্কে আছে। মাজার ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।

মাজারে দীর্ঘদিন ধরে থাকা একজন বলেন, আমার নাম ল্যাংটা কবীর। আমি দীর্ঘদিন ধরে ছিলাম তবে এখন চলে যাচ্ছি। মাজার ভেঙে ফেলা হয়েছে। মাজারে আগুন দেওয়া হয়েছে আমি অনেক কষ্ট পাইছি।

প্রত্যক্ষদর্শী ফসিহ উদ্দিন হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার এক শিক্ষক জানান, জুমার নামাজের পর পর কয়েকশ মুসুল্লি ভাড়া করা একটি বুলডোজার, লাঠি-সোটা, শাবল-রড নিয়ে আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে মাজারে হামলা চালায়। তারা মাজারের পাকা সীমানা প্রাচীর, খাদেমের ঘর, মোমবাতি-আগরবাতি রাখার ঘর ও মাজারের পাকা মূল ভবন গুড়িয়ে দিয়েছে। পরে সেখানে অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট চালিয়েছে। ৮০ দশকের দিকে পোড়াবাড়ি বাজারের অদূরে (দক্ষিণে) ওই মাজার গড়ে উঠে। মাজার চত্বরে একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা ছাড়াও সেখানে ফসিহ উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসা ও মসজিদ রয়েছে। এ মাজার তথা ফসিহ উদ্দিনের ভক্তদের দানের টাকায় চলে ওইসব মসজিদ-মাদ্রাসার খরচ।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহিম খান জানান, মাজার ভাঙার ঘটনাটি শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বিকেল ৪টার দিকে পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। প্রাথমিক ধারণা থেকে বলা যায় হামলাকারী সবাই আশপাশের মসজিদের মুসুল্লি ছিল। এবিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  ফসি পাগলার মাজার   ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ-লুটপাট   গাজীপুর   ঢাকা বিভাগ  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close