ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

হত্যার ঘটনায় ননদসহ গ্রেফতার ২
নিখোঁজের ২ মাস পর মিলল অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসীর পুঁতে রাখা মরদেহ
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬:৩৪ পিএম  (ভিজিট : ১৯০)
ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে নিখোঁজের দুই মাস পর সাভার থেকে মাটিচাপা অবস্থায় অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ননদসহ দুই জন গ্রেফতার হলেও মূল অভিযুক্ত স্বামী আওলাদ হোসেন পালিয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়ায়।  

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) মধ্য রাতে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের মনোদিয়া চৌরাপাড়া গ্রামে নিহতের ননদ অভিযুক্ত পাপিয়া আক্তারের নির্মাণাধীন বাড়ির সামনে মাটিচাপা অবস্থায় নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ।

অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী নিহত রেহেনা বেগমের বয়স ৩৭। ঢাকার নবাবগঞ্জ থানার পাতিল গ্রামের লেহাজ উদ্দিনের মেয়ে তিনি। স্বামী আওলাদ হোসেন ও পাঁচ সন্তান নিয়ে বাস করতেন অস্ট্রেলিয়ায়।

নিহতের মা গত ৩ জুলাই নবাবগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় নিহতের স্বামী আওলাদ হোসেন, ননদ পাপিয়া আক্তার, চাচা শ্বশুর আমজাদ হোসেনকে। এ ছাড়া মাকসুদা নামের আরও একজনকে করা হয় আসামি। তাদের মধ্যে আমজাদ হোসেন ও পাপিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
 
মামলার এজাহারে বলা হয়, ভিকটিম রেহেনা বেগম গত ২৯ জুলাই তার ছেলেকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। পরদিন তিনি তার বাবার বাড়ি নবাবগঞ্জ থেকে শ্বশুর বাড়ি চলে যান। গত ৩ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে রেহেনা ফোন করে তাকে মারধর করা হয়েছে বলে মাকে জানান। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও মোবাইল ফোনে জানায় রেহেনা। এরপর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও রেহেনার সন্ধান পায়নি তার পরিবার।
স্বজনদের আহাজারি। ছবি: সময়ের আলো

স্বজনদের আহাজারি। ছবি: সময়ের আলো


পরে অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাস থেকে ভুক্তভোগীর পরিবারকে জানানো হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রেহেনা অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যায়নি। তবে তার স্বামী আওলাদ হোসেন গত ১৩ জুলাই অস্ট্রেলিয়া চলে আসেন। এ ঘটনার পর সন্দেহ হলে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে নবাবগঞ্জ থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর পরিবার।

নিহতের মা নাফিজা নাইরিন বলেন, মেয়েকে অনেক কষ্টে লেখাপড়া করিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠাই। এরপর সেখানকার নাগরিকত্ব পায় সে। এলাকার আওলাদ এক পর্যায়ে জোরজবরদস্তি করে আমার মেয়েকে বিয়ে করে। অস্ট্রেলিয়ায় থাকার সময়ে আমার মেয়ে তার নামে দেশে অনেক সম্পদ তৈরি করে। সেই সম্পদের জন্য আওলাদ, আওলাদের বোন, ভাইসহ পুরো পরিবার আমার মেয়েকে কৌশলে হত্যার পর লাশ গুম করে। হত্যার দুই মাস পর পুলিশ আমার মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছে। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই।

ঢাকা জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দোহার সার্কেল) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, জুনের শেষের দিকে ভিকটিম রেহানা বেগম দেশে আসেন। তার কয়েকদিন পরে স্বামী আওলাদ হোসেনও অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফেরেন। তারা ২০ বছর ধরে সংসার করছেন অস্ট্রেলিয়াতেই। তাদের ৫ সন্তান রয়েছে। তবে তাদের বেশিরভাগ সম্পত্তি বাংলাদেশে রেহেনা বেগমের নামে। এসব সম্পদ দেখাশোনা করতে মাঝেমধ্যেই দেশে আসতেন রেহেনা। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সম্পদ আত্মসাতের জন্যই পরিকল্পনা অনুযায়ী রেহেনাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর লাশ গুম করতে মাটিচাপা দেয় আসামিরা। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার নিখোঁজ ডায়েরি করলে তদন্ত করে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক আশুলিয়ার মোনোদিয়া থেকে রেহেনার লাশ উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু ভিকটিম অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। তাই অ্যাম্বাসিতে ফিরে যাওয়ার সম্ভাব্য সময় দিয়ে আসতে হয়। কিন্তু রেহেনা ফিরে না যাওয়ায় নিজ দেশের নাগরিকের সন্ধান চেয়ে ঢাকাস্থ অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের শরণাপন্ন হয় ইন্টারপোল। ইন্টারপোলের দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করেই নিখোঁজ রেহানা পারভীনের অর্ধগলিত লাশের সন্ধান পায় পুলিশ।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী নিখোঁজ-মরদেহ উদ্ধার   মামলা-আসামি গ্রেফতার   সাভার   ঢাকা বিভাগ  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close